Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

পড়শির জয়ে সহায় ‘বাহুবলী’

নিজের আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় এসেছে। জয়ী প্রার্থীরা এ বার ‘সাহায্যে’র হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন পাশের কেন্দ্রে। বিরোধীরা বলছেন, ‘সাহায্য’ই বটে। শাসক দলের ‘বাহুবলী’রা মনোনয়ন প্রত্যাহারে তাঁদের ‘হাতযশ’ দেখাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ০১:০৯
Share: Save:

নিজের আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় এসেছে। জয়ী প্রার্থীরা এ বার ‘সাহায্যে’র হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন পাশের কেন্দ্রে। বিরোধীরা বলছেন, ‘সাহায্য’ই বটে। শাসক দলের ‘বাহুবলী’রা মনোনয়ন প্রত্যাহারে তাঁদের ‘হাতযশ’ দেখাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম, সুতাহাটা, পাঁশকুড়া, ময়না, খেজুরি, শহিদ মাতঙ্গিনী- সহ বেশ কয়েকটি ব্লকে শাসক দলের প্রার্থীরা গ্রামপঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি আসনে ভোটগ্রহণের আগেই জেতা নিশ্চিত করেছেন। সুতাহাটা, হলদিয়া, নন্দীগ্রাম -২ ব্লকের কয়েকটি জেলা পরিষদ আসনেও তৃণমূল প্রার্থীরাও জয় পেয়েছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, জেলার বিভিন্ন এলাকায় শাসক দলের স্থানীয় দাপুটে নেতাদের দৌলতে এমন জয়ের (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়) আশায় বুকও বেঁধেছেন পাশের কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীরাও।

পাঁশকুড়া-১ ব্লকের ১৪ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মাইশোরা, কেশাপাট ও পাঁশকুড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধিকাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বতায় জিতে ক্ষমতা দখল নিশ্চিত করেছে তৃণমূল। এ ছাড়া ব্লকের বেশকিছু আসনে বিনা লড়াইয়ে জিতেছে। মাইশোরা গ্রামপঞ্চায়েতে ২২ টি আসনের মধ্যে মাত্র ২টি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে বামেরা। ওই দুই প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এলাকার পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপ-প্রধান তথা ব্লকের তৃণমূল কার্যকরী সভাপতি কুরবান শাহ’এর বিরুদ্ধে।

কুরবান এ বার মাইশোরার পাশেই পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত এলাকায় পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইতিমধ্যে জয় নিশ্চিত করেছেন। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে ১১ টি আসনের মধ্যে ৮ টি বিনা ল়ড়াইয়ে জিতেছে তৃণমূল।

সিপিএম বিধায়ক ইব্রাহিম আলির অভিযোগ, ‘‘মাইশোরায় ২ জন ও পাঁশকুড়া -১ গ্রাম পঞ্চায়েতে আমাদের ৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। কিন্তু ওই প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য কুরবান ও তাঁর সঙ্গীরা লাগাতার হুমকি দিচ্ছে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে কুরবানের অবশ্য দাবি, ‘‘মাইশোরা ও পাঁশকুড়া -১ গ্রাম পঞ্চায়েতে বিরোধী যে ক’জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাঁরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। বিরোধী শূন্য গ্রাম পঞ্চায়েত হলে উন্নয়নের জন্য ৫ কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলেই তাঁরা আগ্রহী হয়েছেন। হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’

ময়না ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত মালাকার এ বার ময়না-১ পঞ্চায়েত এলাকায় পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন। ১১ টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ৬ টি পঞ্চায়েত সমিতি আসনে এভাবে জয় পেয়েছে তৃণমূল। নিজের জয় নিশ্চিত হওয়ার পরই ব্লকের অন্য এলাকায় বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে সুব্রতবাবুদের বিরুদ্ধে।

বিজেপি’র তমলুক জেলা সাধারণ সম্পাদক নবারুণ নায়েকের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের মোটরবাইক বাহিনী বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। কয়েকজনকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন পত্রে সই করিয়ে নিয়েছে।’’ সুব্রতবাবু অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘ এখানে কোন বিরোধী প্রার্থীকে মনোনয়ন জমায় বাধা দেওয়া হয়নি। বরং ৪ টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ৩ টি পঞ্চায়েত সমিতি আসনের বিরোধী প্রার্থী নিজেরাই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন জমা দিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE