Advertisement
E-Paper

নেতাদের নামে নালিশ তৃণমূলেই

বিষয়টি সামনে আসার পরেই শোভর পরিজনকে টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানান ব্লক নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২০ ০২:২১
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দিন দিন বেড়েই চলছে জেলায় আমপান ঝড়ের ক্ষতিপূরণ-দুর্নীতির অভিযোগের সংখ্যা। এত দিন শাসকদল তৃণমূলকে ওই দুর্নীতির তিরে বিঁধছিল বিরোধীরা। কিন্তু সম্প্রতি তৃণমূলের একাংশ নেতা-কর্মীরাই দলের অন্য অংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করছেন প্রকাশ্যে।

সম্প্রতি তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শোভা সাউয়ের ছেলে, তাঁর জামাইয়ের পরিবার এবং একজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত হিসাবে সরকারি সাহায্যের ২০ হাজার টাকা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির বিরুদ্ধে ওই অভিযোগে সমাজমাধ্যমে সরব হয়েছেন তৃণমূলেরই একাংশ নেতা-কর্মী। আবার ধলহারা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ একাধিক তৃণমূল নেতা এ নিয়ে জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন। ‌আর সেই অভিযোগ কার্যত মেনেও নিয়েছেন ব্লক তৃণমূলের নেতৃত্ব। তবে তাঁদের দাবি, দলের নির্দেশে শোভার ছেলে এবং আত্মীয়েরা ক্ষতিপৃরণের টাকা বৃহস্পতিবার ফিরিয়ে দিয়েছেন।

খারুই গ্রামে শোভার পাকাবাড়ি রয়েছে। তাঁর জামাইয়ের বাড়ি জামিট্যা গ্রামে। তাঁদেরও পাকা বাড়ি রয়েছে। গত বুধবার আমপানে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকা সামনে এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, শোভার ছেলে, জামাইয়ের নাম রয়েছে। এর পরেই দলের একাংশ সামজমাধ্যমে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে শোভা বলেন, ‘‘তালিকায় আমার ছেলে ও আত্মীয়ের নাম থাকার বিষয়ে জানতাম না। জানতে পেরে উদ্যোগী হয়ে টাকা ফেরানোর ব্যবস্থা করেছি। চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে।’’

বিষয়টি সামনে আসার পরেই শোভর পরিজনকে টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানান ব্লক নেতৃত্ব। ব্লক তৃণমূল আহ্বায়ক শরৎ মেট্যা বলেন, ‘‘বিষয়টি জানার পরেই আমরা দলীয়ভাবে টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছিলাম। তাঁরা বৃহস্পতিবারই টাকা ফেরত দিয়েছেন।’’ শহিদ মাতঙ্গিনীর বিডিও সুমন মণ্ডল বলেন, ‘‘ওঁরা জানিয়েছেন, তালিকায় ভুলবশত নাম ছিল। ওঁরা এ দিন টাকা ফেরতও দিয়েছেন।’’

এ দিকে, যে সব এলাকায় তালিকা তৈরিতে দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে, সেখানে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই তদন্তের সময়ও তৃণমূল নেতারা দূর্নীতি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে রাধাবল্লভচক গ্রাম পঞ্চায়েতে। বিডিও’র কাছে এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় মানুষজন-সহ তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক কমিটির এক নেতাও।

অভিযোগে বলা হয়েছে, রাধাবল্লভচক গ্রাম পঞ্চায়েত বাড়ি ক্ষতিগ্রস্তদের যে তালিকা জমা দিয়েছে, তার মধ্যে ৯৫ শতাংশ লোকেরই পাকাবাড়ি। গত ২৮ জন চূড়ান্ত তালিকা তদন্তের জন্য পাঁশকুড়া বিডিও অফিসের যে দলটি এসেছিল, তাদের অন্ধকারে রেখে অন্য লোকের বাড়ি দেখিয়ে তালিকা পাকা করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সাহালাম গায়েন বলেন, ‘‘যাঁদের নাম তালিকায় রয়েছে, তাদের অধিকাংশই পাকাবাড়ির মালিক। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরা এখনও ত্রিপলের ছাউনিতে রাত কাটাচ্ছেন।’’

বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক কমিটির নেতা শেখ রেজাবুল হক। তিনি বলেন, ‘‘রাধাবল্লভচক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান ও তাঁদের এক সঙ্গী মিলে দুর্নীতি করছেন। ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দেওয়ার জন্য কাটমানি নেওয়া হচ্ছে। দলের উর্ধ্বতন নেতৃত্বের কোনও কথাই এঁরা শুনছেন না।’’ অভিযুক্ত প্রধান রেবারানি বেরা প্রধান বলেন, ‘‘প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদেরই তালিকায় রাখা হয়েছে।’’

অভিযোগ জমা পড়া প্রসঙ্গে পাঁশকুড়ার বিডিও ধেনধুপ ভুটিয়া বলেন, ‘‘অভিযোগ যখন এসেছে তখন নতুন ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তালিকা আবার যাচাই করার কাজ হবে। যেদিন আমার অফিসের তদন্তকারী দল এলাকায় গিয়েছিল সেদিন ওঁরা ওই দলের কাছে অভিযোগ করলেই পারতেন।’’ যদিও এ রেজাবুলের দাবি, ‘‘বিডিও অফিসের দল এলাকায় আসছে এই বিষয়ে প্রধান কয়েকজনকে ছাড়া বাকি পঞ্চায়েত সদস্যদেরও জানাননি। আগে থেকে জানতে পারলে সেদিনই

অভিযোগ জানাতাম।’’

Cyclone Amphan TMC Corruption
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy