Advertisement
E-Paper

অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণা ২৫ কোটি, অভিযোগ

জনধন যোজনায় অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণার অভিযোগ উঠল কাঁথির মুগবেড়িয়ায়। বৃহস্পতিবার কাঁথি মহকুমাশাসক ও মহকুমা খাদ্য দফতরে বিক্ষোভ দেখান মুগবেড়িয়া দুর্নীতি বিরোধী কৃষক সংগ্রাম কমিটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৭ ১৩:০০
বিক্ষোভ: কৃষক সংগ্রাম কমিটির সদস্যরা। নিজস্ব চিত্র

বিক্ষোভ: কৃষক সংগ্রাম কমিটির সদস্যরা। নিজস্ব চিত্র

জনধন যোজনায় অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণার অভিযোগ উঠল কাঁথির মুগবেড়িয়ায়। বৃহস্পতিবার কাঁথি মহকুমাশাসক ও মহকুমা খাদ্য দফতরে বিক্ষোভ দেখান মুগবেড়িয়া দুর্নীতি বিরোধী কৃষক সংগ্রাম কমিটি। পরে তাঁরা স্মারকলিপিও জমা দেন। তাঁদের দাবি, এলাকার প্রায় ৭০০ জনের নামে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মুগবেড়িয়া শাখায় ‘জিরো ব্যালান্স’-এ অ্যাকাউন্ট খুলে দুর্নীতি হয়েছে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার টাকায়। এ বিষয়ে ভূপতিনগর থানায় এক চালকল মালিক ও স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেছেন বাসিন্দারা।

কৃষক সংগ্রাম কমিটির নেতা জীবন দাসের দাবি, “এই প্রতারণায় জড়িত মুগবেড়িয়া কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতি এবং ওই ব্যাঙ্কের শাখার আধিকারিকেরাও। সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার টাকা শ্রীমা রাইস মিলে পাঠানো হয়েছে অনৈতিক ভাবে।’’ দিন কয়েক আগেই বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী ভূপতিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন, শ্রীমা রাইস মিলের মালিক মনোতোষ দাস ও বিশ্বেন্দু মণ্ডলের নামে।

ঠিক কী হয়েছিল?

সরোজ আদক, মনোরঞ্জন জানাদের দাবি, গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বেন্দু-সহ গ্রামের কয়েকজন যুবক তাঁদের বোঝায়, জনধন যোজনায় অ্যাকাউন্ট খুললে নানা রকম সরকারি সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে। সেই অনুযায়ী প্রায় ৭০০ মানুষের কাছ থেকে ফর্মে সই করিয়ে নেয় ওই যুবকেরা। নির্দিষ্ট সময়ে খুলে দেওয়া হয় অ্যাকাউন্টও। কিন্তু কাউকেই পাশবই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। পরে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁরা ওই যুবকদের চেপে ধরেন। কয়েকজন গ্রামবাসীর পাশবই তখন বের করে বিশ্বেন্দুরা। সেই বই আপডেট করেই দেখা যায় লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছে প্রতিটি অ্যাকাউন্টে। এই ভাবে প্রায় ২৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে কমিটির দাবি।

দেখা গিয়েছে, যাঁরা সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করেননি, তাঁদের অ্যাকাউন্টেও একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে ধানের দাম ঢুকেছে দফায় দফায়। তারপর আবার সেই টাকা চলে গিয়েছে শ্রীমা রাইস মিলের অ্যাকাউন্টে। সবটাই হয়েছে, গ্রাহকের অজ্ঞাতে। কিন্তু কেনই বা টাকা ঢুকল, আর কী করেই বা গ্রাহকের অনুমতি ছাড়া সেই টাকা চলে গেল চালকলের অ্যাকাউন্টে— তার উত্তর মেলেনি।

ঘটনায় নাম জড়িয়েছে, মুগবেড়িয়া গঙ্গাধর সমবায় সমিতির। জীবনবাবুর অভিযোগ, ওই সমবায় সমিতির মাধ্যমেই সহায়ক মূল্যে চাল কেনে সরকার। ফলে তাদের যোগসাজশ ছাড়া এই দুর্নীতি সম্ভব নয়। নিয়ম মতো, চাষি যখন সমবায় সমিতিতে গিয়ে ধান বিক্রি করেন, তখন তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর নেয় সমবায় সমিতি। তাদের পাঠানো তালিকা অনুযায়ী টাকা পান চাষিরা। আবার সেই ধান চালকলে পাঠিয়ে দেয় ওই সমবায় সমিতিই। চালকলও একই ভাবে টাকা পায় সরকারের কাছ থেকে।

ওই সমবায় সমিতির ম্যানেজার শোভন মাইতি বলেন, ‘‘ওয়েস্ট বেঙ্গল এসেনশিয়াল কমোডিটিস সাপ্লাই কর্পোরেশন লিমিটেড-এর নির্দেশ মেনে ধান কেনার পর চাষিরা টাকা পান। নিয়ম মেনেই চালকলে ধান পাঠিয়েছি।’’ ব্যাঙ্কের ম্যানেজার বিশ্বনাথ দাস অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তদন্ত চলছে, যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই বলবেন।’’ পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্বেন্দু মণ্ডল এবং মনোতোষ দাসকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ইন্দ্রজিৎ বসু জানান, তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

Jan Dhan Yojana Fraud case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy