বাঘ রয়েছে। জঙ্গলে শিকার উৎসবে যাবেন না। বারবার অনুরোধেও কাজ হচ্ছে না। অগত্যা জঙ্গলে প্রবেশ আটকাতে আইনি পথ নিচ্ছে বন দফতর। জঙ্গলমহলে দেওয়া হয়েছে পোস্টার। সেখানে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যে সাইকেল, মোটরসাইকেল কিংবা গাড়ি করে জঙ্গলে শিকার করতে আসবেন, সেই যানবাহন বাজেয়াপ্ত করা হবে। হাতেনাতে ধরা পড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে শিকারির বিরুদ্ধে। জঙ্গলমহলে বন দফতরের এমন পোস্টার এই প্রথম।
জেলার বনকর্তারা এ ব্যাপারে পুলিশের সঙ্গেও কথা বলেছেন। বনকর্তাদের আশা, যানবাহন বাজেয়াপ্ত করা হলে শিকারে আসার প্রবণতা কমবে। মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “অনেকে গাড়ি ভাড়া করে শিকার করতে আসছেন। জঙ্গলের ধারে যানবাহন রেখে জঙ্গলের মধ্যে ঢুকছেন। এ বার ওই সব যানবাহন বাজেয়াপ্ত করা হবে।” তিনি জানান, সবদিক দেখেই ওই পোস্টার দেওয়া হয়েছে। আর কয়েকদিন দেখা হবে। শিকারিরা সচেতন না- হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জঙ্গলমহলে আদিবাসীদের ‘শিকার উত্সব’ চলছে ২৭ মার্চ থেকে ৫ মে পর্যন্ত। বিশেষ বিশেষ দিনে এক একটি জঙ্গলে শিকার করা হয়। মেদিনীপুর গ্রামীণের আদিবাসী যুবক সুনীল মাহাতোর কথায়, “এটা প্রথা। কিছু পাই না-পাই, ওই দিনে আমরা জঙ্গলে যাব। তবে খালি হাতে খুব কম দিনই ফিরে এসেছি। কিছু না হলেও বনশুয়োর মারি।’’ জেলার এক বনকর্তা অবশ্য বলেন, “পশুপাখি মারাটা প্রথা হতে পারে না। এর ফলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রশ্নের মুখে পড়ে। পরিবেশ রক্ষার উদ্যোগও মার খায়।”শিকার ঠেকাতে লালগড়ে গাঁধীগিরির পথেও হেঁটেছিল বন দফতর। দেখা গিয়েছিল, মেদিনীপুরের এডিএফও পূরবী মাহাতো আদিবাসী সমাজের প্রবীণ নেতাদের হাতে- পায়ে ধরে অনুরোধ করে বলছেন, ‘‘এ ভাবে জঙ্গলে ঢুকে শিকার করবেন না।’’ সেই আর্জিতে খানিক সাড়াও মেলে। অবশ্য সর্বত্র শিকার ঠেকানো যায়নি।
বাঘের ভয়ে কাজ হয়নি। গাঁধীগিরিতেও পুরো সাফল্য মেলেনি। অগত্যা আইনি পথ।