E-Paper

ঘরের মেয়েকে অভ্যর্থনা করতে চায় গুড়গ্রাম

কিরঘিজস্তানে অনূর্ধ্ব ১৭ মেয়েদের এশিয়া কাপের যোগ্যতা নির্ণায়ক ম্যাচে মায়ানমারের বিরুদ্ধে গোল করেছে সুলঞ্জনা। ভগবানপুরের গুড়গ্রামের মেয়েটি ফুটবল অন্তপ্রাণ।

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৩ ০৮:৫২
Sujana\'s dribble against Myanmar

মায়ানমারের বিরুদ্ধে বল দখলের লড়াই সুলঞ্জনার। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP

গ্রামের মেয়ে জাতীয় দলের হয়ে গোল করেছে। তা-ও বিদেশের অচেনা মাঠে! ঘরের মেয়ের এমন সাফল্যে খুশি কেলেঘাই নদীর পাড়ের গুড়গ্রাম। সুলঞ্জনা রাউলের গ্রাম। মেয়ে ঘরে ফিরলে শোভাযাত্রা করে তাকে অভ্যর্থনা করার পরিকল্পনা করেছিলের গ্রামবাসীরা। কিন্তু সুলঞ্জনা জানতে পেরে বাবাকে নিষেধ করে দিয়েছে।

কিরঘিজস্তানে অনূর্ধ্ব ১৭ মেয়েদের এশিয়া কাপের যোগ্যতা নির্ণায়ক ম্যাচে মায়ানমারের বিরুদ্ধে গোল করেছে সুলঞ্জনা। ভগবানপুরের গুড়গ্রামের মেয়েটি ফুটবল অন্তপ্রাণ। তবে জনসমক্ষে প্রচারমূলক অনুষ্ঠানে যেতে চায় না খুব একটা। রাজ্য দলে সুযোগ পাওয়ার পরে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাকে সম্বর্ধনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। সুলঞ্জনা ফিরিয়ে দিয়েছে।

পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের বৃত্তে বেশি স্বচ্ছন্দ সুলঞ্জনা। বাড়িতে এলে বন্ধু বান্ধবীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে পছন্দ করে। ২৪ এপ্রিল মেজো দিদি নীলাঞ্জনার বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। কিরঘিজস্তানে দু’দিন পরে ২৬ এপ্রিল খেলা ছিল সুলঞ্জনার। ছোট মেয়ের ইচ্ছে মতো তার সকল বন্ধু ও বান্ধবীকে দিদির বিয়েতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিয়ের অনুষ্ঠান কিরঘিজস্তানে বসে ভিডিও কলে দেখেছে সুলঞ্জনা। জাতীয় দলের হয়ে গোল করার পরেই রাতে ড্রেসিংরুমে ফিরে মা, বাবা ও পরিবারের খোঁজ নিয়েছে। বাবা ও মা যাতে সরাসরি খেলা দেখতে পারে সেই জন্য সম্প্রচারের লিঙ্ক বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিল।

বাবার কাছেই ফুটবল প্রশিক্ষণ মেয়ের। বাবা গণেশ রাউল চাষের কাজে সকালে বেরিয়ে যেতেন। বাবা বাড়ি ফিরলে দুপুর ৩টে থেকে ফুটবল নিয়ে অনুশীলন শুরু করত সুলঞ্জনা। বাবার সাইকেলের পিছনে গ্রামের রাস্তায় নিয়ম করে ৭-৮ কিলোমিটার দৌড়ত।

প্রথমদিকে মেয়ের ফুটবল খেলা নিয়ে কিছু বাঁকা মন্তব্য শুনতে হয়েছে। গুরুত্ব দিত না সুলঞ্জনার পরিবার। ছোট মেয়ের স্বপ্নপূরণে নিজেদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন বাবা গণেশ ও মা রিনা। ফুটবল বিশ্বকাপ রাতে জেগে বাবার সঙ্গে খেলা দেখত সুলঞ্জনা। প্রিয় গায়ক অরিজিৎ সিংহ। চাওয়া বলতে ফুটবলের জন্য জার্সি, প্যান্ট ও জুতো।

বর্তমানে দিল্লিতে সুলঞ্জনা। আমদাবাদে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলতে যাচ্ছে। জাতীয় দলের ১৯ নম্বর জার্সিতে গোল করার পরেই একাধিক ক্লাব তাকে শুভেচ্ছা জানতে প্রস্তুতি নিয়েছিল। গ্রামে ফিরলে শোভাযাত্রা করে সম্বর্ধনা দেওয়া কথা ভেবেছিলেন গ্রামবাসীরা। সুলঞ্জনা রাজি হয়নি। সুলঞ্জনার সাফল্যে খুশি ভগবানপুর-সহ গোটা জেলা। স্থানীয় বাসিন্দা আশিস পাত্র বলেন, ‘‘ছোট থেকে ফুটবলে আগ্রহ মেয়েটার। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে গোল করায় খুশি আমরা। দেশের নাম বিশ্ব দরবারে তার পায়ের জাদুতে পরিচিত হোক সেটাই কামনা করি।’’

বাবা গণেশ রাউল বলেন, ‘‘মেয়ের গোলের খিদে আছে। ও বলেছিল গোল করে জাতীয় দলের জায়গা পাকা করতে। খেলার শেষে ড্রেসিংরুম থেকে ফোন করে আনন্দ করেছিল। সবাই তাকে আশীর্বাদ করছেন। দেশের হয়ে আরও বড় কিছু করাই মেয়ের লক্ষ্য।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bhagbanpur U17 Indian Football Team

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy