Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
TMC

বাঁধ নির্মাণে ‘গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব’, বিরোধী শিবিরের গড়ে শুভেন্দুর ব্যানার

তৃণমূলের ‘গড়’ পূর্ব মেদিনীপুরে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে অখিল গিরির গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব নিয়ে কানাঘুষো কম নয়।

সমুদ্রবাঁধ নির্মাণের জন্য মন্ত্রী সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাঁর ছবি-সহ ব্যানার হাতে স্থানীয় বাসিন্দারা। রবিবার শঙ্করপুরে। নিজস্ব চিত্র

সমুদ্রবাঁধ নির্মাণের জন্য মন্ত্রী সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাঁর ছবি-সহ ব্যানার হাতে স্থানীয় বাসিন্দারা। রবিবার শঙ্করপুরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শঙ্করপুর শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৩০
Share: Save:

বারবার নিম্নচাপ আর কটালের প্রভাবে ভেঙে গিয়েছিল সমুদ্রবাঁধ। সপ্তাহ খানেক আগে সেই বাঁধ মেরামতে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। তারপরেই রাজ্যের সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে ‘কৃতজ্ঞতা’ জানিয়ে শঙ্করপুর মৎস্যবন্দর এবং সংলগ্ন এলাকায় একাধিক পোস্টার পড়ে। যদিও ওই এলাকা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরির বিধানসভা এলাকায়। এলাকায় শুভেন্দু বিরোধী বলে পরিচিত বিধায়কের এলাকায় এমন পোস্টার পড়ায় দুই শিবিরের দ্বন্দ্ব আরও প্রকাশ্য়ে এল বলে মনে করছে শাসক দলের একাংশ। সমুদ্র বাঁধ নির্মাণ নিয়ে এমন ব্যানার ঘিরে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও বাড়বে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

তৃণমূলের ‘গড়’ পূর্ব মেদিনীপুরে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে অখিল গিরির গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব নিয়ে কানাঘুষো কম নয়। শঙ্করপুর মৎস্য বন্দর সংলগ্ন এই এলাকার বিধায়ক অখিল গিরি। সম্প্রতি দলের সাংগঠনিক রদবদলে অখিলপুত্র রাজ্য যুব তৃণমূলের সহ সভাপতি করা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যবেক্ষক পদ থেকে শুভেন্দুকে সরানো নিয়ে জেলায় তাঁর ক্ষমতা খর্ব করা হচ্ছে বলে দলের একাংশ অভিযোগ তুলেছে। এই আবহে এই আবহে এমন পোস্টার কার্যত সেই দ্বন্দ্বকে আরও উস্কে দিল।

উল্লেখ্য, অগস্ট মাসের শুরুতে রাখি পূর্ণিমার কটাল এবং নিম্নচাপের ধাক্কায় বঙ্গোপসাগরে প্রবল জলোচ্ছাস হয়। তার প্রভাবে দিঘা থেকে শঙ্করপুর পর্যন্ত বহু মৎস্যখটি প্লাবিত হয়। সপ্তাহ খানেক আগে ভেঙে যাওয়া এলাকায় কালো পাথর ফেলে বাঁধ তৈরির কাজ শুরু করে সেচ দফতর। তারপরই গোটা এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি এবং একাধিক গাছে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে ‘কৃতজ্ঞতা’ জানিয়ে ব্যানার পড়লেও এলাকার বিধায়ক সত্ত্বেও অখিল গিরিরে ধন্যবাদ দিয়ে কোনও পোস্টার দেখা যায়নি।

কেন এমন হল?

স্থানীয় বাসিন্দা ধীরেন্দ্র ভুঁইয়ার দাবি, ‘‘দশ বছর ধরে বিধায়ক পদে রয়েছেন অখিলবাবু। অথচ এলাকার সমুদ্রবাঁধ ভাঙা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেননি।’’ আর এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘সমুদ্র বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পরে একবারও বিধায়কের দেখা মেলেনি। মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী পাশে না দাঁড়ালে এলাকায় আরও ক্ষতি হত।’’ যদিও এর পিছনে প্রাক্তন বিধায়ক ও সিপিএম নেতা স্বদেশ নায়ককে দায়ী করেছেন বিধায়ক ও জেলা তৃণমূলের অন্যতম কো-অডির্নেটর অখিল গিরি। তাঁর দাবি, ‘‘বাঁধ নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখেছিলাম। তার ভিত্তিতে তদন্ত করেই কাজ শুরু হয়েছে। প্রাক্তন বিধায়ক স্বদেশ নায়ক এলাকার কিছু লোককে উস্কানি দিয়ে এ সব করাচ্ছে।’’

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে স্বদেশের দাবি, ‘‘বাঁধ ভাঙলে প্রশাসনের কেউ একদিনও এলাকায় আসেনি। বাঁধ নির্মাণের জন্য সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে আবেদন করেছিলাম। তিনি আবেদনে সাড়া দিয়েছেন।’’

তবে সমুদ্রবাঁধ তৈরিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের আভাস উড়িয়ে দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের সেচমন্ত্রী শুভেন্দু। তাই তার নেতৃত্বে ভাল কাজের জন্য যদি কেউ ব্যানার লাগায়, সেটা সাধারণ মানুষের আবেগ। এর সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Conflict Shankarpur Suvendu Adhikari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE