E-Paper

তুলে নেওয়া মামলা ফের শুরু, খুশি মৃতের পরিজন

২০০৭ এবং ২০০৯ সালের মধ্যে খেজুরি আর নন্দীগ্রাম থানায় বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করে সিপিএম নেতাদের পরিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৩৮
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি। Sourced by the ABP

রাজ্য সরকারের তরফে প্রত্যাহার করা জমি আন্দোলন পর্বের ১০টি মামলার বিচার ফের শুরুর নির্দেশ দিল হাই কোর্ট। ১৫ দিনের মধ্যে সরকারি আইনজীবীদের পদক্ষেপ করতে হবে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই বিচার শুরু হলে নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলন পর্বের বহু তৃণমূল এবং বিজেপি নেতা বিপাকে পড়বেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের। তবে বিচারপতি দেবাংশু বসাক, মহম্মদ সাব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের ওই নির্দেশে খুশি জমি আন্দোলন পর্বের মৃতদের পরিবারেরা।

২০০৭ এবং ২০০৯ সালের মধ্যে খেজুরি আর নন্দীগ্রাম থানায় বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করে সিপিএম নেতাদের পরিবার। ২০২০ সালে রাজ্য সরকারের দাবি মেনে ১০টি মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয় হলদিয়া মহকুমা আদালত। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ছ’টি মামলার রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা করেন আইনজীবী নীলাঞ্জন অধিকারী। হাই কোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন পুরনো ছ’টি মামলা চালুর নির্দেশ দেয়। সম্প্রতি হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নন্দীগ্রাম থানার ছ’টি মামলা এবং খেজুরি থানা চারটি মামলা ফের চালু করার নির্দেশ দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার এ নিয়ে মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, যে দরিদ্র, ভূমিহারারা সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের অধীনে তাঁদের জীবিকা রক্ষার জন্য তৎকালীন ভূমি নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, তাঁদের কিছুটা ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করতে হয়েছিল। তার জেরেই এই ঘটনা। তবে ৪৪ পাতার নির্দেশে হাই কোর্ট বলেছে, ‘১০টি ফৌজদারি মামলায় যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। খুন তো হয়েছেই। কেস ডায়েরি, ময়নাতদন্তে তা স্পষ্ট। ফলে সমাজে এখনও এমন ব্যক্তিরা রয়েছেন, যাঁরা খুনের জন্য দোষী’। হাই কোর্ট জানিয়েছে, ‘সিআরপিসির ৩২১ ধারার অধীনে মামলা প্রত্যাহারের অনুমতি দেওয়া জনস্বার্থে ঠিক
হবে না’।

উল্লেখ্য, নন্দীগ্রামের রানিচকের অন্নপূর্ণা মণ্ডল খুনের মামলায় তৃণমূল নেতা সোয়ুম কাজি-সহ ৫৪ জন অভিযুক্ত। গোকুলনগরে দুলাল গারু খুনে খেজুরি প্রাক্তন তৃণমূল গ্রাম প্রধান সমর শঙ্কর মণ্ডল-সহ ৩৭ জন অভিযুক্ত। চঞ্চল মিদ্যা খুনে তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান, আবু তাহেরের পাশাপাশি, বিজেপি নেতা অশোক করণ, স্বদেশ দাস অধিকারী অভিযুক্ত। ভাঙাবেড়ায় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ও গুলিতে চারজনের খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত রয়েছে তৃণমূল নেতা সুফিয়ান এবং বিজেপি নেতা শরৎ ভুঁইয়া। ওই সব মামলার ফের বিচার শুরুর নির্দেশে খুশি নিহতদের পরিজন। মৃত দুলাল গারুর স্ত্রী দুর্গা গারু এবং হরিপদ দাস বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা অত্যাচারিত। তার পরেও মামলা তুলে নিয়েছিল রাজ্য সরকার। হাই কোর্ট যা নির্দেশ দিয়েছে, তাতে সাধুবাদ জানাই। আশা করি আমরা বিচার পাব।’’

আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে হাই কোর্টের রায়ে তৃণমূল এবং বিজেপি দুই দলের নেতারা অস্বস্তিতে। নন্দীগ্রামে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নেতা তথা তৃণমূলের জেলা (তমলুক) সহ-সভাপতি শেখ সুফিয়ান বলেন, ‘‘আমরা নির্দোষ। রাজ্য সরকার পদ্ধতি মেনে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করেছিল। এখন আমাদের আইনি লড়াই চলবে।’’ আবার বিজেপির জেলা (তমলুক) সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘আমাদের দলের কয়েকজনের নাম রয়েছে ঠিকই। ওই সব পুরনো মামলায় তদন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে। চার্জশিট জমা পড়েছে। বিচার শুরু হলেও কোন অসুবিধা হবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Nandigram

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy