Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ফেল করলেও আন্দোলন, যুব নেতার বার্তায় বিতর্ক

ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষার ফেল করলেও আন্দোলন করতে হবে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জানতে চাইতে হবে কেন ফেল? দলের ছাত্র-যুব নেতাদের এমনই নিদান দিলেন যুব তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি।

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:২৯
Share: Save:

ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষার ফেল করলেও আন্দোলন করতে হবে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জানতে চাইতে হবে কেন ফেল? দলের ছাত্র-যুব নেতাদের এমনই নিদান দিলেন যুব তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি। শুধু তাই নয় স্বশাসিত কলেজে ভোটাধিকারের দাবিতেও আন্দোলনের বার্তা দিয়েছেন এক সময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলানো রমাপ্রসাদ।

ছাত্রভোটকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে টিএমসিপির এক সভায় হাজির ছিলেন রমাপ্রসাদ। সেখানে তিনি বলেন, “এ বার স্নাতক স্তরে প্রথম বর্ষের ফল খারাপ হয়েছে। কেন এই নিয়ে আন্দোলন হবে না? কেন আমরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে জানতে চাইব না, ছাত্রছাত্রীদের ফল কেন এত খারাপ হচ্ছে?”

রমাপ্রসাদের এই নিদান নিয়ে বিঁধতে ছাড়ছে না বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ মুদি এবং ডিএসও-র জেলা সভাপতি দীপক পাত্রের মতে, শাসক দলের ছাত্র সংগঠন হওয়ায় টিএমসিপি-র হাতে আন্দোলনের মতো আর কোনও বিষয় নেই। তাই এই ধরনের বিষয় নিয়ে পথে নামার কথা বলছে তারা।

সপ্তাহ খানেক আগে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরে প্রথম বর্ষের ফল প্রকাশ হয়েছে। জেলার বেশ কিছু কলেজের ফল আশানুরূপ হয়নি। পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে ইতিমধ্যে চন্দ্রকোনা রোড কলেজের একাংশ ছাত্রছাত্রী বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ধর্নাও দিয়েছেন। টিএমসিপি-র জেলা সভানেত্রী দেবলীনা নন্দীর উদ্দেশে সভায় রমাপ্রসাদের তাই বার্তা, “দেবলীনাকে অনুরোধ করব, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করো। কেন ফল এত খারাপ হল জানতে চাও। এতে পড়ুয়াদের কাছেও বার্তা যাবে, টিএমসিপি ছাত্রদের হয়ে কথা বলে।”

পুরনো কথা স্মরণ করিয়ে এ দিন রমাপ্রসাদ বলেন, “২০১৪ সালে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রথম বর্ষে ৫৫ শতাংশ ছাত্র ফেল করেছিল। আমি তখন টিএমসিপির জেলা সভাপতি। অধ্যক্ষকে বলেছিলাম, ৫৫ শতাংশ পড়ুয়া ফেল করলে দায় যেমন ছাত্রছাত্রীদের, দায় কিন্তু শিক্ষকদেরও। তাহলে শিক্ষকদের সাসপেন্ড করুন।”

স্বশাসিত মেদিনীপুর কলেজে কেন ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে না, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। রমাপ্রসাদের কথায়, “মেদিনীপুর কলেজে ভোটের দাবি কেন টিএমসিপি তুলবে না? এত বড় কলেজে ইউনিয়ন না থাকাটা আমাদের কাছে লজ্জার।’’ পরক্ষণেই তাঁর সংযোজন, “যে সব সরকারি কলেজে ভোট হচ্ছে না, সেখানেও দাবি তুলে ভোট করিয়ে নিতে হবে।”

স্বশাসিত মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরা অবশ্য বলেন, “স্বশাসিত কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করা যায় না। স্টুডেন্ট কাউন্সিল গঠন করা যায়। ছাত্রছাত্রীদের দাবি কাউন্সিলের মাধ্যমে কলেজের নজরে আসে।” তা হলে কেন এমন অন্যায্য দাবিতে আন্দোলনের কথা বলছেন এই যুব নেতা? রমাপ্রসাদ অবশ্য এতে অন্যায় কিছু দেখছেন না। সভা শেষে তিনি বলেন, “ভুল কিছু বলিনি। পরীক্ষায় খারাপ ফলের কারণ জানতে চাওয়াটা কি অন্যায়?” টিএমসিপি-র জেলা সভানেত্রী দেবলীনা নন্দী অবশ্য এতটা বেসুরো বাজেননি। তিনি বলেন, “আন্দোলন হবে। তবে সঙ্গে পড়াশোনাটাও করতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

comment controversy young leader
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE