দিঘায় নুলিয়ারা। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিঘায় আসার পর থেকেই সৈকতাবাস-এর সামনে সমুদ্রে একটি স্পিডবোটে দিনরাত টহল দিচ্ছিলেন নুলিয়ারা। মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন গত চার মাস এই নুলিয়ারা বেতন পাননি। এতে ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। যে নুলিয়ারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পর্যটকদের জীবন বাঁচান তাঁরা কেন বেতন পাননি, অবিলম্বে বিষয়টি দেখার জন্য বৃবস্পতিবার প্রশাসনিক বৈঠকে নিদের্শ দিলেন তিনি।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সিভিল ডিফেন্স দফতর থেকে নুলিয়াদের বেতন হয়। জেলা প্রশাসন থেকে তার জন্য রিকুইজিশন পাঠানো হয়। এদিনের বৈঠকে সিভিল ডিফেন্স দফতরের মুখ্যসচিব দুষ্মন্ত নারিওয়ালা ও পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমলের কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, কেন নুলিয়াদের বেতন বাকি রাখা হয়েছে? এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘নুলিয়ারা অত্যন্ত দুঃস্থ পরিবার থেকে এসেছেন। তাঁদের বেতন বাকি রাখলে সংসার চলবে কী ভাবে?’’
মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন থেকে বেতনের জন্য রিকুইজিশন পাঠানো হয়নি।’’ তা শুনে বিরক্ত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, নুলিয়ারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ করেন। প্রতি মাসেই তাই রিকুইজিশন দিলে বেতন হবে, এমন কেন? এরপর থেকে রিকুইজিশন ছাড়াই নুলিয়াদের বেতন দেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি নুলিয়াদের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেন। নুলিয়াদের পরিবারকে সমুদ্র সৈকতে এনে কাজ দেওয়ার জন্য দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শিশির অধিকারীকে দায়িত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, দিঘার সৈকতকে পরিচ্ছন্ন রাখা নিয়ে সৈকতে যাতে কেউ পানের পিক না ফেলে , নোংরা না করে, প্লাস্টিক-থার্মোকল না ফেলে তা দেখাশোনার জন্য নুলিয়াদের পরিবারের লোকদেরকে দায়িত্ব দিতে হবে। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের আওতায় দিঘা, শংকরপুর, মন্দারমণি ও তাজপুর উপকূলে কাজ করার জন্য ৫৫ জন নুলিয়া রয়েছেন। এণঁদের মধ্যে ৫ জন মহিলা। এঁদের প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে বেতন দেওয়া হয় এবং মাসে ২৫ এঁরা কাজ করনে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানান জেলাশাসক।
মুখ্যমন্ত্রী ঘোযণায় খুশি নুলিয়ারাও। দিঘার নুলিয়াদের অন্যতম রতন দাস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের অবদানের কথা ভেবে যে ভাবে সরব হয়েছেন সে জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy