হাওড়া–খড়্গপুর শাখার ব্যস্ত মেচেদা স্টেশন, কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড ও কাছাকাছি থাকা দু’টি জাতীয় সড়ককে কেন্দ্র কর দ্রুত নগরায়ণ হয়েছে মেচেদা এলাকায়। শহুরে এলাকার মত বহুতল বাসভবন, ব্যবসার বহর বাড়ছে দ্রুত গতিতে। কিন্তু মেচেদা এলাকার প্রায় ৪০ হাজারের বেশি বাসিন্দার জন্য সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল একেবারে সঙ্গীন। বাসিন্দাদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যও ছুটতে হয় প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে রামচন্দ্রপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ভরসা বেসরকারি নার্সিংহোমই।
প্রশাসনিক ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন মেচেদা। স্টেশনের পাশেই রয়েছে মেচেদা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড। কাছে হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক ও হাওড়া– মুম্বইগামী ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক, হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক এবং কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। রেল ও সড়কপথে এমন যোগাযোগের কেন্দ্র বিন্দু হিসেবে মেচেদা এলাকায় দ্রুত জনবসতি গড়ে উঠেছে। স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড কেন্দ্র গড়ে উঠেছে একাধিক বাজার। মেচেদা বাজার ও সংলগ্ন এলাকার ১০ টি’র বেশি গ্রাম মিলিয়ে এলাকার বাসিন্দার সংখ্যা এখন প্রায় ৪০ হাজার ছুঁয়েছে। কিন্তু জেলার এমন এক গুরুত্বপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবার ন্যুনতম ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ।
সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা বলতে মেচেদা বাজারের সংলগ্ন হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে রয়েছে শান্তিপুর-১ পঞ্চায়েতের সদর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু সেখানে মা- শিশুর জন্য প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা ও একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ছাড়া আর কোনও ব্যবস্থা নেই। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ। এলাকার বাসিন্দাদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যও দৌড়তে হয় মেচেদা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে রামচন্দ্রপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। অথবা যেতে হয় ৬ কিলোমিটার দূরে জানুবসান ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটলে ভরসা নার্সিংহোম অথবা ১৮ কিলোমিটার দূরের তমলুক জেলা হাসপাতাল।
এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা শ্যামসুন্দর পাখিরা বলেন, ‘‘মেচেদা বাজার এলাকায় দ্রুত জনবসতি বাড়ছে। কিন্তু এখানে বাসিন্দাদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতাল চালু করা হয়নি। ফলে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবাটুকুও পাওয়া যাচ্ছে না।’’ কয়েক বছর আগে মেচেদা এলাকায় বাড়ি করেছেন সমরেশ বেরা। তাঁর কথায়, ‘‘রেল, সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল। ফলে অনেকেই এখানে থাকছেন। কিন্তু মেচেদা এলাকায় এখনও সরকারি প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা নেই। রাতবিরেতে অসুস্থ হলে খুব সমস্যায় পড়তে হয়।’’
বাসিন্দাদের চিকিৎসার সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বামদেব গুছাইত। তাঁর কথায়, ‘‘মেচেদা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সরকারি পূর্ত দফতরের জায়গায় একটি আধুনিক হাসপাতাল গড়ার জন্য উদ্যোগী হয়েছি। রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর কাছে আমরা আর্জিও জানিয়েছি। নিশ্চয়ই একটা কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy