Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Digital Summit

লক্ষ্য সমাজমাধ্যম দখল, ‘ডিজিটাল সামিটে’ সিপিএম

সিপিএম নেতৃত্ব মানছেন, তৃণমূল-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি সমাজমাধ্যমে কী পোস্ট করছে, বামেদের সমালোচনায় কী বলছে সেই  নিয়ে নজরদারির পাশাপাশি, সমালোচনার উপযুক্ত রাজনৈতিক জবাব দেওয়াও জরুরি।

CPM attends digital summit

সিপিএম দলের সভা-মিছিলের পাশাপাশি ডিজিটাল মাধ্যমেও সড়গড় হতে হবে। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৩ ০৭:৪৩
Share: Save:

হেঁটেও আছি, নেটেও আছি।

আলিমুদ্দিনের নতুন স্লোগানকে কার্যকরী করতে চাইছে ঝাড়গ্রাম জেলা সিপিএম। শুধু মিছিলে হাঁটলে চলবে না, তথ্য প্রযুক্তি ও সমাজমাধ্যমকে ব্যবহার করে দলের প্রচারও করতে হবে। দলের সভা-মিছিলের পাশাপাশি ডিজিটাল মাধ্যমেও সড়গড় হতে হবে। দলের নেতা-কর্মীদের বার্তা দেওয়া হচ্ছে এমনই বার্তা। তার জন্য সিপিএম নেতা কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। জেলা ও ব্লক স্তরে হবে ‘ডিজিটাল সামিট’।

সিপিএম নেতৃত্ব মানছেন, তৃণমূল-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি সমাজমাধ্যমে কী পোস্ট করছে, বামেদের সমালোচনায় কী বলছে সেই নিয়ে নজরদারির পাশাপাশি, সমালোচনার উপযুক্ত রাজনৈতিক জবাব দেওয়াও জরুরি। কিন্তু ঝাড়গ্রাম জেলায় দলের নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশ ডিজিটাল মাধ্যম সম্পর্কে এখনও ওয়াকিবহাল নন। যেখানে তৃণমূল ও বিজেপি অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। সেটাই বদলানো দরকার। জঙ্গলমহলে বামেরাও যে বিরোধী শক্তি সেই ধারণাটা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সেটা করতে হলে সমাজমাধ্যমকে ব্যবহার করতেই হবে। তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগেই এই নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। জেলার গ্রামীণ এলাকাগুলির দুর্দশার অণু তথ্যচিত্র তৈরি করে ডিজিটাল প্রচারও চালাবে সিপিএম।

উল্লেখ্য, এক সময়ে কর্মসংস্কৃতি নষ্টের কথা বলে রাজ্যে কম্পিউটার ব্যবস্থা চালুর বিরোধিতা করেছিল বামেরা। এখন পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি দলের জেলা কমিটির সদস্য তথা সিটুর জেলা সম্পাদক পার্থ যাদবের নেতৃত্বে সাত জন দলীয় সদস্য কলকাতায় দলের ডিজিটাল সেলে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। এবার পার্থরা ‘ডিজিটাল সামিটে’র মাধ্যমে জেলা, এরিয়া ও শাখা কমিটির সদস্যদেরও প্রশিক্ষণ দেবেন। আজ, রবিবার গোপীবল্লভপুর থেকে সেই কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। পরবর্তী ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিতদের নিয়ে ছোট ছোট গ্রুপ তৈরি করে প্রশিক্ষণ টিম তৈরি করা হবে। তারপর এরিয়া, শাখা, এমনকি বুথ স্তরেও হবে ‘ডিজিটাল সামিট’। ওই সব ‘সামিটে’ দেখা হবে দলের নেতা-কর্মীরা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে কতটা সড়গড় হচ্ছেন। দলের একাংশ সদস্য এখনও সমাজমাধ্যমের বাইরে। তাঁদেরও সমাজমাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত হতে বলা হয়েছে।

দলের জেলা কমিটির এক সদস্য বলছেন, ‘‘দলের নির্দেশে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সচল করে প্রতিদিন লক্ষ্য রাখছি।’’ এতদিন দলের কিছু তরুণ কর্মী ও নেতা সমাজমাধ্যমে তৃণমূল ও বিজেপির সমালোচনা করে, সাম্প্রতিক নানা বিষয়ে পোস্ট ও মন্তব্য করতেন। এখন থেকে দল সংক্রান্ত পোস্ট করার আগে সেগুলি দলের সোশ্যাল মিডিয়া দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে দেওয়া হচ্ছে। পরিবর্তন বা পরিমার্জনের প্রয়োজন হলে সেটা সংশোধন করে দেওয়ার পর পোস্ট করা হচ্ছে। সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের জেলা কমিটির এখন একটিই অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ আছে। ১৫টি এরিয়া কমিটির মধ্যে ৭টির ফেসবুক পেজ আছে। আরও ৮টি এরিয়া কমিটির ফেসবুক পেজ তৈরি করা হবে। দলের গণ সংগঠনগুলির পৃথক ফেসবুক পেজ রয়েছে। এক সময় জেলায় দলের সদস্য সংখ্যা কমে ১৭০০ হয়ে গিয়েছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জেলায় দলের সদস্য সংখ্যা দু’হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।

২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে জেলার ৭৯টি পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র একটি পঞ্চায়েত দখল করেছিল সিপিএম। সিপিএমের দাবি, গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের সেই সাতমা গ্রাম পঞ্চায়েতে উল্লেখযোগ্য কাজ হয়েছে। পাশাপাশি, তৃণমূল ও বিজেপির ক্ষমতায় থাকা জেলার বাকি ৭৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাস্তবচিত্র তুলে ধরা হবে ছোট ছোট তথ্যচিত্রের আকারে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ সরকার বলছেন, ‘‘প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রচারের লক্ষ্যে নেতা-কর্মীদের প্রশিক্ষণ হচ্ছে। জেলা থেকে ৭ জন কলকাতায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। তাঁরাই বাকিদের প্রশিক্ষণ দেবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Digital Summit CPM Social Media
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE