Advertisement
E-Paper

বিধায়ক পুত্র পাশে! ভর্তি ফর্ম না ভরে

অভিযোগ, কোনওরকম ফর্ম ফিলাপ না করেই অনেক পড়ুয়াই ভর্তি হচ্ছেন দাসপুরের নাড়াজোল রাজ কলেজে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৮ ০২:২৮
রাজ কলেজের টিচার ইন-চার্জের পাশেই বসে বিধায়ক মমতা ভুঁইয়ার ছেলে কুমারেশ (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র

রাজ কলেজের টিচার ইন-চার্জের পাশেই বসে বিধায়ক মমতা ভুঁইয়ার ছেলে কুমারেশ (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র

এ দুনিয়ায় সবই হয়। সব সম্ভব। অনলাইন তো দূর অস্ত্। অভিযোগ, কোনওরকম ফর্ম ফিলাপ না করেই অনেক পড়ুয়াই ভর্তি হচ্ছেন দাসপুরের নাড়াজোল রাজ কলেজে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে শর্তাবলি প্রযোজ্য। মাথায় হাত থাকতে হবে বিধায়ক পুত্রের। বৃহস্পতিবার কলেজের আনাচে কানাচে ঢুঁ মেরে শোনা গেল এমনই নানা অভিযোগ।

দুপুর সাড়ে ৩ টে। হাসি মুখে কলেজ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন এক পড়ুয়া। খোঁজ নিয়ে জানা গেল এ দিনই স্নাতক স্তরে ভর্তি হয়েছেন তিনি। কী ভাবে ভর্তি হলেন? কোনও রাখঢাক না রেখে ওই পড়ুয়া বললেন, ‘‘আমি ফর্ম ফিলাপ করিনি। এক বন্ধুর মুখে শুনলাম, এখানকার বিধায়কের ছেলের কাছে পৌঁছতে পারলেই ভর্তি হওয়া যাবে। ফর্ম ফিলাপ না করলেও ভর্তি হতে কোনও সমস্যা হয়নি।” পাশে দাঁড়িয়েছিলেন আরেক পড়ুয়া। তাঁর কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম ভূগোল নিয়ে আর পড়া হবে না। ফর্ম ফিলাপও করিনি। বিধায়কের ছেলের সৌজন্যে সঙ্গে সঙ্গেই ফর্ম ফিলাপ এবং ভর্তি।’’

দাসপুরের বিধায়ক মমতা ভুঁইয়ার ছেলে কুমারেশ। কলেজেই খোঁজ মিলল তাঁর। দোতলায় টিচার ইনচার্জ রণজিৎ খালুয়ার ঘরে। কলেজে নানা ধরনের কাজ চলছে। সেই সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই এক ঠিকাদারের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত ছিলেন কুমারেশ। অভিযোগ, কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি হলেও সময় দিতে পারেন না বিধায়ক। মায়ের হয়ে সব কাজই সামলান ছেলে। ভর্তি প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে আপনার বিরুদ্ধে? একগাল হেসে বিধায়ক পুত্র বললেন, “এত আসন খালি থাকলে কলেজ চলবে কী করে? তাই তো এই নিয়মে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে।”

নিয়মটা কী? ফর্ম ফিলাপ না করেই ভর্তি? টিচার-ইনচার্জ রনজিৎ খালুয়ার কথায়, “ফর্ম ফিলাপ সবাই করেছেন। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেধা তালিকায় অনেকের নাম তোলা যায়নি। আসনও খালি আছে। তাই ভর্তি নেওয়া হচ্ছে।”

কলেজ ভর্তিতে অনিয়ম ঠেকাতে সতর্ক রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলছেন ছাত্র ভর্তি নিয়ে কোনও অনিয়ম তিনি বরদাস্ত করবেন না। কলেজে বহিরাগতের আনাগোনা ঠেকাতে রাজ্যের একাধিক জায়গায় সক্রিয় হয়েছে পুলিশও। তাহলে কি নাড়াজোলের কলেজে ব্যতিক্রম? টিচার-ইনচার্জের জবাব, ‘‘আসলে বিধায়ক ম্যাডাম কলেজ পরিচালন কমিটির সভাপতি। তিনি তো ব্যস্ত। ওঁর কাজটা কুমারেশই সামলায়।” আর চোখ কপালে তুলে কুমারেশ বললেন, “মাঝে মধ্যে আসি। এখন তো ভর্তি চলছে।”

কুমারেশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ কলেজের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের একাংশ। কলেজের এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘এককথায় নিলাম চলছে। দর ঠিকঠাক হয়ে গেলে মেধা তালিকায় নাম থাকলেও চলবে।’’ কলেজের গেটের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক অভিভাবক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বললেন, ‘‘মেয়ের ভর্তির জন্য এসেছিলাম। বিধায়কের ছেলের সঙ্গে কথা বলতে। সব কাজ মিটেছে। শুক্রবার এসে মেয়েকে ভর্তি করাব।’’

বিধায়কপুত্র মাঝেমধ্যে কলেজে আসেন। এখন যে ভর্তি চলছে।

Education College Admission Admission Syndicate TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy