আটক: হাসপাতালে পরিয়ে রাখা হয়েছে হাতকড়া। নিজস্ব চিত্র
নিয়ম অনুযায়ী গ্রেফতার করার পরও কাউকে হাতকড়া পরানো যায় না। যদিও তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আটক এক যুবককে হাতকড়া পরিয়ে শয্যার সঙ্গে বেঁধে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যে দায় ঠেলাঠেলি শুরু হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রসেনজিৎ প্রধান নামে ওই যুবককে হাতকড়া পরিয়ে রাখার কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘কাউকে হাতকড়া পরিয়ে রাখার ঘটনা জানা নেই। এটা করাও যায় না। তবে যদি হাসপাতালের মধ্যে এমনটা হয়ে থাকে তাহলে তার দায়িত্ব হাসপাতালের।’’ প্রয়োজনে এই ঘটনার তদন্ত হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পুলিশ সুপারের এই দাবি উড়িয়ে তমলুকের জেলা হাসপাতাল সুপার গোপাল দাস বলেন, ‘‘পাঁশকুড়ার ওই যুবককে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করার পর প্রথমে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিল। শারীরিক অবস্থার উন্নতির পর তাকে জেনারেল বেডে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই যুবকের পাহারায় পুলিশ রয়েছে। তাকে আমরা হাত কড়া পরাতে যাব কেন।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁশকুড়া থানার রাধাবল্লভচক গ্রামের বাসিন্দা যুবক প্রসেনজিৎ স্ত্রী খুকুরানিকে নিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে জোড়াপুকুর এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকত। অভিযোগ, গত ১৫ অক্টোবর সকালে প্রসেনজিৎ বাড়ির মধ্যে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করার পর দরজায় তালা মেরে পালিয়ে যায়। এরপরেই প্রসেনজিৎ ময়নায় এক আত্মীয়ের বাড়ি গিয়ে শাশুড়ি ও নিজের ভাইকে ফোন করে জানায়, স্ত্রীকে মেরে এসে সে আত্মহত্যা করার জন্য বিষ খেয়ে নিয়েছে।
খবর পেয়ে খুকুরানির বাপের বাড়ির লোকেরা পাঁশকুড়া থানার পুলিশকে ঘটনার কথা জানান। পাঁশকুড়া থানার পুলিশ জোড়াপুকুর এলাকায় গিয়ে ওই ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে খুকুরানির মৃতদেহ উদ্ধার করে। কীটনাশক খাওয়ায় অসুস্থ প্রসেনজিতকে পরিজনেরা উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ তদন্তে নেমে প্রসেনজিতের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে খুনের মামলা রজু করে। তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা প্রসেনজিতকে গ্রেফতার করা হয়নি। গত ১৭ অক্টোবর থেকে হাসপাতালে প্রসেনজিতকে পাহারা দিয়ে রেখেছিল পুলিশ। অভিযোগ, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট ইউনিট থেকে জেনারেল বেডে স্থানান্তরের পর প্রসেনজিৎকে হাতকড়া পরিয়ে শয্যার সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এ ভাবে হাতকড়া পরিয়ে রাখায় ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় শুরু হয় পুলিশ মহলে। তাঁকে দ্রুত হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy