Advertisement
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সেলুনের খরচ বাঁচিয়ে সাহায্য

এই ডাকে সাড়া দিলেন মেদিনীপুরের অনেকেই। মাসের শেষে উঠে এল প্রায় ৩০ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার নভেম্বরের শেষ দিনে সেই টাকা তুলে দেওয়া হল শহরের দুই ক্যানসার আক্রান্তের পরিবারের হাতে।

ক্যান্সার আক্রান্তদের হাতে দেওয়া হচ্ছে সাহায্য। নিজস্ব চিত্র

ক্যান্সার আক্রান্তদের হাতে দেওয়া হচ্ছে সাহায্য। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:১৫
Share: Save:

স্লোগান ছিল ‘নো শেভ নভেম্বর’। অর্থাৎ গোটা নভেম্বর মাস জুড়ে চুল-দাড়ি কাটতে সেলুনে না গিয়ে পয়সাটা বাঁচান। আর সেই টাকা দিয়ে সাহায্য করুন ক্যান্সার আক্রান্তকে।

এই ডাকে সাড়া দিলেন মেদিনীপুরের অনেকেই। মাসের শেষে উঠে এল প্রায় ৩০ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার নভেম্বরের শেষ দিনে সেই টাকা তুলে দেওয়া হল শহরের দুই ক্যানসার আক্রান্তের পরিবারের হাতে। অজয় মাহাতোর ভাইপো বছর পাঁচেকের অরিজিৎ মাহাতো ক্যানসারে ভুগছে। সাহায্য পেয়ে অজয়বাবু বলছিলেন, “শহরের একদল মানুষ এ ভাবে পাশে দাঁড়ানোয় মনে জোর পাচ্ছি।’’ আর এক ক্যানসার আক্রান্ত বছর একান্নর নমিতা প্রামাণিকেরও বক্তব্য, “এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আমি কৃতজ্ঞ।’’ এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধানও। তাঁর কথায়, “ক্যানসার আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে এ ভাবেই এগিয়ে আসা উচিত। একক চেষ্টায় অনেক কিছুই করা সম্ভব হয় না। সম্মিলিত চেষ্টায় তা সম্ভব হয়।’’

বৃহস্পতিবার শহরের পঞ্চুরচকে ক্যান্সার সচেতনতা শিবিরে রবীন্দ্রনাথবাবুও ছিলেন। সেখানেই ওই দুই ক্যানসার আক্রান্তের পরিবারকে অর্থ সাহায্য করা হয়। এই প্রয়াসের মুখ্য উদ্যোক্তা স্কুল শিক্ষা দফতরের এসআই (সদর গ্রামীণ চক্র) অমরেশ কর। তিনি পাশে পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী জয়ন্ত পাত্র, নয়াগ্রাম প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিপ্লব আর্য-সহ বেশ কয়েকজনকে।

চাকরি সূত্রে পুরুলিয়ায় ছিলেন অমরেশবাবু। তিনি বলছিলেন, “গত বছর পুরুলিয়ায় এমন কর্মসূচি করে এক ক্যান্সার আক্রান্তকে সাহায্য করেছিলাম। তিনি ভাল আছেন।’’ কিন্তু অর্থ সংগ্রহের জন্য চুল-দাড়ি না কাটার ডাক কেন? অমরেশবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘এটা প্রতীকী প্রয়াস। চুল-দাড়ি কাটার খরচ বাঁচিয়েও যে সাহায্য করা যায়, এই কর্মসূচি থেকে সেই বার্তাই দিয়ে চেয়েছি।’’ তা ছাড়া, ক্যানসার আক্রান্তদের চুল-দাড়ি ঝরে যায়। সেই বিষয়টিও মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন অমরেশবাবুরা।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিপ্লব আর্য বলছিলেন, “আমরা জানি যে বিপুল পরিমাণ টাকা ওদের চিকিৎসার জন্য দরকার, তুলনায় যা সাহায্য উঠেছে তা খুবই কম। যতটুকু পাশে থাকা যায়, সেই চেষ্টাই করেছি।’’ অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী জয়ন্ত পাত্রের কথায়, “এই উদ্যোগে সামিল হতে পেরে ভাল লাগছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE