Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
মেদিনীপুরে রক্তের নমুনা সংগ্রহ

ডিএনএ পরীক্ষায় কাঞ্চন-সাবিরের পরিজনেরা

ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মেদিনীপুরে এসে রক্তের নমুনা দিয়ে গেলেন ছ’ বছর আগে লালগড় থেকে নিখোঁজ দুই পুলিশ কর্মী কাঞ্চন গড়াই এবং সাবির মোল্লার পরিজনেরা। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে এসেছিলেন কাঞ্চনের বাবা বাসুদেব গড়াই, ভাই চিত্তরঞ্জন গড়াই এবং সাবির মোল্লার মা জাহানারা বেগম, দাদা সামাদ মোল্লা। মেদিনীপুর মেডিক্যালে তাঁদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেখান থেকে তা পাঠানো হবে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে।

ডিএনএ-পরীক্ষার জন্য মেদিনীপুরে মেডিক্যালে কাঞ্চন গড়াই-এর বাবা ও সাবির মোল্লার মা। নিজস্ব চিত্র।

ডিএনএ-পরীক্ষার জন্য মেদিনীপুরে মেডিক্যালে কাঞ্চন গড়াই-এর বাবা ও সাবির মোল্লার মা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৫ ০১:১২
Share: Save:

ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মেদিনীপুরে এসে রক্তের নমুনা দিয়ে গেলেন ছ’ বছর আগে লালগড় থেকে নিখোঁজ দুই পুলিশ কর্মী কাঞ্চন গড়াই এবং সাবির মোল্লার পরিজনেরা। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে এসেছিলেন কাঞ্চনের বাবা বাসুদেব গড়াই, ভাই চিত্তরঞ্জন গড়াই এবং সাবির মোল্লার মা জাহানারা বেগম, দাদা সামাদ মোল্লা। মেদিনীপুর মেডিক্যালে তাঁদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেখান থেকে তা পাঠানো হবে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে।

২০০৯ সালের ৩০ জুলাই থেকে নিখোঁজ রয়েছেন রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের ওই দুই কনস্টেবল। বছর দুয়েক আগেও দেহাবশেষ উদ্ধারের পরে এক বার ডিএনএ পরীক্ষা হয়েছিল। তবে সে বার ফল ছিল ‘নেগেটিভ’। এ বারও তাই সংশয়ে রয়েছেন কাঞ্চন ও সাবিরের পরিবারের লোকেরা। কাঞ্চনের বাবা চিত্তরঞ্জনবাবুর কথায়, “আগেও একবার মেদিনীপুরে এসে রক্তের নমুনা দিয়ে গিয়েছি। জানি না এ বার কী ফল হবে।” সাবিরের মা জাহানারা বেগমও বলছেন, “দেখা যাক এ বার কী হয়।”

গত ১ মে লালগড়ের ভুলাগেড়া থেকে মাটি খুঁড়ে দু’জনের দেহাবশেষ পাওয়া যায়। এ বার পুলিশ প্রায় নিশ্চিত, ওই দেহাবশেষ কাঞ্চন এবং সাবিরের। মাটি খুঁড়ে দেহাবশেষ উদ্ধারের দিন ওই দুই নিখোঁজ পুলিশ কর্মীর পরিজনেরা ভুলাগেড়ায় উপস্থিত ছিলেন। তবে তাঁরা দেহাংশ সনাক্ত করতে পারেননি। তারপরই ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ।

সাবিরের বাড়ি বর্ধমানের মেমারিতে। আর কাঞ্চন বাঁকুড়ার ছাতনার বাসিন্দা। দু’জনের পরিবারের লোকজনেরই বক্তব্য, এত দূর উজিয়ে মেদিনীপুরে আসা তাঁদের পক্ষে হয়রানির। সাবিরের দাদা সামাদ বলেন, “সেই ভোর চারটেয় বাড়ি থেকে বেরিয়েছি। অনেকটা পথ তো।” এ দিন খড়্গপুরে পৌঁছনোর পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সাবিরের মামা জাহানারা। সামাদের কথায়, “মায়ের মন এমনিতেই ভাল নেই। তার উপর এই গরমে মা অসুস্থ বোধ করছিলেন। পরে ঠিক হয়।” বাসুদেববাবু বলেন, “ছেলে বেঁচে নেই, এটা বুঝতে পারছি। কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষার ফল না মেলা পর্যন্ত তো উপায় নে।” বলতে বলতে গলা ধরে আসছিল তাঁর। কবে ডিএনএ পরীক্ষার ফল বেরোয়, আপাতত সেই অপেক্ষায় নিখোঁজ দুই পুলিশকর্মীর পরিবার।

অন্য দিকে, মাওবাদী সন্ত্রাস পর্বে লালগড়ের দুই পুলিশ কর্মী অপহরণের মামলায় জনগণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতোর জামিন মঞ্জুর করল ঝাড়গ্রাম দ্বিতীয় এসিজেএম আদালত। বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামের দ্বিতীয় এসিজেএম আদালতের বিচারক টি কে প্রধান ছত্রধরের জামিন মঞ্জুর করেন। এ দিন অবশ্য ছত্রধর ঝাড়গ্রাম আদালতে হাজির হন নি। ইউএপিএ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তিনি আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে রয়েছেন।

ছত্রধরের আইনজীবী কৌশিক সিংহ জানান, “দুই পুলিশ কর্মী অপহরণের মামলায় ছত্রধরকে অভিযুক্ত করার পর নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করতে পারে নি পুলিশ। সেই কারণেই আমার মক্কেলের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।” কৌশিকবাবুর অভিযোগ, “ছত্রধরের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা বাড়ানোর জন্যই তাঁকে এই মামলায় অভিযুক্ত করেছিল পুলিশ। তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করতে না পারার কারণেই পুলিশ চার্জশিট দাখিল করতে পারে নি।” এ বিষয়ে পুলিশ অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চায় নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE