নির্দল এক কাউন্সিলরকে দলে টেনে আর দু’জনের সমর্থন আদায় করে রামজীবনপুরে পুরবোর্ড গড়া প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে তৃণমূল। আর তারপরই কে পুরপ্রধান হবে, তা নিয়ে শাসক শিবিরে শুরু হয়েছে কোন্দল।
তৃণমূল সূত্রের খবর, সম্ভাব্য পুরপ্রধান হিসেবে দু’জনের নাম উঠেছে এসেছে— প্রাক্তন পুরপ্রধান শিবরাম দাস ও নির্মল চৌধুরী। ছ’জন কাউন্সিলরের মধ্যে এক দল চাইছেন শিবরামকে, অন্য পক্ষের পছন্দ নির্মল। তবে যে নির্দল কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সমীকরণ শাসকের অনুকূলে গিয়েছে, সেই শিউলি সিংহ ভট্টাচার্যের উপ-পুরপ্রধান হওয়া প্রায় নিশ্চিত। এই পরিস্থিতিতে পুরপ্রধান বাছাই করতেই বেগ পাচ্ছে তৃণমূল। যে দুই নির্দল কাউন্সিলর তৃণমূলের বোর্ডকে সমর্থন করবেন জানিয়েছেন, সেই রিঙ্কু নিয়োগী ও মানসী চৌধুরীর নির্মলবাবুকে পুরপ্রধান হিসেবে চান। কিন্তু তৃণমূলের দলীয় প্রতীকে জেতা কাউন্সিলরদের সমর্থন প্রাক্তন পুরপ্রধান শিবরামবাবুর দিকেই বেশি। তবে গত দশ বছর একটানা পুরপ্রধান পদে থাকা শিবরামবাবুর বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ফলে, তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের একটা অংশ তাঁকে আর পুরপ্রধান করতে রাজি নন। তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘আগে দলে এ নিয়ে আলোচনা হবে। তারপরেও জটিলতা না কাটলে তৃণমূলের কোনও এক অভিজ্ঞ কাউন্সিলরকে চেয়ারম্যান করা হতে পারে।’’ সে ক্ষেত্রে প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান সুজিত পাঁজার নামও উঠে আসছে।
কোন্দলের কথা অবশ্য প্রকাশ্যে মানছেন না তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার নির্দল এক কাউন্সিলর আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। ফলে রামজীবনপুরে আমরাই পুরবোর্ড গঠন করব। তবে পুরপ্রধান নিয়ে এখনও কোনও আলোচনা হয়নি।’’
রামজীবনপুরে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরেও দলের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছিল। পরিস্থিতি সামলাতে শেষে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করেন। চাপে পড়ে ভোটের আগে মিলেমিশে কাজ করতে বাধ্য হয় সব পক্ষ। বোর্ড গঠনের আগে সেই কোন্দলই ফের প্রকাশ্যে এসে পড়ছে। বস্তুত, জেলার যে চারটি পুরসভায় এ বার অনায়াস জয় পেয়েছে তৃণমূল, সেই ঘাটাল, খড়ার, ক্ষীরপাই ও চন্দ্রকোনাতেও পুরপ্রধান বাছা নিয়ে দলে কোন্দল বাধে। সব ক্ষেত্রেই একাধিক নাম উঠে আসে। শেষে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর হস্তক্ষেপে চারটি পুরসভাতেই পুরপ্রধানের নাম স্থির হয়।
রামজীবনপুরে ২০০৫ সাল থেকে শাসক বিরোধী মহাজোটই পুরসভায় ক্ষমতায় ছিল। এ বারও ১১টি আসনের মধ্যে মহাজোটের প্রার্থীরা ৬টি আসনে জেতেন। তবে তার মধ্যে বিজেপির প্রতীকে জিতেছিলেন দু’জন। আর তৃণমূল পেয়েছিল ৫টি আসন। এরপর কলকাতায় চার নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থন নিয়ে বোর্ড গড়ার কথা ঘোষণা করেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। তবে শেষ মুহূর্তে তিন নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থন আদায় করে বাজিমাত করেছে তৃণমূলই। স্থানীয় সূত্রের খবর, বিজেপি রাজ্য সভাপতির সাংবাদিক বৈঠকের পরই জোট-চিত্রে চিড় ধরে। ফলে, নির্ধল ভাঙানো সহজ হয়ে যায় তৃণমূলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy