Advertisement
০১ মে ২০২৪
BJP Leader Murder

বিজেপি নেতা খুনে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ

ময়নার বাকচা পঞ্চায়েত এলাকার গোড়ামহল গ্রামে বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণকে ২০২৩ সালের ১ মে বাড়ির কাছ থেকেই অপহরণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা, ময়না শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৫৩
Share: Save:

পূর্ব মেদিনীপুরের বিজেপি নেতা বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়ার খুনে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিল হাই কোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এনআইএ এই তদন্তের দায়িত্ব নেবে। হাই কোর্টের নির্দেশ কার্যকর হয়েছে কি না, তা জানিয়ে আগামী ২৪ এপ্রিল রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

এ দিন নির্দেশ দেওয়ার আগে এই মামলা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মনোভাবেরও কড়া সমালোচনা করেছেন বিচারপতি। তাঁর পর্যবেক্ষণ, এই মামলায় এনআইএ-কে যুক্ত করা হয়েছিল। তারা তদন্ত করতে সক্ষম কি না, সে ব্যাপারে মতামত চাইলেও মন্ত্রকের তরফে কোনও বক্তব্য আসেনি।বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল-সহ কেন্দ্রীয় সরকারের কৌঁসুলিরা বারবার চিঠি লিখলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকউদ্যোগী হয়নি।’’

ময়নার বাকচা পঞ্চায়েত এলাকার গোড়ামহল গ্রামে বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণকে ২০২৩ সালের ১ মে বাড়ির কাছ থেকেই অপহরণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। মারধরের পরে গুলি করে তাঁকে খুন করা হয় বলে দাবি। তারপর দেহ জলাশয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। বিজয়ের স্ত্রী লক্ষ্মীরানি ভুঁইয়া তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মনোরঞ্জন হাজরা, তৎকালীন পঞ্চায়েত প্রধান সুখলাল মণ্ডল-সহ মোট ৩৪ জনের বিরুদ্ধে ময়না থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অভিযুক্তদের মধ্যে ৭জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। হাই কোর্টের নির্দেশে বিজয়ের পরিবারকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তাও দেওয়া হয়।

পরে পুলিশের তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তদন্তের আর্জি জানিয়েছিল নিহতের পরিবার। সেই মামলায় মৃত্যু রহস্যের পুলিশি তদন্তে একাধিক অসঙ্গতি উঠে এসেছিল। তার পরেই গত ফেব্রুয়ারি মাসে এনআইএ এই তদন্ত করতে পারবে কি না, তা জানতে চেয়েছিল হাই কোর্ট। কিন্তু তার পরেও কেন্দ্রের তরফে গড়িমসি দেখা গিয়েছিল বলে অভিযোগ। এ দিন মামলাটি শুনানির জন্য় উঠলে মতামত জানানোর জন্য ফের আর্জি জানান কেন্দ্রীয় সরকারের কৌঁসুলি। তাতেই ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি।

এ দিন সকালে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘‘কেন্দ্র কবে নিজের অবস্থান জানাবে তার জন্য কি প্রতিদিন মামলাটি শুনানির তালিকায় রাখা হবে? অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলকে ডাকার পরেও তিনি এজলাসে আসছেন না! ওঁর কি মনে হচ্ছে, এই মামলার গুরুত্ব নেই?’’ এর পরেই বিচারপতি জানিয়ে দেন, এ দিন বেলা দু’টোর পরে মামলার ফের শুনানি হবে। তখনই কেন্দ্রকে নিজেদের মতামত জানাতে হবে। বেলা ২টোর পরে ফের শুনানি শুরু হলে কেন্দ্র জানায় যে তারা মামলানিতে প্রস্তুত।

বিজয়কৃষ্ণের ছেলে প্রসেনজিৎ ভুঁইয়া মানছেন, ‘‘আমরা কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা দিয়ে ঘটনার তদন্ত চেয়েছিলাম। হাই কোর্ট এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। আশা করছি আমরা সুবিচার পাব।’’ প্রসেনজিৎ আরও বলেন, ‘‘আদালত তো প্রথমেরাজ্য পুলিশের উপরেই ভরসা করেছিল। কিন্তু পুলিশ যথাযথ ভূমিকা পালন করেনি। খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িতদের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দিয়েছে। তারা জামিন পেয়ে আমাদের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা চাই দোষীদের কঠোর শাস্তি হোক।’’ তৃণমূলের তমলুক জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। তবে বিচার ব্যবস্থায় অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো লোকও রয়েছেন। কেন্দ্রের সরকার সব বিভাগকে কাজে লাগিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করতে চাইছে। মানুষই যোগ্য জবাব দেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

East Midnapore Calcutta High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE