Advertisement
E-Paper

লরি, ট্যাঙ্কার উঠলেই শুরু সেতুর কাঁপুনি

টুকটাক মেরামতির কাজও হয় মাঝেনাঝে। কিন্তু সেতুর দু’পাশে দখলদারদের দৌরাত্ম্যে সেতুর হাল যে ভাল নয় তা নজর করলেও মালুম হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:০১
 মেচেদায় রেলসেতুর নীচে শালখুঁটির খাঁচা।

মেচেদায় রেলসেতুর নীচে শালখুঁটির খাঁচা।

সেতুর গা থেকে নীচে মাঝেমধ্যেই খসে পড়ে পলেস্তারা। টুকটাক মেরামতির কাজও হয় মাঝেনাঝে। কিন্তু সেতুর দু’পাশে দখলদারদের দৌরাত্ম্যে সেতুর হাল যে ভাল নয় তা নজর করলেও মালুম হয়। সেতুর উপরেই বাস, ট্রাক, ট্রেকার থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা চলে। সেতুর দু’পাশের রেলিং কিছু জায়গায় ভাঙা। সেখানে ঘিরে দেওয়ার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। ৫০ বছরেরও বেশি পুরনো চণ্ডীয়া নদীর উপরে সেতুর এমন বেহাল দশা নিয়ে বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত। কলকাতায় মাঝেরহাট সেতু ভাঙার ঘটনায় সেই আতঙ্ক ও উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার মধ্যে সংযোগকারী এই পাকা সেতুর বেহাল স্বাস্থ্য নিয়ে বার বার সরব হয়েছেন বাসিন্দারা। তমলুক শহর থেকে ময়নার বলাইপন্ডা হয়ে মেদিনীপুরগামী রাজ্য সড়কে চণ্ডীয়া নদীর এই সেতু তৈরি হয় ১৯৬০ সাল নাগাদ। ময়নার তৎকালীন বিধায়ক অনঙ্গ মোহন দাসের উদ্যোগে পূর্ত দফতর ওই সেতু নির্মাণ করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সেতু দিয়ে ময়না–মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, খড়্গপুর-সহ হুগলি, বাঁকুড়া, বর্ধমান প্রভৃতি রুটে বাস চলাচল করে। আবার পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা, সবং, ডেবরা প্রভৃতি এলাকার মানুষ তমলুক শহর সহ পূর্ব মেদিনীপুরে বাসে ও ট্রেকারে যাতায়াত করেন। প্রতিদিন প্রচুর মালবাহী লরি-সহ বিভিন্ন কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু বয়সের ভারে গুরুত্বপূর্ণ সেতু এখন জরাজীর্ণ। সেতুর নীচের ও পাশের দেওয়াল থেকে কংক্রিটের চাঙড় মাঝেমধ্যেই খসে পড়ে। ভেঙে পড়েছে রেলিংয়ের একাংশ। সেতুর উপরে রাস্তাও বেহাল। এদিক ওদিক গর্ত। সেতুর মাঝে দু’পাশে জায়গা দখল করে তৈরি হয়েছে একাধিক দোকান। যা সেতুর পক্ষে বিপজ্জনক। এ ছাড়া বলাইপন্ডা বাজারে বাসস্ট্যান্ড না থাকায় সমস্ত বাস ও ট্রেকার সেতুর উপরেই যাত্রী তোলা-নামা করে।
স্থানীয় বাসিন্দা সন্দীপ সামন্তের অভিযোগ, ‘‘মাঝেমধ্যে তাপ্পি দেওয়া ছাড়া পূর্ণাঙ্গ ভাবে সেতুর মেরামতির কোনও ব্যবস্থা আজ পর্যন্ত করেনি পূর্ত দফতর। ফলে যে কোনও দিন বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’ জেলা পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘ময়না থেকে মেদিনীপুরগামী সড়কের মুন্ডমারি পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার সম্প্রসারণ প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। সড়ক সম্প্রসারণের সঙ্গে ওই সেতু মেরামতির কাজও হবে।
শুধু চণ্ডীয়া নয়, মেচেদা বাজারের কাছে হাওড়া-খড়গপুর শাখায় রেললাইনের উপর হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে পুরনো ওভারব্রিজের শোচনীয় হাল নিয়েও সরব স্থানীয় বাসিন্দারা। বছর চল্লিশের পুরনো ওই ওভারব্রিজ প্রতিদিন হলদিয়া শিল্পাঞ্চলগামী কয়েক হাজার মালবাহী লরি, ট্যাঙ্কার, বাস-সহ প্রচুর গাড়ি চলাচল করে। ওভারব্রিজ আর সড়কের সংযোগস্থলে একাধিক জায়গায় বড় ফাঁক তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। ফুটপাথের স্ল্যাবগুলি ভেঙে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। দীরর্ঘদিন ধরেই ব্রিজের তলায় কাঠের খুঁটি দিয়ে ঠেক দেওয়া রয়েছে। ব্রিজের তলায় প্রতিদিন আনাজ বাজার বলে। আনাজ ব্যবসায়ী গণেশ ঘড়া, শম্ভু দাস বলেন, ‘‘বছর তিনেক আগে একবার ওভারব্রিজের মেরামতি হয়েছিল। কিন্তু এখন ব্রিজের উপর দিয়ে লরি, ট্যাঙ্কার গেলে ব্রিজ কাঁপতে থাকে। খুব ভয় করে।’’
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক আধিকারিক সুব্রত নাগ অবশ্য বলেন, ‘‘মেচেদার কাছে ওই ওভারব্রিজ মেরামতি হয়েছিল। তারপর নিয়মিত পরিদর্শন চলে। ব্রিজের অবস্থা এত তাড়াতাড়ি খারাপ হওয়ার কথা নয়। তবু খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’

Bridge Tamluk Accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy