Advertisement
E-Paper

পণ না মেলায় নির্যাতন, দেহ উদ্ধার যুবতীর

দাবি মতো এক লক্ষ টাকা পণ না মেলায় শ্বশুরবাড়িতে পাপিয়া কারকের উপর অত্যাচার চলত বলে অভিযোগ। বিয়ের পর বছর ঘুরতেই সেই শ্বশুরবাড়ি থেকে বছর একুশের পাপিয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৩২
দম্পতি: কমলাক্ষ কারক ও পাপিয়া কারক। নিজস্ব চিত্র

দম্পতি: কমলাক্ষ কারক ও পাপিয়া কারক। নিজস্ব চিত্র

দাবি মতো এক লক্ষ টাকা পণ না মেলায় শ্বশুরবাড়িতে পাপিয়া কারকের উপর অত্যাচার চলত বলে অভিযোগ। বিয়ের পর বছর ঘুরতেই সেই শ্বশুরবাড়ি থেকে বছর একুশের পাপিয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। রবিবার রাতে খড়্গপুর-২ ব্লকের সুলতানপুরের ঘটনায় মৃতার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন পাপিয়ার বাবা নির্মল মান্না।

কলেজে ভর্তির পরই খড়্গপুর গ্রামীণের সুলতানপুরে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন নির্মলবাবু। পাত্র কমলাক্ষ কারক বেকার জেনেও পিছপা হননি তিনি। কারণ, পাত্রের বাবা কালীপদ কারক পুলিশকর্মী। কেশপুরের বাঁকাবাড়ের বাসিন্দা নির্মলবাবু চাষবাস করেন। অভাবের সংসারে তাই পড়াশোনা ছাড়িয়ে তড়িঘড়ি পাপিয়ার বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন পরিজনেরা। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে কমলাক্ষের সঙ্গে বিয়ে হয় পাপিয়ার। মৃতার বাপের বাড়ির লোকেদের দাবি, বিয়ের সময়ই দেড় লক্ষ টাকা নগদ ও ৫ ভরি সোনার গয়না দেওয়া হয়েছিল। বিয়ের দিন কয়েক পরেই মেয়ের মাধ্যমে পাপিয়ার বাপের বাড়ির লোকেরা জানতে পারেন, কমলাক্ষ প্রায়ই নেশা করেন। তারপরেও মেয়েকে বুঝিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকার কথা বলেন তাঁরা।

মৃতার বাপের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, বিয়ের পর ছ’মাস যেতে না যেতেই বাপের বাড়ি থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়ে আসার জন্য পাপিয়াকে চাপ দিতে থাকেন কমলাক্ষ। পাপিয়া রাজি না হওয়ায় চলত অত্যাচার। বাপের বাড়ির লোকেরা পাপিয়ার শ্বশুরবাড়ি গিয়ে মীমাংসা করে আসেন। তবে এরপরে অত্যাচার কমার বদলে আরও বাড়তে থাকে বলে অভিযোগ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গত রবিবার বিকেলে ডেবরা উৎসবে যাওয়া নিয়ে কমলাক্ষ ও পাপিয়ার মধ্যে অশান্তি হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান কমলাক্ষ। পরে শাশুড়ির চিৎকার শুনে ছুটে যায় এলাকার বাসিন্দারা। দেখা যায়, বাড়ির দোতলার ঘরে দড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন পাপিয়া। খবর পেয়ে বাজার থেকে চলে আসেন কমলাক্ষ। শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই পাপিয়াকে নার্সিংহোমে নিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, চিকিৎসকেরা জানান, নার্সিংহোমে আসার আগেই পাপিয়ার মৃত্যু হয়েছে। নার্সিংহোম থেকেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। তবে পুলিশ আসার আগেই পাপিয়ার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি কাজল কারক পালিয়ে যান।

এলাকার বাসিন্দাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে নার্সিংহোমে যান পাপিয়ার বাপের বাড়ির লোকেরা। ঘটনার কথা তাঁদের না জানানোয় ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। মৃতদেহ খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়। নির্মলবাবুর অভিযোগ, এক লক্ষ টাকা পণ চেয়ে মেয়েকে নিয়মিত অত্যাচার করত জামাই। মেয়ে প্রথমে গোপন করলেও তাঁদের কাছে পরে সব জানিয়েছিল। তাঁরা অনেক বুঝিয়ে মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘মাস ছ’য়েক পাপিয়া আর বাপের বাড়িতে আসেনি। আর মেয়ের সঙ্গে দেখা হল না। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম মেয়ে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ওঁকে খুন করা হয়েছে। আমি ওই খুনিদের শাস্তি চাই।” ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Suicide Dowry
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy