Advertisement
০২ মে ২০২৪
শিল্প সংস্থার বকেয়া পুরকর কয়েক কোটি

উন্নয়ন কাজে বিঘ্নের আশঙ্কা হলদিয়ায়

 একাধিক শিল্পসংস্থার কাছে করবাবদ বকেয়ার পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা। ফলে উন্নয়নমূলক কাজকর্ম থেকে নাগরিক পরিষেবা দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পুরসভাকে।

পুরভবন। কর আদায়ে তৎপর। নিজস্ব চিত্র

পুরভবন। কর আদায়ে তৎপর। নিজস্ব চিত্র

কেশব মান্না
হলদিয়া শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৮ ০১:১৩
Share: Save:

একাধিক শিল্পসংস্থার কাছে করবাবদ বকেয়ার পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা। ফলে উন্নয়নমূলক কাজকর্ম থেকে নাগরিক পরিষেবা দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পুরসভাকে। ইতিমধ্যেই ২০১৮-’১৯ অর্থবর্ষের জন্য পুরসভার বাজেট ঘোষণা হয়ে গেলেও করবাবদ বকেয়া পাওনা নিয়ে চিন্তায় হলদিয়া পুরকর্তৃপক্ষ।

হলদিয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন শিল্পসংস্থার কাছেবকেয়া করের পরিমাণ প্রায় ১১ কোটি টাকা। এ ছাড়াও সাধারণ নাগরিকদের কাছেও করের টাকা বাকি রয়েছে। ফলে নতুন বাজেট বরাদ্দ ঘোষণা হলেও উন্নয়নমূলক কাজে ক্ষেত্রে টাকার জোগান নিয়ে চিন্তায় পুর কর্তৃপক্ষ। রাস্তাঘাট সংস্কার, নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন, পানীয় জলের মতো জরুরি পরিষেবার কাজ করতে গিয়ে আর্থিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পুরসভাকে।

হলদিয়া পুরসভা সূত্রে খবর, যে সব শিল্পসংস্থার কাছে কর বাকি তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল হিন্দুস্থান ফার্টিলাইজার কর্পোরেশান, ইন্ডিয়ান অয়েল মার্কেটিং এবং সিএফসিএল। সিএফসিএল-এর কাছে পুরসভার পাওনা ৪ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইন্ডিয়ান অয়েল মার্কেটিং। তাদের কাছে পাওনা ৩ কোটি ৬৮ লক্ষ। হিন্দুস্থান ফার্টিলাইজার কর্পোরেশনের বকেয়া ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। হলদিয়া পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫-৭ বছর ধরে এদের কোনও কর জমা পড়েনি পুরসভার কোষাগারে।

রাজ্যের সব পুরসভাতেই করবাবদ আয়ের উপরে নির্ভর কর নাগরিকা পরিষেবা ও উন্নয়নমূলক কাজের গতি। কাজেই সে দিকে ঘাটতি থাকলে উন্নয়ন বা নাগরিক পরিষেবা যে ব্যাহত হবে তা বলাই বাহুল্য। হইহই করে বাজেট পেশ হলেও শিল্প সংস্থাগুলিকে এত বিপুল পরিমাণ কর বাকি রাখা নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের সমালোচনায় মুখর বিরোধীরা। হলদিয়ার সিপিএম বিধায়ক তাপসী মণ্ডল বলেন, ‘‘নাগরিক পরিষেবা যাতে বজায় তাকে, উন্নয়ন যাতে ব্যাহত না হয় সে জন্য পুরসভার উচিত বকেয়া কর আদায়ে তৎপর হওয়া।’’ তাঁর অভিযোগ, বামেরা য়খন ক্ষমতায় ছিল সেই সময় তৃণমূল শিল্পপতিদের কর দিতে বাধা দিত। যা নিয়ে মামলাও হয়েছিল। এখন তারা যদি কর আদায় করতে না পারে তা হলে তা দুর্ভাগ্যজনক।

এই অবস্থায় আগামী এক বছর বাজেটে যে বিপুল অর্থ সংস্থানের কথা বলা হয়েছে, তা কোথা থেকে আসবে সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে পুরসভার অন্দরে। যদিও পুরসভার সূত্রে দাবি করা হয়েছে। গত ৬ মাসে বকেয়া কর আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে। বকেয়া কর প্রসঙ্গে পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘শিল্পসংস্থাগুলির বেশিরভাগই সময়মত কর দিয়ে থাকে। তবে যেখানে পুরসভার বাজেটে বরাদ্দ নিয়ে ঘাটতি থাকছে সেখানে বকেয়া কর আদায়ে আরও জোর দেওয়া উচিত পুর কর্তৃপক্ষের।’’

এ ব্যাপারে হলদিয়া পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান শ্যামল কুমার আদক বলেন, ‘‘আমরা বকেয়া কর আদায়ে যথেষ্ট তৎপর হয়েছি। বিভিন্ন সংস্থা ও সাধারণ নাগরিকদেরও বকেয়া কর মিটিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আবেদন জানানো হয়েছে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।’’

যদিও বকেয়া কর নিয়ে শিল্প সংস্থাগুলির কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Haldia Municipality Development Based Work
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE