Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
চন্দ্রকোনায় অভিযুক্ত অধরাই

মাথা থেঁতলে খুন ব্যবসায়ীকে

মাথা থেঁতলানো অবস্থায় এক সোনার ব্যবসায়ীর দেহ মিলল। বৃহস্পতিবার রাতে চন্দ্রকোনা পুর-শহরের রামগঞ্জের ঘটনা।

শোকার্ত নিহতের পরিবার।

শোকার্ত নিহতের পরিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চন্দ্রকোনা শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৫০
Share: Save:

মাথা থেঁতলানো অবস্থায় এক সোনার ব্যবসায়ীর দেহ মিলল। বৃহস্পতিবার রাতে চন্দ্রকোনা পুর-শহরের রামগঞ্জের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, সোমনাথ কবিরাজ (৪২) নামে ওই ব্যবসায়ীকে খুনের পর দেহটি রাস্তার ধারে একটি ছোট গর্তে ঢুকিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। পুলিশের অনুমান, ঘটনাটি রাত সাড়ে আটটা থেকে ন’টার মধ্যে ঘটেছে। জনবহুল এলাকায় এভাবে খুনের কথা জানাজানি হতেই উদ্বেগে শহরবাসী।

মাস কয়েক আগেই গড়বেতা শহরে দোকানের ভিতরেই এক সোনা ব্যবসায়ীকে খুন করে চম্পট দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। বেশ কিছুদিন পর পড়শি রাজ্য থেকে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। যদিও এখনও পর্যন্ত সোমনাথবাবুর খুনিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃতের ঘনিষ্ঠ চারজনকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের জয়ন্তীপুরে সোমনাথবাবুর ছোট সোনার দোকান রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে দোকান বন্ধ করে কমরগঞ্জে গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। দোকান থেকে দেড় কিলোমিটার দুরে এবং বাড়ির অদূরে রামগঞ্জে রামকৃষ্ণ আশ্রম লাগোয়া একটি ফাঁকা জায়গায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাস্থলের পাশাপাশি ওই আশ্রম ছাড়া আর কোনও জনবসতি নেই। তবে বেশি রাত না হওয়ায় আশ্রমের মহারাজ-সহ অনান্যরা গল্প করছিলেন। চিৎকার শুনতে পান আশ্রমের লোকজন। তাঁরাই স্থানীয় ক্লাবে বিষয়টি জানান।

সোমনাথ কবিরাজ। —নিজস্ব চিত্র।

এলাকায় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী বলে পরিচিত সোমনাথবাবু পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির চেয়ারম্যান প্রতিনিধিও। চন্দ্রকোনা পুরসভার চেয়ারম্যান অরূপ ধাড়া বলেন, “খুব শান্ত এবং ভদ্র ছেলে ছিল। মাঝে মধ্যে অফিসে আসত।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, সোমনাথবাবু প্রতিদিন দোকান বন্ধ করার সময় ব্যাগে করে সোনা ও রুপোর গয়না, টাকা-পয়সা নিয়েই বাড়ি ফিরতেন। খুনের পর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ব্যাগটি উদ্ধার করেছে। মৃতের দেহ এবং ঘটনস্থল দেখে পুলিশের অনুমান, ঘটনার সঙ্গে একাধিক দুষ্কৃতী জড়িত। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক কোনও বিষয়কে কেন্দ্র করেই সোমনাথবাবু খুন হয়েছেন।

কমরগঞ্জে মৃতের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল বাড়ি ঘিরে স্থানীয় মানুষের জটলা। সোমনাথবাবুরা দুই ভাই। পাশাপাশি দু’টি বাড়ি। একটি মাটির ও একটি পাকার। পাকা বাড়িতেই স্ত্রী ঝুম্পা এবং ছেলে সুমনকে নিয়ে আলাদাই থাকতেন ওই ব্যবসায়ী। বাড়িতে ছোট মুদি দোকানও রয়েছে। সেটি ঝুম্পা দেবীই চালাতেন। মৃতের ভাই পেশায় শিক্ষক রঞ্জন মাটির মাড়িতে মা লতা কবিরাজ ও তাঁর পরিবারকে নিয়ে থাকেন। সূত্রের খবর, সম্পত্তি নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে সোমনাথ বাবুর সম্পর্ক মোটেই ভাল ছিল না। প্রায়শই অশান্তি হত।

ছেলের মৃত্যু সংবাদ শুনেই ঘন ঘন মূর্চ্ছা যাচ্ছেন মা লতাদেবী। বলেন, “আমার ছেলে কেন খুন হল। ও তো কারও সাতেপাঁচে থাকত না।” শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন স্ত্রী ঝুম্পা দেবীও। বছর বারো ছেলে সুমনকে জড়িয়ে ঝুম্পা দেবী বলেন, “সকাল সকাল বাড়ি ফিরবেও বলে গিয়েছিল। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হল না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mourning Relatives Somnath Kabiraj Businessman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE