Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূল কার্যালয়ে ভাঙচুর, মারের নালিশ

 উপ-নির্বাচনের দিনই রক্ত ঝরেছিল সবংয়ে। ভোট মিটে যাওয়ার পরও ছেদ পড়ল না অশান্তিতে। শুক্রবার সবংয়ের বলপাইয়ে তৃণমূলের অঞ্চল কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে।

ভাঙচুরের পরে বলপাইয়ের তৃণমূলের কার্যালয়। নিজস্ব চিত্র

ভাঙচুরের পরে বলপাইয়ের তৃণমূলের কার্যালয়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০০
Share: Save:

উপ-নির্বাচনের দিনই রক্ত ঝরেছিল সবংয়ে। ভোট মিটে যাওয়ার পরও ছেদ পড়ল না অশান্তিতে। শুক্রবার সবংয়ের বলপাইয়ে তৃণমূলের অঞ্চল কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে। কোন্দলের জেরে তৃণমূলের বুথ সভাপতি-সহ দু’জনকে মারধরেরও অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় ফের প্রকাশ্যে তৃণমূলের নতুন-পুরনো দ্বন্দ্ব।

সবংয়ের প্রাক্তন বিধায়ক মানস ভুঁইয়া-সহ একঝাঁক কংগ্রেস নেতা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই সবংয়ে নতুন–পুরনো দ্বন্দ্বের শুরু। বলপাইয়ের যে কার্যালয়ে শুক্রবার ভাঙচুর হয়, সেই কার্যালয়টি পরিচালনা করেন তৃণমূল নেতা অমূল্য মাইতির ঘনিষ্ঠ হিসেবে এলাকায় পরিচিত স্থানীয় নেতা নিবারণ সামন্ত। আর ঘটনায় অভিযোগের তির মানসবাবুর সঙ্গেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ গৌর বেরার অনুগামী হিসেবে পরিচিত দলীয় কর্মীদের দিকে।

শুক্রবার বলপাইয়ের কার্যালয়ে বসেছিলেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি আশিস সামন্ত-সহ দু’জন। সেই সময় দলের একাংশ কর্মী কার্যালয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। বুথ সভাপতি আশিসবাবুর অভিযোগ, দলের প্রার্থীর জন্যই তাঁরা নির্বাচনে খেটেছেন। সকালে তা নিয়েই অঞ্চল কার্যালয়ে আলোচনা চলছিল। কিন্তু মানস ভুঁইয়ার অনুগামী গৌর বেরার নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন কার্যালয়ে চড়াও হয়ে তাঁদের মারধর করে। কার্যালয়ে ভাঙচুরও করা হয়। হামলাকারীদের ধারণা তাঁরা গীতা ভুঁইয়ার পক্ষে ভোট দেননি। যদিও গৌরবাবু দাবি করছেন, দলের লোক হয়েও নিবারণ সামন্ত, আশিস সামন্তরা সিপিএমের সঙ্গে মিলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, গীতা ভুঁইয়াকে খাটো করতে চাইছেন। ওঁরা গীতা ভুঁইয়ার বিপক্ষে ভোট করেছেন। তাই দলের কর্মীরা প্রতিবাদ করেছেন। দলের কার্যালয় ভাঙচুর হয়নি।

শুধু শাসকদলের অভ্যন্তরের কোন্দলই নয়, ভোট মিটে যাওয়ার পরে হুমকির রাজনীতি চলছে বলেও অভিযোগ বিরোধীদের। সিপিএম প্রার্থী রিতা মণ্ডল জানার অভিযোগ, ভোটদান পর্ব শেষ হতেই তৃণমূল বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের কর্মীদের শাসাচ্ছে। ফল প্রকাশের পরে দেখে নেবে বলে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা জয়ী হলেও মারবে। পরাজিত হলেও মারবে। আমরা প্রতিবাদ করছি। কারণ আমাদের হারানোর কিছু নেই। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। এ বার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই।” একই অভিযোগ বিজেপি প্রার্থী অন্তরা ভট্টাচার্যের গলাতেও। তাঁর দাবি, বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের কর্মীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে যে ভোটের ফল প্রকাশের পরে মারধর করবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের তো দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। তাই ভয় পাচ্ছি না। এখনও অশান্তি চলছে। তবে ফল প্রকাশের পরে অশান্তি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছি।”

যদিও কোথাও কোনও গোলমাল নেই বলে দাবি করছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। তাঁর দাবি, কোথাও গোলমাল নেই। যেখানে বিক্ষিপ্তভাবে ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে তা আমরা সমাধান করছি। বলপাইয়ের গোলমাল নিয়ে অজিতবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘বলপাইতে অন্তর্ঘাতের আশঙ্কায় স্থানীয় মানুষের সঙ্গে আমাদের কয়েকজনের ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। আমি বলেছি এ সব বরদাস্ত করা হবে না। এখন আমরা জয়ের ব্যবধান ১ লক্ষ না ৮০ হাজার তা নিয়ে ভাবছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Vandalism TMC Party Office
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE