Advertisement
E-Paper

বাংলাদেশে অশান্তি, ধাক্কা শুঁটকি ব্যবসায়

বাংলাদেশে অশান্তির জেরে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার আঁচ লেগেছে মেদিনীপুরের শুঁটকি ব্যবসায়।

শুঁটকি তৈরি। জুনপুট মৎস্য খ্টি এলাকায়।

শুঁটকি তৈরি। জুনপুট মৎস্য খ্টি এলাকায়। নিজস্ব চিত্র।

কেশব মান্না

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৫ ১০:৩৬
Share
Save

আগে শুঁটকি মাছ বিক্রি হত ১০০ টাকারও বেশি কেজি দরে। এখন সেই শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৬০-৭০ টাকায়! মন্দার ধাক্কা সামলাতে জেরবার পূর্ব মেদিনীপুরের প্রসিদ্ধ শুঁটকি কারবার। সৌজন্যে ওপার বাংলার উত্তাল রাজনীতি আর সীমান্ত সমস্যা।

বাংলাদেশে অশান্তির জেরে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার আঁচ লেগেছে মেদিনীপুরের শুঁটকি ব্যবসায়। কাঁথির জুনপুট শুঁটকির জন্য বিখ্যাত। জুনপুটের এক শুঁটকি কারবারি শেখ নুজু বলেন, "প্রতি বছর পেট্রোপল সীমান্ত পেরিয়ে শুঁটকি যেত। ২০-২৫ গাড়ি শুঁটকি কাঁটাতারের বেড়ায় চেকিং হয়ে রফতানিকারিদের হাত ধরে চলে যেত। পরে ব্যবসায়ীরা ভিসা নিয়ে কাঁথি এসে টাকা মিটিয়ে যেতেন। এবার মাত্র ৫ গাড়ি মাল গিয়েছে। বাংলাদেশে যা চলছে তাতে কোনও ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে উঠতে পারিনি।’’

বাংলাদেশে মূলত কেরিপাতার শুঁটকির চাহিদা। কেন্দ্রীয় সরকারের বানিজ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালে এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪০০০.০৯ মেট্রিক টন শুঁটকি বাংলাদেশে রফতানি হয়েছে, যার মূল্য ৮,৫০০ কোটি টাকা।২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে ১৪ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদন হয় যার অধিকাংশই বাংলাদেশে রফতানি হয়েছিল। বর্তমানে ব্যবসার লোকসান নিয়ে সরব হয়েছে মৎস্যজীবী সংগঠন। স্লোগান উঠেছে, ‘সমুদ্রে মাছ নেই। শুঁটকি মাছের দাম নেই। খটি মৎস্যজীবীদের পেটে ভাত নেই।’

কাঁথি -১ ব্লকের বগুড়ান জলপাই দু' নম্বর মৎস্য খটির মৎস্যজীবী সঞ্জয় প্রামাণিক বলেন, ‘‘খেজুরি থেকে দু’জন এসে কাঁচা মাছ কিনে শুকিয়ে বিক্রি করতেন। দু’ মাস ধরে সেসব বিক্রি করতে পারেননি। এ দিকে খটি এলাকার ভুষি মাল ও অন্য দোকানে ধার বেড়ে গিয়েছিল। তাই শুঁটকি ফেলে বাড়ি পালিয়ে গিয়েছেন।’’

জুনপুটে শয়ে-শয়ে গুদামে জমা রয়েছে বিপুল পরিমাণ শুঁটকি। মন্দারমণি এলাকার এক ব্যবসায়ী শেখ সামসের বলেন,"উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি, ধূপগুড়ি আর অসমে কিছু রফতানি হচ্ছে। মূলত ভোলা, এন্টি-র মত সামুদ্রিক মাছের শুঁটকি যাচ্ছে।’’ পূর্ব মেদিনীপুর মৎস্যজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস শ্যামল বলেন, ‘‘রাজ্য মৎস্য দফতরের হেলদোল নেই। গঘুয়া শুঁটকি ১০০-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হত। এখন সেটা ৬০-৭০ টাকা হয়েছে। পোলট্রির খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত শুঁটকি ৩০-৩২ টাকা থেকে কমে ১৫ টাকা কেজিতে পৌঁছেছে।’’

এ বিষয়ে সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুমন সাহার প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে রাজ্যের মৎস্য প্রতিমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘বারবার সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ। তাই শুঁটকি বিক্রি কমেছে। তবে রাজ্য সরকারের তরফে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথাবার্তা চালানো হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Contai Bangladesh Unrest

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}