E-Paper

ডাক্তারদের প্রতিবাদ, তথ্য চাইল সিআইডি

ঘটনার তদন্তভার শুক্রবারই নিয়েছে সিআইডি। হাসপাতালে গিয়ে অধ্যক্ষ এবং নতুন সুপারের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:২০

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদ থেকে জাতীয় মহিলা কমিশনের পরিদর্শন। শনিবারও সরগরম রইল মেদিনীপুর মেডিক্যাল। এই হাসপাতালে ৮ জানুয়ারি অস্ত্রোপচারের দু’দিন পরে প্রসূতি মামনি রুইদাসের মৃত্যুতে সিআইডি-তদন্তও চলছে।

ঘটনায় ১২ জন চিকিৎসককে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করার কথা জানানো হয়েছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুন-সহ একাধিক ধারায় মামলাও হয়েছে। এঁদের মধ্যে ছ’জন ছিলেন জুনিয়র ডাক্তার। তবে এ দিন ৭ জন জুনিয়র ডাক্তারের (পিজিটি) নামে সাসপেনশনের চিঠি এসেছে। সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে সকাল থেকে আংশিক কর্মবিরতি করেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। দুপুরে অধ্যক্ষ, সুপারকে ঘেরাও করা হয়। তবে কর্মবিরতির প্রভাব তেমন পড়েনি। এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, “আমরা চাই না পরিষেবা ব্যাহত হোক।”

সাসপেনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে সন্ধ্যায় ডিএইচএস, ডিএমই, গ্রিভান্স সেল ও ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলে চিঠি পাঠিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সুবিচার চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে সিআইডি, জেলা পুলিশেও। এ দিন মেডিক্যালে আসেন রাজ্য স্বাস্থ্যের গ্রিভান্স সেলের চেয়ারম্যান সৌরভ দত্ত। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে সৌরভ বলেন, “সরকারের কাছে জোড়হাত করে বলছি, জুনিয়র ডাক্তারদের সাসপেনশন অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।”

ঘটনার তদন্তভার শুক্রবারই নিয়েছে সিআইডি। হাসপাতালে গিয়ে অধ্যক্ষ এবং নতুন সুপারের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, অস্ত্রোপচারের রাতে দুই জুনিয়র চিকিৎসক, চার নার্সের সঙ্গে অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) আর কে কর্তব্যরত ছিলেন, জানতে চেয়েছে সিআইডি। আগামী সপ্তাহের গোড়ায় সে তালিকা তারা পেতে পারে। সিসিটিভি ফুটেজ এবং ঘটনার দিন কোন ব্যাচের স্যালাইন ব্যবহার হয়েছে, তারও বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে সিআইডি।

প্রসূতি-মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে শনিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে যান জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার। অধ্যক্ষ, সুপার, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের পাশাপাশি ৮ জানুয়ারি ওটিতে উপস্থিত ডাক্তার, নার্সদের সঙ্গেও কথা বলেন অর্চনা। সূত্রের খবর, তিনি কিছু নথিপত্রের প্রতিলিপি চেয়েছিলেন। তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেননি। পরে অর্চনা বলেন, “হতে পারে স্যালাইনে গন্ডগোল ছিল। যথাস্থানে রিপোর্ট দেব। তবে এক জন থার্ড ইয়ার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি কেন সিজ়ার করলেন, এটা বলে সাসপেন্ড করা যায় না। আর এক প্রসূতির ক্ষেত্রে ভুল হতে পারে। পর পর পাঁচটা অস্ত্রোপচারে হতে পারে না।”

ওই রাতে মামনি ছাড়াও চার প্রসূতির অস্ত্রোপচার হয়। ডাক্তারদের একাংশের দাবি, গোড়ায় প্রসূতিদের বিতর্কিত ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ স্যালাইন দেওয়ায় সমস্যা হয়। তাই পরে যাঁদের অস্ত্রোপচার হয়েছে, তাঁদের বাড়ির লোককে ওই স্যালাইন বাইরে থেকে কিনতে বলা হয়েছিল। পরে আর সমস্যাও হয়নি। এক জুনিয়র ডাক্তারের দাবি, “সিজ়ারে যে ত্রুটি ছিল না, তা মৃতের ময়না তদন্ত রিপোর্টে স্পষ্ট। রিপোর্টে এ-ও স্পষ্ট, কোনও সংক্রমণ থেকে ‘শকে’ গিয়ে, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।”

তবে তদন্তকারীরা জানান, ঘটনার দিন আরএমও এবং সিনিয়র চিকিৎসকেরা দায়িত্ব পালন করেননি বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে বাকিদের ভূমিকা কী ছিল, তা যাচাই করা হবে। প্রতক্ষ্যদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Saline Controversy Midnapore Medical College and Hospital CID Investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy