তমলুক হাসপাতালে চন্দনকে শ্রদ্ধা নেতা-কর্মীদের। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস ।
সাড়ে তিনবছর আগে দাপুটে তৃণমূল নেতা নান্টু প্রধানের খুনের ঘটনা আজও ভোলেনি মহম্মদপুরে। শনিবার রাতে সেই মহম্মদপুরেই বিজেপি নেতা চন্দন ওরফে শম্ভু মাইতিকে প্রায় একই কায়দায় পিটিয়ে ও কুপিয়ে খুনের ঘটনা নান্টুর খুন হওয়ার ঘটনাকেই যেন ফের মনে পড়িয়ে দিল।
চন্দনকে খনের ঘটনায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। দলীয় নেতাকে খুনের প্রতিবাদে আজ, সোমবার ভগবানপুর থানা এলাকায় সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত বনধ ডেকেছে বিজেপি। খুনের ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাত।
এদিকে খুনের অভিযোগ ওঠায় চন্দনের মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছিল। রবিবার জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ছুটিতে থাকার কারণ দেখিয়ে চন্দনের দেহের ময়নাতদন্ত নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে টালবাহনার অভিযোগ তোলে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। রবিবার সকাল থেকে জেলা হাসপাতাল চত্বরে ছিলেন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক, জেলা সহ–সভাপতি আশিস মণ্ডল সহ অন্যান্য নেতৃত্ব ও চন্দনের পরিবারের লোকজন। বিকেলে জেলা হাসপাতালে আসেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাত। বিকেল ৪টে নাগাদ চন্দনের দেহের ময়নাতদন্ত শুরু হয়। ময়নাতদন্তের পর সন্ধ্যায় জেলা হাসপাতাল থেকে চন্দনের মৃতদেহ নিয়ে বিজেপি নেতা-কর্মীরা মৌন মিছিল করে হাসপাতাল মোড়ে আসেন। এরপর মৃতদেহ নিয়ে বিজেপি নেতারা ভগবানপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
নবারুণ অভিযোগ করেন, ‘‘মৃতদেহের ময়নাতদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছুটিতে রয়েছেন বলে জানিয়ে ময়নাতদন্ত করা নিয়ে সকাল থেকে গড়িমসি শুরু করে জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্য চিকিৎসককে দিয়ে ময়নাতদন্ত করানোর চেষ্টা হচ্ছিল।’’ যদিও তমলুক জেলা হাসপাতালের সুপার ভাস্কর বৈষ্ণব বলেন, ‘‘মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র আসতে দেরি হয়েছিল। তাই অপেক্ষা করা হয়েছিল। নথিপত্র আসার পরেই ময়নাতদন্ত করা হয়। টালবাহনার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
এদিন তমলুক জেলা হাসপাতালে বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাত বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই তৃণমূল হিংস্র হয়ে উঠেছে। ওরা ভেবেছ বিজেপিকে এভাবে শেষ করে দেবে। কিন্তু এভাবে বিজেপিকে শেষ করা যাবে না। তালিবান যে রকম আফগানিস্তান দখল করেছে, সে ভাবে এরাও (তৃণমূল) ভাবছে পশ্চিমবঙ্গকে দখল করে রাখব। কিন্তু পশ্চিমবাংলার জনগণ এটা মেনে নেবে না। আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এর প্রতিবাদ করব। খুনের প্রতিবাদে আগামীকাল বনধ পালন করব।’’ সাংসদ আরও বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ-প্রশাসন পুরোপুরি দলদাস হয়ে কাজ করছে এবং সন্ত্রাসবাদীদের মদত দিচ্ছে। পুলিশের উপর আমাদের আস্থা-ভরসা মোটেও নেই। পশ্চিমবঙ্গে যারাই কাজ করছে, সে আইপিএস হোক আর রাজ্য পুলিশের অধিকর্তা, কারও উপর আমাদের ভরসা নেই। ভগবানপুরে খুনের ঘটনার সিবিআই তদন্ত চাইছি। সিবিআই তদন্ত হলেই প্রকৃত সত্য উদঘাটন হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy