মেদিনীপুরের রক্তাক্ত যুবকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ধৃত যুবতীর মোবাইলের কললিস্ট খতিয়ে দেখবে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, পুলিশি হেফাজতে থাকা ধৃত যুবতীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ বার ওই মোবাইলের কললিস্ট খতিয়ে দেখা হবে। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “কললিস্ট খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে ঘটনার দিন বা তার আগে ওই যুবকের সঙ্গে ফোনে তাঁর কোনও কথা হয়েছে কি না।”
দু’দিনের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষে বুধবার ধৃত যুবতীকে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হয়। ধৃতের জামিনের আবেদন জানান অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী অরিন্দম নন্দ। জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেন সরকারপক্ষের আইনজীবী অসীম চট্টোপাধ্যায়। পুলিশের তরফ থেকে ধৃতকে আর হেফাজতে চেয়ে আবেদন করা হয়নি। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে ধৃতের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
ঘটনায় ইতিমধ্যে ফরেন্সিকের দ্বারস্থ হয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবারই এক ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ মেদিনীপুরে আসেন। তিনি কোতোয়ালি থানায় যান। প্রয়োজনীয় কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন। ইতিমধ্যে উদ্ধার হওয়া পিস্তলের হাতের ছাপ সংগ্রহ করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়েও কিছু ছাপ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ এই ছাপগুলো খতিয়ে দেখবেন। পুলিশের এক সূত্রে খবর, আরও কিছু নমুনা সংগ্রহ করতে ফরেন্সিকের একটি দল ফের মেদিনীপুরে আসতে পারে।
গত রবিবার দুপুরে মেদিনীপুরের এক বাড়ির সামনে বোলপুরের যুবক চৌধুরী হাসানুজের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। যুবকের দেহ উদ্ধারের পরে পুলিশের দাবি ছিল, এটি আত্মহত্যা। যুবতীর সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরায় হাসানুজ পিস্তল থেকে নিজের মাথায় গুলি করেছেন। ওই দিন রাতে বোলপুর থেকে মেদিনীপুরে এসে হাসানুজের বাবা চৌধুরী জাকির হোসেন কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়েরের পর ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়। হাসানুজের বাবা থানায় অভিযোগ করেন, ওই যুবতী, তাঁর মা এবং আরও অনেকে মিলে তাঁর ছেলেকে খুন করেছেন। এরপর রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যুবতীকে থানায় নিয়ে আসা হয়। খুনের মামলা রুজু করে সোমবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার পরে তিন দিন কেটে গিয়েছে। তবে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি।
জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “মৃতের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনও আসেনি। ওই রিপোর্ট না-দেখে এ ব্যাপারে কিছু অনুমান করা কঠিন।” এ দিন আদালতে পুলিশের পক্ষ থেকে আবেদন করে জানানো হয়, তারা আদালতে ওই যুবতীর আঙুলের ছাপ নিতে চায়। আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করে। শীঘ্রই ওই যুবতীকে আদালতে এনে তার আঙুলের ছাপ নেওয়া হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শচীন মক্কর বলেন, “তদন্ত চলছে। তদন্ত নিয়ে এখনই কিছু বলব না।” তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা মানছেন, “ইতিমধ্যে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ মেদিনীপুরে এসেছেন। প্রয়োজনীয় কিছু নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছেন। প্রয়োজনে ফের তিনি আসতে পারেন।” তাঁর কথায়, “এ ক্ষেত্রে ফরেন্সিকের সাহায্য নিতেই হত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy