Advertisement
E-Paper

সংক্রমণে দ্বিতীয়, জেলায় নতুন করে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা

প্রতিদিন পূর্ব মেদিনীপুরে যে পরিমাণ ব্যক্তি সংক্রমিত হচ্ছেন, সেই সংখ্যাটা গড়ে ৪০০ জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২১ ০৬:৪৬
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দ্বিতীয় ঢেউয়ে রাশ টানতে রাজ্যে গত এক মাস চালু ছিল কড়া বিধি নিষেধ। তাতে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত হারে কমলেও পূর্ব মেদিনীপুরে জেলায় এখনও সেই সংখ্যাটা দিনে গড়ে চারশোর বেশি। যা এই জেলাকে রাজ্যের আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে এনে ফেলেছে। বিষয়টি মাথায় রেখে পূর্ব মেদিনীপুরে নতুন করে বেশ কয়েকটি কনটেনমেন্ট জ়োন (গণ্ডিবদ্ধ এলাকা) চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন।

প্রতিদিন পূর্ব মেদিনীপুরে যে পরিমাণ ব্যক্তি সংক্রমিত হচ্ছেন, সেই সংখ্যাটা গড়ে ৪০০ জন। করোনায় আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষে থাকা উত্তর চব্বিশ পরগনার পরেই রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের স্থান। একদিনে আক্রান্ত সংখ্যার নিরিখে একসময়ে রাজ্যের মধ্যে উত্তর চব্বিশ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলির পর পঞ্চম স্থানে ছিল পূর্ব মেদিনীপুর। এখন ওইসব জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। কিন্তু বেড়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। ফলে আমজনতার সচেতনতার পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারি নিয়ে।

জেলাবাসীর একাংশের মাস্ক পরায় অনীহা ও বাজারগুলিতে সামাজিক দূরত্ব বিধি ভেঙে ভিড়ের জেরে এখনও পরিস্থিতি উদ্বেগের বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। বিষয়টি মাথায় রেখে জেলায় কনটেনমেন্ট জ়োন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই মতো সংক্রমণ বেশি রয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরে এমন ১৫টি ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় জ়োন চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ব্লকগুলি হল পাঁশকুড়া-১ (পাঁশকুড়ার একটি ওয়ার্ড এবং দু’টির পঞ্চায়েতের একাংশ), ময়না (আটটি পঞ্চায়েতের কিছু অংশ), কোলাঘাট (দুই পঞ্চায়েতের একাংশ), চণ্ডীপুর (তিনটি পঞ্চায়েতের একাংশ), নন্দকুমার (বাসুদেবপুরের কিছু অংশ), শহিদ মাতঙ্গিনী (রঘুনাথপুরর-১ এর একাংশ), কাঁথি-১ (তিনটি পঞ্চায়েত), দেশপ্রাণ (দুই পঞ্চায়েতের কিছু অংশ), রামনগর-১ (তালগাঝাড়ি-২ এর কিছু অংশ), রামনগর-২ (মৈতনার একাংশ), খেজুরি-১, ভগবানপুর-২ (বাসুদেববেড়িয়ার একটি পাড়া), কাঁথি পুরসভা (১, ২, ১৮ ওয়ার্ডের একাংশ), মহিষাদল (গড়কমলপুরের একাংশ)।

এ ব্যাপারে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘করোনার সংক্রমণের বিষয়টি মাথায় থেকে নতুন করে কনটেনমেন্ট জ়োন চিহ্নিত করা হয়েছে।’’

স্বাস্থ্য দফতরের হিসাবে অনুযায়ী, গত বছর মার্চে জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্তের খোঁজ মেলা থেকে চলতি বছর ১ মার্চ পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন ২০ হাজার ৬৯৬ জন। মৃতের সংখ্যা ছিল ২৭৯ জন। এরপর ১ এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা তেমন বাড়েনি। এই সময়ে সংক্রমিত হয়েছেন ২০ হাজার ৮৬৮ জন। মৃতের সংখ্যার কোনও হেরফের হয়নি।

এপ্রিলের পর থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরে দ্রুত হারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। গত ১ মে পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয় ২৭ হাজার ৭৭৮ জন। অর্থাৎ এক মাসে সংক্রমিত হন প্রায় সাত হাজার মানুষ। মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৯৯-এ। এই সময়ের আগেই মিটেছিল বিধানসভা ভোটের প্রচার পর্ব এবং ভোটদান প্রক্রিয়া। ওই সময় করোনা বিধি মানা কার্যত শিকেয় উঠেছিল বলে অভিযোগ।

রাজ্যে করোনার সংক্রমণের পরিস্থিতি দেখে গত ১৬ মে থেকে রাজ্যজুড়ে কার্যত লকডাউন চালু করে রাজ্য সরকার। তবে ১ জুন পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয় ৪৯ হাজার ৭৫৫ জন। মারা যান ৩২৬ জন। ১৬ জুন পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫ হাজার ৯৪৯ জন। মারা গিয়েছেন ৩৫২ জন। সক্রিয় রোগী রয়েছে ২ হাজার ১০৪ জন।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায়ের মতে, ‘‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আমাদের জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বেশি ছিল। আক্রান্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছে। কিন্তু বাসিন্দাদের একাংশের মাস্ক ছাড়াই বাজারে যাওয়া ও ভিড় করার প্রবণতা দেখা গিয়েছে। এটা উদ্বেগের বিষয়। করোনা বিধি মেনে চলায় বাসিন্দাদের সচেতন করতে প্রচার চালানো হচ্ছে।’’

coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy