Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বাস-লরি সংঘর্ষে আগুন, মৃত ৩

বাস ও লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল তিন জনের। আহত ৩৫ জন। শনিবার ভোর পৌনে পাঁচটা নাগাদ ঝাড়গ্রামের বালিভাসার কাছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক মুম্বই রোডে এই দুর্ঘটনায় মৃতদের মধ্যে লরিটির চালক, খালাসি এবং বাসের এক যাত্রী আছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

দুর্ঘটনার পর জ্বলছে বাস ও লরিটি। —নিজস্ব চিত্র।

দুর্ঘটনার পর জ্বলছে বাস ও লরিটি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৫ ০১:০৪
Share: Save:

বাস ও লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল তিন জনের। আহত ৩৫ জন। শনিবার ভোর পৌনে পাঁচটা নাগাদ ঝাড়গ্রামের বালিভাসার কাছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক মুম্বই রোডে এই দুর্ঘটনায় মৃতদের মধ্যে লরিটির চালক, খালাসি এবং বাসের এক যাত্রী আছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। মৃত বাস যাত্রীর নাম প্রসেনজিত্‌ বিশ্বাস (২৮)। বাড়ি নদিয়ার কল্যাণীতে। তবে বাকি দু’জনের পরিচয় জানা যায়নি। দুর্ঘটনার জেরে প্রায় আড়াই ঘন্টা জাতীয় সড়কের ওই অংশে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।

রাঁচি থেকে কলকাতাগামী নাইট সার্ভিসের ওই দোতলা বাসটিতে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন। চালক-কর্মী মিলিয়ে সওয়ারি ছিলেন মোট ৪৬ জন। বাসটি যখন বালিভাসার কাছে পৌঁছয়, তখন তার আগে ছিল কলকাতাগামী একটি তেলের খালি ট্যাঙ্কার। আচমকাই উল্টো দিক থেকে আসা লোধাশুলিগামী চটের বস্তা বোঝাই লরিটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্যাঙ্কারের মুখোমুখি চলে আসে। সংঘর্ষ এড়াতে ট্র্যাঙ্কারটি রাস্তার ডান দিকে নেমে যায়। ততক্ষণে ট্যাঙ্কারের পিছনে থাকা বাসটি এসে লরিতে ধাক্কা মারে। সংঘর্ষের পরেই আগুন লেগে উল্টে যায় বাসটি। লরিটিতেও আগুন লেগে যায়। আতঙ্কিত যাত্রীরা বাতানুকূল বাসের জানলার কচ ভেঙে ও পিছনের দরজা দিয়ে কোনওমতে বেরিয়ে আসেন। ঝাড়গ্রাম থেকে পৌঁছয় দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ও পুলিশের জলকামান। কলাইকুণ্ডা থেকে বায়ুসেনার দমকলও আসে। দুর্ঘটনায় মৃত প্রসেনজিৎবাবু রাঁচির একটি বেসরকরি সংস্থায় কাজ করতেন। সস্ত্রীক কলকাতায় ফিরছিলেন তিনি। বাসের সামনের দিকে থাকায় পুড়ে মারা যান তিনি। স্ত্রী পূজা বিশ্বাসও জখম হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার প্রসূন ঘোষ জানান, আহত ৩৫ জনের মধ্যে ছ’জনকে প্রাথমিক চিকিত্‌সার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। আশঙ্কাজনক ১২ জনকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এসডিপিও (ঝাড়গ্রাম) বিবেক বর্মা বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে উল্টো দিক থেকে আসা লরিটি দ্রুত গতিতে ট্যাঙ্কারের মুখোমুখি চলে আসাতেই এই বিপত্তি।’’ দুর্ঘটনার পরে যাত্রীদের কয়েকজন পরের বাস ধরে কলকাতা রওনা হয়ে যান।


দুর্ঘটনায় মৃতদের দেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

রাঁচির কমল খালকোর বক্তব্য, “রাঁচি ছাড়ার পরই চালক গতি বাড়িয়েছিলে। ভোরে সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। আচমকা বার্থ থেকে ছিটকে পড়ে যাই। বাসের ভিতরে তখন শুধু ধোঁয়া। কাচ ভেঙে কোনওমতে বেরিয়ে আসি।” আর এক বাসযাত্রী ধানবাদের বাসিন্দা অয়ন চৌধুরী কলকাতা যাচ্ছিলেন ব্যাঙ্কে চাকরির পরীক্ষা দিতে। তিনি বাড়ি ফিরে যান। দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আগুন নেভাচ্ছেন দমকল কর্মীরা। লরি থেকে উদ্ধার হয় দলা পাকা নো দু’টি দগ্ধ দেহ। বাস থেকে আরও একটি দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। পোড়া দেহ তিনটি ময়না তদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়। প্রায় আড়াই ঘন্টা জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE