কাজের বিনিময়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল ভূমি দফতরের এক রেভিনিউ ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে পিংলা থানায় এমনই অভিযোগ দায়ের করেছেন ব্লকের ধনেশ্বরপুরের পাইকান গ্রামের বাসিন্দা শেখ মুন্না।
শেখ মুন্নার অভিযোগ, ধনেশ্বরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দায়িত্বে থাকা রেভিনিউ ইনস্পেক্টর অশোক মেইকাপ জমি সংক্রান্ত কাজ করার জন্য টাকা দাবি করেছিলেন। এমনকী বেশ কয়েকদিন ধরে ওই টাকা নিয়ে দর কষাকষির পরে শেখ মুন্না ওই দিন টাকা দেন। সেই ঘটনা ভিডিও রেকর্ডিংও করে রাখেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাইকান গ্রামেই মুন্নার বাবা শেখ কাসিমুদ্দিনের ৯ ডেসিমেল চাষের জমি রয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে সেই জমি বাস্তুজমিতে রূপান্তর করতে জমির শ্রেণি বদলের আবেদন করেন শেখ মুন্না। তাঁর অভিযোগ, গত সপ্তাহে এই জমির শ্রেণি বদলের জন্য মুন্নার থেকে প্রতি ডেসিমেল জমি বাবদ এক হাজার টাকা চেয়েছিলেন রেভিনিউ ইনস্পেক্টর অশোকবাবু। গত কয়েকদিন ধরে সেই টাকা নিয়ে চলছিল দর কষাকষি। প্রথমে এক হাজার টাকা দিতে রাজি হয়েছিলেন মুন্না। কিন্তু ওই আধিকারিক এক হাজার টাকা নিতে অস্বীকার করেন। শেষমেশ ঠিক হয় দু’হাজার টাকায় রেভিনিউ ইনস্পেক্টর ওই কাজ করবেন। সেই মতো দু’হাজার টাকা দিতে গিয়েছিলেন ওই যুবক। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি ও তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শেখ সবরাতিকে ডাকেন মুন্না। রাতে থানায় গিয়ে ওই রেভিনিউ ইনস্পেক্টরের নামে অভিযোগ দায়ের করেন শেখ মুন্না। তাঁর অভিযোগ, “জমির শ্রেণি বদলের কাজ করে দেওয়ার জন্য রেভিনিউ ইনস্পেক্টর অশোক মেইকাপ এত টাকা চাওয়ায় বিপদে পড়েছিলাম। তাই গোটা ঘটনা ভিডিও করে রেখে সকলকে ডাকি।”
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, আদতে সবংয়ের বাসিন্দা বছর পঁয়ষট্টির অশোক মেইকাপ অবসরগ্রহণের পরে সরকারি নিয়মে অতিরিক্ত মেয়াদে পিংলার রেভিনিউ ইনস্পেক্টর পদে কাজ করছেন। যদিও অশোকবাবুর এক সহকর্মীর দাবি, “এত বছর অশোকবাবু কাজ করেছেন কখনও তো কোনও অভিযোগ শুনিনি। কিন্তু এখন এমন কাজ উনি কেন করতে যাবেন সেটাই আমাদের ভাবাচ্ছে।” এ দিন অশোকবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাঁর মোবাইল বন্ধ ছিল। ব্লকের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক অশোক গায়েনের দাবি, “অভিযোগের বিষয়টি আমাকে থানা থেকে জানায়নি। শুক্রবার ঘটনাটি আমি মৌখিকভাবে শুনেছিলাম। আমি অশোক মেইকাপকে ফোন করে জানতে চেয়েছিলাম। উনি বলেছেন ওকে ফাঁসানো হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আগে তো ওঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ কখনও শুনিনি। মাস দু’য়েক আগেই পিংলা ব্লকে রেভিনিউ ইনস্পেক্টর পদে নিযুক্ত হয়েছেন। কেন এমন অভিযোগ উঠল বুঝতে পারছি না।” এ দিন অশোক মেইকাপের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ ছিল।
যদিও এই ঘটনায় অভিযুক্তের শাস্তির দাবি করে তৃণমূলের পিংলা ব্লক সভাপতি শেখ সবরাতি বলেন, “টাকা নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে গিয়েছেন ওই রেভিনিউ ইনস্পেক্টর। ভিডিও রেকর্ডিং করেছেন শেখ মুন্না। অভিযোগের সময় আমিও ছিলাম। এমন কাজ বন্ধ হওয়া উচিত।” খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “ওই রেভিনিউ ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে প্রমাণ-সহ টাকা নেওয়ার অভিযোগ এসেছে। আমরা মামলা রুজু করে তদন্ত করছি। তদন্তে দোষ প্রমাণিত হবে গ্রেফতার করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy