Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Contai

অক্সিজেন দিয়ে প্রাণ বাঁচালেন দুই শিক্ষক

পরে হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি অ্যাম্বুল্যান্সের মালিক গাড়ি থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার দেন।

দুই শিক্ষক।  নিজস্ব চিত্র

দুই শিক্ষক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২১ ০৬:৩৯
Share: Save:

রবিবার রাত সাড়ে দশটা। ফোনের উল্টোদিক থেকে সংখ্যালঘু পরিবারের এক যুবক কাঁদতে কাঁদতে বলছেন, ‘‘আমার মা খুব অসুস্থ। খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।’’ কথাটা শুনে সনাতন জানা সটান বলে দিলেন, ‘‘ রোগীকে দ্রুত কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসুন।’’ রামনগর-২ ব্লকের কাঠপুল বাজার এলাকার বাসিন্দা ওই যুবক ও তাঁর স্ত্রী রাতেই পঞ্চাশোর্ধ মাকে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। জরুরি বিভাগে ভর্তি করানো হয়।

তবে হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন মিলছিল না বলে দাবি ছেলের। সনাতনের মারফত গোটা ঘটনা শুনে ছুটে যান তেহেরান হোসেন। তাঁর কথায়, ‘‘গোড়াতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, অক্সিজেনের ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু রোগীকে তো বাঁচাতে হবে। ততক্ষণে অক্সিজেন সিলিন্ডারের খোঁজাখুঁজি শুরু করেছি। পরে হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি অ্যাম্বুল্যান্সের মালিক গাড়ি থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার দেন।’’ ওই অক্সিজেন সিলিন্ডারের সাহায্যে কিছুটা সুস্থ হন মহিলা। তবে সকাল হতেই তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে ওই মহিলার করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালের কোভিড র্বিভাগে স্থানান্তরিত করা হয়। আপাতত সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।

বছর বত্রিশের সনাতন স্কুলশিক্ষক। তবে স্কুল বন্ধ থাকলেও বাড়িতে বসে নেই তিনি। আর তেহেরানও প্রাথমিক শিক্ষক। এঁরা দু’জনে স্থানীয় কয়েক জনের সঙ্গে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তৈরি করেছেন। মূলত করোনা পরিস্থিতিতে আক্রান্ত রোগী এবং তাঁর পরিবারের লোকেদের পাশে দাঁড়ানোই লক্ষ্য। তেহেরানের কথায়, ‘‘সমাজ মাধ্যমে আমরা মোবাইল নম্বর দিয়ে রেখেছি। এত রাতে শ্বাসকষ্টের উপসর্গ থাকা এক রোগীর পরিবারের লোকজন যখন অক্সিজেন পাচ্ছেন না বলে দাবি করছেন, তখন মহিলাকে বাঁচানোই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হয়ে গিয়েছিল। অ্যাম্বুল্যান্সের মালিক এক কথাতেই আমাদের অক্সিজেন সরবরাহ করতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। তিনিও যথেষ্ট সাহায্য করেছেন।’’

প্রসঙ্গত কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে কিছুদিন ধরে সাধারণ রোগীদের পাশাপাশি করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে। তার জন্য ওই হাসপাতালে অক্সিজেন চাহিদা অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ঘাটতি রয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের সুপার রজত কুমার পাল বলেন, ‘‘এরকম ঘটনা জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Contai Coronavirus in West Bengal Oxygen Can
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE