Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

‘মানি ব্যাক’, সতর্ক বিজেপি

কাটমানি প্রসঙ্গ মাথাচাড়া দেওয়ার পর, রাজ্যের অন্য জায়গার মতো বিক্ষোভ হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক জায়গায়। শাসক দলের নেতানেত্রীদের বিরুদ্ধে কখনও পড়েছে পোস্টার।

রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য
চন্দ্রকোনা রোড শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০০:৫০
Share: Save:

কাটমানি সামলাতে ‘ব্ল্যাকমানি’। একুশের মঞ্চ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি আঁচ করে ঘর গোছাতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি সূত্রের খবর, দলের পক্ষ থেকে নেতা-কর্মীদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কাটমানিতে জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

কাটমানি প্রসঙ্গ মাথাচাড়া দেওয়ার পর, রাজ্যের অন্য জায়গার মতো বিক্ষোভ হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক জায়গায়। শাসক দলের নেতানেত্রীদের বিরুদ্ধে কখনও পড়েছে পোস্টার। কখনও ঘেরাও করে বিক্ষোভ হয়েছে। শাসক দলের অভিযোগ, ওই সব বিক্ষোভে বহু ক্ষেত্রে নেপথ্যে ইন্ধন জুগিয়েছে বিজেপি। রবিবার একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে তৃণমূলনেত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এবার আন্দোলনে নামবে শাসক দলও। কাটমানির পাল্টা ‘ব্ল্যাকমানি’ ফেরতের দাবিতে হবে এই আন্দোলন। এই পরিস্থিতিতে সতর্ক হচ্ছে গেরুয়া শিবির। কারণ, লোকসভা ভোটে উল্লেখযোগ্য ফল করার পর থেকে এই জেলায় গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর হিড়িক পড়ে গিয়েছে। দলবদল করিয়ে বহু পঞ্চায়েতের সমীকরণ নিজেদের অনুকূলে এনেছে বিজেপি। দলের একাংশের অভিযোগ, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে প্রশাসনের একটা অংশকে কাজে লাগিয়ে বিজেপির কয়েকজন নেতা কাটমানির দিকে ঝুঁকছেন। এ নিয়ে দলের অন্দরে বাড়ছে ক্ষোভ। পার্টি অফিসে বা দলীয় কর্মসূচি নির্ধারণে একে - অপরের বিরুদ্ধে আঙুল তোলার মতো ঘটনাও ঘটছে।

বিজেপি সূত্রের খবর, রবিবারই সন্ধ্যায় চন্দ্রকোনা রোডের এক পার্টি অফিসে দলের কর্মীদের সামনে কাটমানি নিয়ে দুই নেতার বাদানুবাদে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। তাঁদের চিৎকার চেঁচামেচিতে আশেপাশের লোক জড়ো হয়ে গিয়েছিল সেখানে। যদিও আরেক নেতার হস্তক্ষেপে তখনকার মতো অবস্থা সামাল দেওয়া সম্ভব হয়। তবে ওই ঘটনা নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ বাড়তে আরম্ভ করেছে। জেলা বিজেপির এক পদস্থ নেতা বলেন, ‘‘দল এখন বাড়ছে। মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হিসাবে দলকে যখন তুলে ধরা দরকার, তখন আমরা নিজেরাই কাটমানিতে জড়িয়ে পড়ছি। বাদানুবাদে জড়াচ্ছি। এটা মোটেই ভাল লক্ষ্মণ নয়।’’

কাটমানি নিয়ে শাসকের বিরুদ্ধে আঙুল তুলতে গেলে নিজেদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি থাকা প্রয়োজন— এই বিষয়টি ছোট, মেজ নেতা, কর্মী, সমর্থকদের বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপি জেলা নেতৃত্ব। কাটমানিতে দলের কেউ জড়ালে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাস। তিনি বলেন, ‘‘কাটমানিতে দলের কেউ জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণ হলে দল থেকে বহিষ্কার পর্যন্ত করা হতে পারে। তবে এখনও পর্যন্ত দলের কেউ কাটমানিতে জড়িয়ে পড়ার খবর আমার কাছে নেই। তবে নজর রাখা হচ্ছে।’’ অন্য দল থেকে বিজেপিতে যাঁরা আসছেন তাঁদের অনেকেই কাটমানিতে অভিযুক্ত বলে অভিযোগ উঠছে। এ প্রসঙ্গে শমিত বলেন, ‘‘কেউ যদি কোথাও কাটমানি নিয়ে থাকেন তা ফেরত দিয়েই যেন বিজেপিতে আসেন। আমরা দলগতভাবে একথা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছি।’’ কাটমানি নিয়ে বিজেপির অবস্থানের সমালোচনা করে তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির সদস্য নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘ব্ল্যাকমানি, কাটমানি— মানি ছাড়া বিজেপির চলে না, এই মানিই ওদের পতনের কারণ হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Black Money TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE