Advertisement
E-Paper

চেয়ার পেতে বাইরেই চলল রোগী দেখা

কলকাতায় এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে ২৪ ঘণ্টার চিকিৎসা-বন্‌ধ ডাকা হয়েছে। তার সমর্থনে এ দিন তমলুক জেলা হাসপাতালে বহির্বিভাগের সামনের দরজা ছিল তালা বন্ধ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৯ ০০:২৭
বাইরে চেয়ার-টেবিল পেতে চলছে রোগীদের চিকিৎসা। নিজস্ব চিত্র

বাইরে চেয়ার-টেবিল পেতে চলছে রোগীদের চিকিৎসা। নিজস্ব চিত্র

আশঙ্কা করা হয়েছিল ‘আইএমএ’র ডাকা চিকিৎসা-বন্‌ধে অসুবিধার মুখে পড়বেন রোগীরা। সোমবার ওই বন্‌ধে পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক সরকারি হাসপাতালগুলিতে বন্ধ রইল বহির্বিভাগ। তবে তেমন ভোগান্তির মুখে পড়লেন না হাসপাতালে আসা রোগীরা। কারণ, জরুরি বিভাগে ওই সব রোগীদের চিকিৎসা করলেন চিকিৎসকেরা।

কলকাতায় এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে ২৪ ঘণ্টার চিকিৎসা-বন্‌ধ ডাকা হয়েছে। তার সমর্থনে এ দিন তমলুক জেলা হাসপাতালে বহির্বিভাগের সামনের দরজা ছিল তালা বন্ধ। দরজার সামনেই বিক্ষোভে সামিল হন চিকিৎসকেরা। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ছাড়াও বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমের চিকিৎসক ও মালিকেরাও তাতে যোগ দেন।

হাসপাতালের বহির্বিভাগের বাইরে জমা হওয়া রোগীদের বন্‌ধ করার কারণ বোঝান চিকিৎসকেরা। তার ফলে ক্ষুব্ধ হননি রোগী এবং তাঁর পরিজনেরা। পরে রোগীদের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই করা হয়ে চিকিৎসা। জেলা হাসপাতালের সুপার গোপাল দাস বলেন, ‘‘বহির্বিভাগ বন্ধ ছিল ঠিকই তবে জরুরি বিভাগে রোগীদের চিকিৎসা করা হয়েছে। হাসপাতালের অন্য সমস্ত বিভাগই চালু ছিল।’’ আইএমএ’র তাম্রলিপ্ত শাখার সম্পাদক যুগলচন্দ্র মাইতি বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের উপরে হামলার প্রতিবাদে এ দিন বন্‌ধ পালন করেছি। তবে জরুরি পরিষেবা থেকে রোগীরা বঞ্চিত হননি।’’

শিল্প শহর হলদিয়ায় দিনভর মহকুমা হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ থাকলেও জরুরি বিভাগ, ব্লাড ব্যাঙ্কের মতো পরিষেবা সচল ছিল। হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল সূত্রের খবর, এ দিন সকাল থেকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে নোটিস টাঙিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে স্পষ্ট জানিয়ে হয়, বহির্বিভাগ বন্ধ থাকলেও বাকি পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে। তাই বহির্বিভাগে রোগী দেখা হয়নি। টিকিট কাউন্টারও বন্ধ ছিল। তবে, হাসপাতালের ভিতরে জরুরি বিভাগে বহির্বিভাগের কয়েকশো রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা করা হয়।

হলদিয়ার বসানচকের বাসিন্দা শক্তিপদ জানা বলেন, ‘‘৬ জুন বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এখানেই চিকিৎসাধীন। এ দিন সকালে ডাক্তারবাবুরা রুটিন মাফিক দেখে গিয়েছেন। কোনও অসুবিধে নেই।’’ অবশ্য বেশ কয়েকজন রোগী, যাঁদের শারীরিক অবস্থা তেমন খারাপ নয়, তাঁদের অনেকেই পরিষেবা না পেয়েই ফিরে গিয়েছেন বলে অভিযোগ।

হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার সুমনা সাঁতরা বলেন, ‘‘বহির্বিভাগ বন্ধ ছিল ঠিকই। তবে রোগীদের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা হয়নি।’’

কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের ছবিটাও ছিল একই। বহির্বিভাগে এ দিন চিকিৎসকরা রোগী দেখেননি। হাসপাতালে আসা রোগীদের একাংশ বহির্বিভাগের বাইরে গাছ তলায় বহুক্ষণ অপেক্ষা করেন। কাঁথি সাতমাইলের বাসিন্দা চন্দন মিশ্র বলেন, “এত গরমে আউটডোরে এলাম। আজ বন্ধ থাকবে, তা জানতাম না। শ্রমিকদের মত চিকিৎসকরা যদি যখন তখন ধর্মঘট ডাকেন, তাহলে আমাদের মত গরিব বাড়ির লোকেরা কোথায় যাবে?’’

কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের জরুরি পরিষেবা অবশ্য এদিন চালু ছিল। চিকিৎসকরা সেখানে টেবিল ফেলে রোগী দেখেন। কাঁথি শহরের চিকিৎসকদের সমস্ত প্রাইভেট চেম্বারও বন্ধ ছিল এ দিন। ‘আইএমএ’র কাঁথি রুরাল শাখার সম্পাদক অনুতোষ পট্টনায়েক বলেন, “আমরা আপৎকালীন জরুরি পরিষেবা চালু রেখেছি। রোগীদের পাশে আমরা ছিলাম-আছি।’’

অন্যদিকে, পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এ দিন বহির্বিভাগ খোলা ছিল। এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি বহির্বিভাগ বন্ধ থাকলেও জরুরিবিভাগে রোগী দেখা হয়েছে।

Doctors Strike Tamluk East Midnapore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy