শুরু হয়েছে এসআইআর। এনুমারেশন ফর্ম (গণনাপত্র) নিয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন বিএলও-রা। সঙ্গে থাকছেন বিএলএ-রা। এরপরে পূরণ করা ফর্ম সংগ্রহ শুরু হবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম সংগ্রহের কাজ বিএলও-দেরই। তবে বিএলএ-রাও পূরণ করা ফর্ম সংগ্রহ করতে পারবেন। কমিশন এই সংস্থান রেখেছে বলে জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রে খবর। অবশ্য ফর্ম এনে বিএলও-কেই দিতে হবে। বিএলও অ্যাপে সেটি আপলোড হবে।
বিএলএ-দের ফর্ম সংগ্রহের ঊর্ধ্বসীমাও বাঁধা রয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, বিএলএ-রা দিনে ৫০টি করে ফর্ম সংগ্রহ করে জমা দিতে পারবেন।। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক বিজিন কৃষ্ণ মানছেন, ‘‘বিএলএ দিনে ৫০টি করে ফর্ম সংগ্রহ করে বিএলওকে দিতে পারেন। এই প্রভিশন রয়েছে।’’
এক সময়ে বিএলএ নিয়োগ নিয়ে একাংশ রাজনৈতিক দলের অনীহা ছিল। তা কাটাতে এই বন্দোবস্ত বলে অনুমান একাধিক মহলের। আবার কারও মতে, ফর্ম দেওয়া-নেওয়ার কাজ নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করতে, বিএলও-দের চাপ কমাতে এই আয়োজন। তবে ফর্ম সংগ্রহে ভুল-ত্রুটিহলে, দায় তো তাঁদের উপরই বর্তাবে, এই ভেবে দ্বিধাগ্রস্ত একাংশ বিএলও। মেদিনীপুরের এক বিএলও-র কথায়, ‘‘কী করব, বুঝতে পারছি না। তেমন হলে আমি নিজেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম সংগ্রহ করব। অন্যের ভুলের দায় আমি নেব কেন!’’ কৌশিক লোধ নামে এক বিএলও বলেন, ‘‘আপাতত এনুমারেশন ফর্ম বাড়ি বাড়ি পৌঁছচ্ছি। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেমন বলবেন, সেই মতো পদক্ষেপ করব।’’
স্বচ্ছ ভাবে কাজটা হোক, দাবি রাজনৈতিক দলগুলির। তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান দীনেন রায় বলেন, ‘‘দলীয় বিএলএ-দের বলেছি, বিএলও যখনই কারও বাড়িতে যাবেন, সঙ্গে থাকবেন। স্বচ্ছ ভাবে কাজ হোক, এটাই চাই।’’ বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ রায়েরও বক্তব্য, ‘‘কমিশনের উপরে আমাদের আস্থা রয়েছে। কাজ সুষ্ঠুভাবে হোক, এটাই চাই।’’
নির্বাচন কমিশন বুথস্তরে বিএলও (বুথ লেভেল অফিসার) নিয়োগ করেছে। আর দলগুলি নিয়োগ করেছে বিএলএ (বুথ লেভেল এজেন্ট)। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন-পর্বে বিএলএ-বিএলও সমন্বয় রেখে কাজ এগোনোর কথা। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৪,৩৩৩টি বুথ। মঙ্গলবার থেকে বিএলওরা এনুমারেশন ফর্ম বাড়ি বাড়ি পৌঁছনো শুরু করেছেন। জেলার সব বুথে অবশ্য এখনও বিরোধী দলের বিএলএ নেই। একাংশ বুথে তৃণমূলও বিএলএ দিতে পারেনি। ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফর্ম দেওয়া-নেওয়া চলবে। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ৯ ডিসেম্বর। খসড়া তালিকা নিয়ে অভিযোগ থাকলে ৯ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে হবে। শুনানি হবে। ৯ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত অভিযোগ শোনা এবং খতিয়ে দেখার কাজ চলবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ৭ ফেব্রুয়ারি।
আপাতত, এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে। সঙ্গে কোনও নথি দিতে হবে না। জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘খসড়া তালিকায় যাঁদের নাম থাকবে না, তাঁদের নোটিস পাঠানো হবে। শুনানি হবে। তখন নথি দিতে হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)