Advertisement
E-Paper

ময়নায় আর ফেরা হল না সুশান্তর, সৎকার নেপালেই

আশঙ্কাই সত্যি হল। গত শনিবার নেপালের কাঠমান্ডুতে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের কথাটা শোনামাত্রই প্রমাদ গুনেছিলেন দীপালিদেবী। নেপালে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে যাওয়া স্বামীর সঙ্গে বারবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু উল্টো দিক থেকে চেনা গলাটা শুনতে পাননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৫ ০১:৫১
শোকার্ত স্ত্রী ও ছেলে। —নিজস্ব চিত্র।

শোকার্ত স্ত্রী ও ছেলে। —নিজস্ব চিত্র।

আশঙ্কাই সত্যি হল।

গত শনিবার নেপালের কাঠমান্ডুতে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের কথাটা শোনামাত্রই প্রমাদ গুনেছিলেন দীপালিদেবী। নেপালে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে যাওয়া স্বামীর সঙ্গে বারবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু উল্টো দিক থেকে চেনা গলাটা শুনতে পাননি। সব আশঙ্কা সত্যি করে জানা গেল, নেপালের কাঠমান্ডুর কাছে নয়া বাসপার্ক এলাকায় নির্মীয়মাণ যে বহুতল বাড়িতে কাজ করছিলেন সুশান্ত সাহু (৩৫) , সেই বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তাঁর দেহ। নেপালে গিয়ে শুক্রবার দুপুরে দেহ উদ্ধারের পর ভাইয়ের দেহ শনাক্ত করেন সুখেন্দু সাহু। ওই রাতে কাঠমান্ডুতেই ভাইয়ের দেহ সৎকার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তবে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুকেশ কুমার জৈন বলেন, ‘‘ নেপালে ভূমিকম্পের পর ময়নার ওই যুবকের নিখোঁজ থাকার বিষয়ে জেনেছিলাম। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছিল। তবে ওই যুবকের মৃত্যুসংবাদ নিয়ে কিছু জানি না। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’

পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার রামচন্দ্রপুর গ্রামের সুশান্ত সাহু গত ১৭ বছর ধরে নেপালে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করছিলেন। সঙ্গে কাজে গিয়েছিলেন তাঁর ভাগ্নে তাপস পাল নামে ময়নার প্রজাবাড় গ্রামের আর এক যুবকও। বিপর্যয়ের দিন ওই বহুতলের ছ’তলায় কাজ করছিলেন তাপস ও সুশান্তবাবু। ভূমিকম্পের পর কোনওক্রমে রক্ষা পান তাপস। কিন্তু সুশান্তবাবু ভূমিকম্পের পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। প্রথম দিকে সুশান্তবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না পরিজনরা। পরে তাপসবাবুর থেকেই সুশান্তবাবুর নিখোঁজ থাকার বিষয়টি জানতি পারেন তাঁর দাদা সুখেন্দুবাবু। তিনিও নেপালেই নির্মাণশ্রমিকের কাজ করেন। দিন কয়েক আগে তিনি গ্রামের বাড়িতে ফিরেছিলেন।

এরপর ভাইয়ের খোঁজে বৃহস্পতিবার নেপালে যান সুখেন্দুবাবু ও সহ দু’জন। শুক্রবার উদ্ধারকারী দল ওই বহুতলের ধ্বংসস্তূপ সরানোর সময় সুশান্তবাবুর দেহ পাওয়া যায়। তাঁর কাছে থাকা পরিচয়পত্র দেখে মৃতদেহ শনাক্ত করেন সুখেন্দুবাবু। শুক্রবার রাতে সেখানেই তাঁর মৃতদেহ সৎকার করা হয়েছে বলে জানান সুখেন্দুবাবু। নেপাল থেকে বাড়ি ফেরার পথে সুখেন্দুবাবু ফোনে জানান, ‘‘যে বহুতল বাড়িতে ভাই কাজ করছিল সেখান থেকেই মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। ভাইয়ের মুখ দেখে আমি ওকে চিনতে পারলাম। নেপাল সেনা ও ভারতীয় দূতাবাসের সহযোগিতায় শুক্রবারই ভাইয়ের মৃতদেহ সৎকার করা হয়েছে।’’

এ দিকে, সুশান্তবাবুর মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকে বাকরুদ্ধ তাঁর মা শোভারানিদেবী। আর কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সুশান্তবাবুর স্ত্রী দীপালিদেবী। আট বছরের ছেলে সুদীপকে কোলে জড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘গত এক সপ্তাহ ধরে দু’চোখের পাতা এক করতে পারিনি। ফোনে যোগাযোগ করতে পারিনি ওর সঙ্গে। খালি মনে হত, ঠিক ফোন আসবে। কিন্তু এখন তো সব শেষ হয়ে গেল।’’

Nepal Earthquake Sushant Sahu kathmandu daed body Tamluk Mednipur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy