Advertisement
E-Paper

প্রার্থীর নাম ঘোষণার আগেই শুরু প্রচার

নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়নি। প্রকাশিত হয়নি প্রার্থী তালিকাও। তবে পুর যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তেও রাজি নন কোনও পক্ষ। শুধু দেওয়াল লিখন নয়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনাও শুরু করেছেন কেউ কেউ। খড়্গপুর পুরসভায় বর্তমানে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। রবিবার প্রস্তুতি বৈঠকে বর্ষীয়ান নেতা তথা বিধায়ক জ্ঞানসিংহ সোহন পাল (চাচা)-এর নেতৃত্বে ভোটের ময়দানে লড়ার কথা ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। গত লোকসভা নির্বাচনে খড়্গপুর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রথম স্থানে ছিল বিজেপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৫ ০১:৫১
বাদ নেই কোনও দলই। খড়্গপুরে শুরু হয়ে গিয়েছে দেওয়াল লিখন। —নিজস্ব চিত্র।

বাদ নেই কোনও দলই। খড়্গপুরে শুরু হয়ে গিয়েছে দেওয়াল লিখন। —নিজস্ব চিত্র।

নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়নি। প্রকাশিত হয়নি প্রার্থী তালিকাও। তবে পুর যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তেও রাজি নন কোনও পক্ষ। শুধু দেওয়াল লিখন নয়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনাও শুরু করেছেন কেউ কেউ।

খড়্গপুর পুরসভায় বর্তমানে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। রবিবার প্রস্তুতি বৈঠকে বর্ষীয়ান নেতা তথা বিধায়ক জ্ঞানসিংহ সোহন পাল (চাচা)-এর নেতৃত্বে ভোটের ময়দানে লড়ার কথা ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। গত লোকসভা নির্বাচনে খড়্গপুর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রথম স্থানে ছিল বিজেপি। তাই পুরভোটেও গেরুয়া ঝড় বজায় থাকা নিয়ে আশাবাদী বিজেপি নেতৃত্ব। পিছিয়ে নেই শাসকদলও। রেলশহরে পুরসভাকে পাখির চোখ করে প্রস্তুত হচ্ছে তারাও। কয়েকদিন আগেই প্রাক্তন পুরপ্রধান জওহরলাল পাল ও শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীকে একসাথে বৈঠকে ডেকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুরভোটে লড়ার বার্তা দিয়েছিল তৃণমূল। তবে এখনও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেনি কোনও দলই। তার আগেই প্রচার শুরু হওয়ায় জল্পনা রাজনৈতিক মহলে।

কয়েকদিন আগে আসন্ন পুরভোটে কংগ্রেসকে সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছে খড়্গপুর বিকাশ মোর্চা। প্রার্থী তালিকা প্রকাশ না হলেও শহরের তিনটি ওয়ার্ডে চলছে তাদের প্রচার। চলছে দেওয়াল লিখনও। এই ঘটনায় বিভ্রান্ত শহরবাসীরাও। শহরের এক বাসিন্দার কথায়, “পুরভোট কবে হবে কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। কিন্তু দেওয়ালে-দেওয়ালে যে ভাবে প্রচারের ঝড় উঠছে, তাতে মনে হচ্ছে যেন দিন দশেক পরেই পুরভোট।”

কয়েকদিন আগেই শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি নেতা অজয় চট্টোপাধ্যায়ের নামে দেওয়াল লেখা ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। পরে অবশ্য জেলা নেতৃত্বের নির্দেশে মুছে দেওয়া হয় ওই দেওয়াল লিখনগুলি। শহরের অন্যত্রও বিজেপি প্রার্থীর নাম করে প্রচারের অভিযোগ উঠছে। প্রার্থী তালিকা প্রকাশ নিয়ে বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তুষার চৌধুরীর দাবি, শহরে জয়ের বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত। আগে ৩৫টি ওয়ার্ডের সবকটিতে তাঁরা প্রার্থী দিতে পারতাম না। কিন্তু এ বছর ১২৫টিরও বেশি আবেদন জমা পড়েছে। প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আগেই প্রচার শুরু নিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা, “প্রার্থী হওয়ার জন্য আবেদনকারীরা অনেকেই দলের নীতি-আদর্শ জানেন না। তাই তাঁরা সকলেই টিকিট পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী হয়ে অতি উৎসাহে নিজেদের প্রচার চালাচ্ছেন। অবশ্য আমরা জানতে পারলে এ বিষয়ে সতর্কও করছি।” তিনি জানান, দিন চারেকের মধ্যেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। তারপর দলের উদ্যোগেই প্রচার চলবে।

প্রচার শুরুর দৌড়ে পিছিয়ে নেই কংগ্রেসও। শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর রীতা শর্মার সমর্থনে ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় হয়েছে দেওয়াল লিখন। চলছে বাড়ি বাড়ি প্রচারও। একইভাবে, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন দেওয়াল ভরেছে কংগ্রেস কাউন্সিলর কল্যাণী ঘোষের নামে। পাড়া বৈঠক, বাড়ি বাড়ি প্রচারও চলছে জোরকদমে। যদিও কল্যাণীদেবীর দাবি, দলে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে সব ওয়ার্ড সংরক্ষণের তালিকায় নেই, সেখানে বর্তমান কাউন্সিলররাই প্রার্থী হবেন। সেই হিসেবে কাজ এগিয়ে রাখতেই প্রচারে নেমেছেন তিনি। দলের অনুমতিতেই দেওয়ালও লেখা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় সুভাষপল্লি কালীমন্দিরে ওয়ার্ডের দলীয় কর্মীদের নিয়ে প্রচারের রূপরেখা তৈরি-সহ নানা বিষয়ে বৈঠক করেছেন বলেও জানান তিনি। যদিও কংগ্রেসের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “দলের প্রতিটি কর্মীকেই দলের হয়ে দেওয়াল সংরক্ষিত করে চুনকাম করা, ভোটার তালিকা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। তবে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে প্রার্থীর নামে প্রচার দলের শৃঙ্খলা বিরোধী। তা সত্ত্বেও যাঁরা দেওয়াল লিখেছেন তাঁদের কড়াভাবে নিষেধ করা হয়েছে।”

এখনও প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেনি শাসকদলও। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে জেলা নেতৃত্বের নির্দেশ সত্ত্বেও এখনও জমা পড়েনি তৃণমূলের পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা। এই পরিস্থিতিতে খড়্গপুরের ১, ১৮, ১৯, ২০, ২৪, ২৬, ৩৩, নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মীরা সম্ভাব্য প্রার্থীর সমর্থনে এলাকায় মৌখিক প্রচারে নেমেছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। যদিও শহর তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর দাবি, প্রচার শুরুর বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তাঁর আরও দাবি, দলে কড়া নির্দেশ রয়েছে, তালিকা ঘোষণা না হলে কোনও প্রার্থী নিজেদের সমর্থনে প্রচার করতে পারবে না। তাই অন্য দলের প্রার্থীর সমর্থনে দেওয়াল লিখন দেখা গেলেও তাঁদের দলের ক্ষেত্রে তা হয়নি। তবে এটা ঠিক, দলের কর্মীরা দেওয়াল দখল করতে চুনকাম বা প্রতীক আঁকছেন।

পিছিয়ে নেই বামেরাও। শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআই কাউন্সিলর লিপিকা বাগদী এ বছর লড়াই করবেন না বলে ঠিক করেছেন। এক্ষেত্রে ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী হিসেবে লিপিকাদেবীর ভাইঝি কলেজ পড়ুয়া শর্মিষ্ঠা সিংহকে টিকিট দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। কিন্তু এখনও প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষিত হয়নি। তা সত্ত্বেও বাড়ি বাড়ি প্রচার শুরু করেছেন শর্মিষ্ঠা। সিপিআইয়ের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আহ্বায়ক রাজা মল্লিকের কথায়, “বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে এখনও প্রার্থী ঘোষণা হয়নি ঠিকই। কিন্তু এই ওয়ার্ডে দলীয় কাউন্সিলর লিপিকা বাগদীর ভাইঝি শর্মিষ্ঠা সিংহ প্রার্থী হচ্ছেন, এটা নিশ্চিত। তাই তাঁর সঙ্গে এলাকাবাসীর পরিচয় করাতে প্রচার চালাচ্ছি।”

যদিও সিপিআইয়ের জেলা সহ-সম্পাদক বিপ্লব ভট্ট বলেন, “আগামী ২২ মার্চ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে প্রার্থীরা নিজেদের সমর্থনে প্রচারে নামবেন। এখনই প্রচার করতে সকলকে নিষেধ করা হয়েছে।”

candidate list municipal election kharagpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy