অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার-সহ বিশিষ্টরা।
পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ উদ্যাপন উপলক্ষে শনিবার মেদিনীপুরে পুলিশের পক্ষ থেকে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। শহরের এলআইসি মোড়ে এই অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ প্রমুখ। ছিলেন বিধায়ক মৃগেন মাইতি, পুরপ্রধান প্রণব বসু, উপপুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস প্রমুখও। দর্শকাসনে স্কুল ছাত্রছাত্রী এবং পথচলতি সাধারণ মানুষ। মূলত ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন করতেই শহরে এই অনুষ্ঠান।
সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, “আমি দেখেছি, স্কুল ছুটির পর ৪-৫ জন পড়ুয়া সাইকেলে গোটা রাস্তা জুড়ে একই লাইনে ফিরছে। এ রকম হলে তো যানজট হবেই। রাতে কিছু যুবক দ্রুত গতিতে বাইক চালায়। জোরে হর্ন বাজায়। ওই যুবকেরা যদি কাউকে ধাক্কা দেয়, তার মৃত্যু নিশ্চিত।” প্রণববাবুর কথায়, “আমি পুলিশের সঙ্গে এ নিয়ে মাঝেমধ্যে কথা বলি। এ দিকে আমাদের সকলকে নজর রাখতে হবে। তাহলেই পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ উদ্যাপনের উদ্যোগ সার্থক হবে।”
নিষেধ উড়িয়ে শহরের রাস্তায় বাইক। নিজস্ব চিত্র।
শহরে রাস্তার দু’ধার ক্রমে দখল হয়ে যাচ্ছে মেনে নেন বিধায়ক মৃগেন মাইতি। পাশাপাশি তিনি বলেন, “স্কুল ছুটির পরে অনেকে কথা বলতে বলতে একসঙ্গে যায়। এ সব বন্ধ করতে হবে। এ সব না বন্ধ করলে দুর্ঘটনা ঘটবেই।” বিধায়ক-পুরপ্রধান যখন পুলিশকে আরও কড়া হতে হবে বলে বুঝিয়ে দিচ্ছেন, তখন মঞ্চেই ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। ভারতীদেবীর অবশ্য বক্তব্য, সকলকে সজাগ-সচেতন হতে হবে। তবেই পথ দুর্ঘটনা কমবে। দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে মেনেই জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “তিন দিন আগেই একটা বাস দুর্ঘটনায় ৯ জন মারা গিয়েছে। প্রায় ৬৫ জন আহত হয়েছে। এটা খুব খারাপ।’’
মেদিনীপুরের রাস্তায় বেপরোয়া বাইক চলাচলের অভিযোগ নতুন নয়। দিনেও অনেকে জোরে মোটরবাইক চালায়। মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়ির ঠোকাঠুকি লাগে। তার উপর জবরদখলে রাস্তাগুলো সঙ্কীর্ণ হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ সুপারের স্বীকারোক্তি, “পথ দুর্ঘটনা আমরা কিছুতেই আটকাতে পারছি না। তাই এই ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে সবাইকে সচেতন করতে চাইছি।” এ দিনের অনুষ্ঠানে সচেতনতামূলক নাটক পরিবেশন করেন পুলিশ কর্মীরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্কুল পড়ুয়াদের উদ্দেশে জেলা পুলিশ সুপারের বার্তা বলেন, “রাস্তায় সুস্থ ভাবে চলা জরুরি। মানুষ যখন সুস্থ থাকে সকলে তার প্রশংসা করে। সুস্থ থাকতে গেলে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।”
কিন্তু মেদিনীপুরে ট্রাফিকের পরিকাঠামো কি পর্যাপ্ত? অনুষ্ঠান শেষে জেলা পুলিশ সুপারের জবাব, “ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজা হচ্ছে। ট্রাফিকের আধুনিকীকরণ হচ্ছে।” পুলিশ সুপার যখন এ কথা বলছেন, তখন অদূরে জবরদখলের জেরে এলআইসি মোড়ে মোটরবাইক-সাইকেলের ঠোকাঠুকি লাগে! বরাত জোরে বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy