প্রতীকী ছবি
হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগী দেখার সময় মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের (এম আর) চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে রোগীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ নতুন নয়। বহিবির্ভাগে রোগী দেখার সময় এ ভাবে এম আর-দের সঙ্গে চিকিৎসকদের দেখা করা নিয়ে চিকিৎসায় ব্যাঘাত সৃষ্টির অভিযোগ তুলেছিলেন রোগীরা। রোগীদের আপত্তিতে হাসপাতালের সুপার এ ব্যাপারে পদক্ষেপও করেন। ঠিক হয়েছিল, বহির্বিভাগে রোগী দেখার সময় নয়, রোগী দেখা শেষ হলে প্রতিদিন বেলা দেড়টা থেকে এম আর-দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন চিকিৎসকেরা।
কিন্তু অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নতুন নিয়ম চালু করলেও চিকিৎসকদের একাংশ তার তোয়াক্কা না করেই রোগী দেখার মধ্যেই এম আর-দের সঙ্গে দেখা করছেন। রোগীদের অভিযোগ, আগে হাসপাতালে ঘরের মধ্যে রোগী দেখার সময়েই এই কাজ চলত। এ নিয়ে আপত্তির পর এখন চিকিৎসকেরা রোগী দেখতে দেখতেই ঘরের বাইরে বেরিয়ে এসে এম আর দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। তার ফলে রোগীকে ভিতরে বসে থাকতে হচ্ছে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নিয়মানুযায়ী সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এখন রোগীদের প্রেসক্রিপশনে ওষুধের কোম্পানির নাম (ব্র্যান্ড নাম ) লিখতে পারবেন না। তাঁকে ওষুধের জেনেরিক নাম লিখতে হবে। এই অবস্থায় রোগীদের প্রশ্ন, তার পরেও সরকারি হাসপাতালে এম আর-দের সঙ্গে চিকিৎসকদের দেখা করা বন্ধ করা যাচ্ছে না কেন? সম্প্রতি এক শিশু চিকিৎসক রোগীকে বসিয়ে রেখে এম আর-দের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন। রোগীরা এনিয়ে বিক্ষোভ দেখান। হাসপাতাল সুপারের কাছেও এ ব্যাপারে অভিযোগ হয়েছিল। সেই শিশু চিকিৎসককে সুপার সাবধান করে দিয়েছিলেন।
কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতির বদল হয়নি বলে অভিযোগ। হাসপাতালে আসা এক রোগী সঞ্জয় সিংহের প্রশ্ন, “ওষুধের কোম্পানির নাম না লিখে জেনেরিক নাম লেখার নিয়ম থাকলে এম আর-রা প্রতিদিন হাসপাতালে আসছেন কেন? তা হলে কি চিকিৎসকেরা সরকারি নিয়ম মানছেন না?” তাঁদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নিয়ে হাসপাতালের এক চিকিৎসক সুজিত দাস বলেন, ‘‘হাসপাতালে বহির্বিভাগে রোগী দেখা শেষ হয় দুপুর দেড়টায়। তারপর আমি এম আর-দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। এতে রোগীর অসুবিধা কোথায়!’’
রোগীরা যে প্রশ্ন তুলেছেন তা নিয়ে হাসপাতাল সুপারের দাবি, “নির্দিষ্ট সময়ের পর এম আরদের সঙ্গে চিকিৎসকদের সাক্ষাৎ নিয়ে কোনও অন্যায় নেই। তা ছাড়া নিত্য নতুন নানা রকমের ওষুধ বেরোচ্ছে। কত ওষুধের নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এ সব জানার জন্যই চিকিৎসকদের এম আর দের সঙ্গে সাক্ষাৎ জরুরি।’’
কাঁথি-এগরা মহকুমার চিকিৎসকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রাক্তন সভাপতি তথা চিকিৎসক বিভূতিভূষণ দেবরায় বলেন, “নতুন ব্যবস্থায় এখন এম আর-রা হাসপাতালে এসে কি করবেন? এখন তো চিকিৎসকদের ওযুধের জেনেরিক নাম লিখতে হয়। আর চিকিৎসকদের জ্ঞান বাড়াতে এম আর-দের সঙ্গে সাক্ষাৎ দরকার হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy