Advertisement
E-Paper

দলের দ্বন্দ্বে কাজের প্রচার নেই, ক্ষুব্ধ বিজেপি সাংসদ

সূত্রের খবর, বিজেপির গোষ্ঠী রাজনীতির অঙ্কেই সাংসদ কুনার হেমব্রমের থেকে দূরত্ব বজায় রাখছেন জেলা নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৩ ০৮:৫৮
 বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে টানাপড়েন।

বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে টানাপড়েন।

সাংসদ তহবিলের বরাদ্দ ১১ কোটি ৮১ লক্ষ টাকায় নানা কাজ চলছে। বেশ কিছু প্রকল্প হয়ে গিয়েছে। হাতির উপদ্রবের এলাকায় সাংসদের উদ্যোগে চারশোরও বেশি সৌর পথবাতি বসানোর কাজও চলছে। কিন্তু অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা নেতৃত্ব তাঁদের দলীয় সাংসদের উন্নয়ন-কাজ প্রচারেই আনছেন না। আর তাই নিয়ে গেরুয়ার অন্দরে শুরু হয়েছে টানাপড়েন।

সূত্রের খবর, বিজেপির গোষ্ঠী রাজনীতির অঙ্কেই সাংসদ কুনার হেমব্রমের থেকে দূরত্ব বজায় রাখছেন জেলা নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েওছেন সাংসদ। জেলা নেতৃত্বও পাল্টা রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, দলবিরোধী কাজের অভিযোগে বহিষ্কৃতদের নিয়েই সাংসদ কাজ করছেন। মণ্ডল সভাপতিদের না জানিয়ে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কর্মসূচি করছেন। এই বিরোধে পঞ্চায়েত ভোটের আগে আখেরে দলেরই ক্ষতি, বলছেন একাংশ বিজেপি কর্মীই। এক প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতির কথায়, ‘‘লোকসভা ভোটের সময় সাংসদের হয়ে যাঁরা কাজ করেছিলেন, তাঁরাই আজ দলে ব্রাত্য। কয়েকজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সাংসদের সঙ্গে আলোচনা না করে এমন কিছু পদক্ষেপে তিনিও বীতশ্রদ্ধ হয়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজের কাজ করে চলেছেন।’’ অন্য দিকে, জেলা বিজেপির এক নেতার বক্তব্য, ‘‘সাংসদ দলের ঊর্ধ্বে নন। দলের সিদ্ধান্ত মানতে তিনিও বাধ্য। কিন্তু তিনি বহিষ্কৃতদের সঙ্গে নিয়ে নিজের মতো চলছেন। বিতর্ক এড়াতে চুপ আছি।’’

সমস্যার সূত্রপাত গত বছর জানুয়ারিতে। বিজেপির জেলা সভাপতি তুফান মাহাতোর নয়া জেলা কমিটি মনঃপূত হয়নি দলের একাংশের। যুব মোর্চার প্রাক্তন জেলা সাধারণ সম্পাদক পালহান সরেনের নেতৃত্বে দলের জেলা কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তুফানের গাড়ি আটকে প্রবল বিক্ষোভও হয়। এর পর বিজেপির রাজ্য শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি পালহান-সহ চার নেতাকে বহিষ্কার করে। পালহান ছাড়া বাকিরা ছিলেন জেলা যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক সুমন্ত মহান্তি, মোর্চার বিনপুর বিধানসভা এলাকার নেতা সত্য মল্লিক ও ঝাড়গ্রাম শহরের নেতা বাপ্পা বসাক। এরপরে অবশ্য পালহানরা দলের একাংশকে নিয়ে সভা করেন। এবং সেখানে হাজির ছিলেন সাংসদ কুনার ও জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সুখময় শতপথী। পরে সুখময়কে দলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলায় ইনচার্জ করা হয়েছে। তবে কুনারের কর্মসূচিতে এখনও পালহান, সত্যদের দেখা যায়। কেন্দ্রীয় নেত্রী ভারতী ঘোষ জেলায় সামাজিক কর্মসূচিতে এলে সেখানেও সত্যরা থাকেন। তবে সুখময় ও কুনার ঘনিষ্ঠ দলের একাংশ কর্মী কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়েছে‌ন বলেই খবর।

এই পরিস্থিতিতে বিজেপি সাংসদ তাঁর জনপ্রতিনিধির কাজ করছেন। গত বছর বিনপুরের কাঁকোয় হাতির হানায় এক যুবকের মৃত্যু হয়। কাঁকোর ওই এলাকায় সাংসদ তহবিলের টাকায় বসেছে ৪৮টি সৌরশক্তির পথবাতি। জেলার আরও জঙ্গল রাস্তায় সৌর পথবাতি, ৪২টি স্কুলের পাঁচিল ও অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ, জনজাতিদের অডিটোরিয়াম হল, গ্রামীণ হাটে পানীয় জলের বন্দোবস্ত-সহ নানা প্রকল্প রূপায়ণের জন্য ২১ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দেন সাংসদ। ১১ কোটি ৮১ লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে।

কুনারের দাবি, ‘‘এর আগের সাংসদরা যা করতে পারেননি সেটাই করেছি। সেই কাজের প্রচার করার দায়িত্ব শুধু আমার একার নয়।’’ পালহান, সত্যদের প্রসঙ্গে সাংসদের জবাব, ‘‘কারা বহিষ্কৃত আমার জানা নেই। দলের কর্মীরা কর্মসূচিতে এলে তাঁদের বারণ করি কী করে!’’ তবে জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু বলছেন, ‘‘দলের তরফেও বিভিন্ন বৈঠকে ও সমাজমাধ্যমে সাংসদের উন্নয়ন কাজের প্রচার হচ্ছে। দলে বিতর্কের কোনও জায়গা নেই।’’

Jhargram Kunar Hembram BJP MLA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy