মালিক নেই। দিঘায় যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে ঘোড়া।
করোনা কেড়েছে রুটিরুজি। আর আমপানে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে আস্তানাও। জোড়া সঙ্কটে জর্জরিত দিঘার সৈকতের ঘোড়সওয়ারের কারবারিরা। দুর্বিষহ দশা ঘোড়াগুলিরও।
সপ্তাহ শেষের ছুটি মানেই বাঙালির প্রিয় গন্তব্য দিঘা। আর সেই সৈকত শহরে হরেক বিনোদনের অন্যতম বালুতটে ঘোড়ার পিঠে চড়া। লকডাউনের গোড়া থেকেই পর্যটপক শূন্য দিঘা। বন্ধ হোটেল-রিসর্ট। সুনসান সৈকত শহরে তখন থেকেই রুজিতে টান পড়েছিল ঘোড়সওয়ার ব্যবসায়ীদের। আমপানের ধাক্কায় ওল্ড ও নিউ দিঘার যে সব জায়গায় ঘোড়ার থাকার জন্য ছাউনি ছিল, সেগুলি সব উড়ে গিয়েছে। ঘোড়ার মজুত খাদ্যসামগ্রীও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ঘোড়াগুলি ঠাঁইহারা হয়ে দিঘা শহর এবং সংলগ্ন গ্রামাঞ্চলে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ওল্ড দিঘায় সমুদ্র সৈকত লাগোয়া ঝুপড়ি দোকানের পিছনে এবং নিউ দিঘায় সরকারি হাসপাতালের সামনে ঝাউ জঙ্গলের ভিতর বিশাল এলাকা জুড়ে আস্তাবল তৈরি করেছিল ঘোড়সওয়ারের কারবারিরা। ঘূর্ণিঝড় আমপানের দাপটে সেই সব আস্তাবল ভেঙে তছনছ হয়ে গিয়েছে। ঘোড়ার গলার বাঁধনও সে দিন খুলে দেওয়া হয়। আপাতত আশপাশের এলাকার চাষিদের ঘরের ফসল খেয়েই প্রাণ বাঁচছে অবলা এই প্রাণীদের। স্থানীয় বাসিন্দা অমল জানা বলছিলেন, ‘‘কয়েকদিন ধরে গ্রামে ঢুকে পড়ছে ঘোড়া। সব রকমের ফসল খেয়ে ফেলছে। ঘোড়াদের উপদ্রবে গরুগুলিও অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে।’’ এলাকার এক যুবক সুদীপ চন্দ্র জুড়ছেন, শুধু ফসল খাওয়া নয়, যত্রতত্র মলত্যাগও করছে ঠাঁইহারা ঘোড়াগুলি।
গোটা ঘটনায় শঙ্কিত পশুপ্রেমীরা। সৈকত শহরের বাসিন্দা পশুপ্রেমী সত্যব্রত দাসের মতে, ‘‘লকডাউনের জেরে আর্থিক লোকসান সামলাতে না পেরে ঘোড়াগুলিকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন প্রকৃত মালিকেরা। তারপর ভয়ঙ্কর দুর্দশায় রয়েছে ঘোড়াগুলি।’’ সত্যব্রতের দাবি, গত একমাসে সৈকত শহরে ৪টি ঘোড়া খাবার না পেয়ে মারা গিয়েছে। তবে বিষয়টি জানার পর ঘোড় সওয়ার কারবারিদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। এলাকার বিধায়ক তথা দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান অখিল গিরি বলেন, ‘‘আপাতত ঘোড়াগুলিকে কোথায় রাখা যায় এবং তাদের কী ভাবে পর্যাপ্ত খাবার দেওয়া সে ব্যাপারে জেলাশাসকের সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছে। সৈকত শহরে ঘোড়াগুলির যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে তা দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy