Advertisement
E-Paper

নিকাশির হাল ফিরবে কবে, জানতে চান এগরার ঘরণীরা

কেউ গৃহবধূ, কেউ বা কর্মরতা। তাঁদের নিয়ে আলোচনা অনেক, অনেক প্রতিশ্রুতি, বেশ কিছু ওয়ার্ড সংরক্ষণও করে দেওয়া হয়েছে কিন্তু আলাদা করে তাঁদের সমস্যাগুলো কি ভাবা হয়। আসলে সমস্যা গুলো আলাদা কিছউ নয় হয়তো। তবে শুধু মাত্র মহিলা বলেই ঝক্কি সামলাতে হয় তাদেরই বেশি।

কৌশিক মিশ্র

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৪৯

কেউ গৃহবধূ, কেউ বা কর্মরতা। তাঁদের নিয়ে আলোচনা অনেক, অনেক প্রতিশ্রুতি, বেশ কিছু ওয়ার্ড সংরক্ষণও করে দেওয়া হয়েছে কিন্তু আলাদা করে তাঁদের সমস্যাগুলো কি ভাবা হয়। আসলে সমস্যা গুলো আলাদা কিছউ নয় হয়তো। তবে শুধু মাত্র মহিলা বলেই ঝক্কি সামলাতে হয় তাদেরই বেশি।

এই যেমন সন্ধ্যা নামলেই বাড়ির সামনের রাস্তাটি বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। ছিনতাইয়ের ঘটনা তো ঘটছে আকছাড়। এমনকী রাস্তার আলোও জ্বলে না নিয়মিত। অভিযোগ করছিলেন এগরা পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আরতি মাইতি। গৃহবধূ আরতিদেবী জানান রাজনীতি নিয়ে তিনি রীতিমতো বিরক্ত। সাফ কথা, ‘‘নেতারা এলাকার উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেন না বরং রাজনীতির কচকচি নিয়ে আমাদের কান ঝালাপালা।’’ কথা বলার ফাঁকেই তিনি নিয়ে গেলেন তাঁর রান্না ঘরের পিছনে। বাড়ির পাশের মাটির ড্রেনটির সামনে নিয়ে গিয়ে দেখিয়ে দিলেন কেমন ভাবে জমা হয়েছে আবর্জনার স্তূপ। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে তাঁর রান্নাঘরেও। বিরক্তির ঝাঁঝ নিয়েই তিনি বলেন, ‘‘সবচেয়ে বড় সমস্যা হল নিকাশি। সারাদিন ধরে দুর্গন্ধে ভুগতে হয় গৃহিণীদের। কাকে জানাবো?’’ বারবার পুরসভায় জানিয়ে কোন ফল হয় না। শেষেমেশ নিজেরাই পয়সা খরচ করে লোক দিয়ে পরিষ্কার করিয়ে নেন। কিন্তু তাতে সাময়িক সুরাহা হয়তো হয়। বর্ষাকালে তা ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। রাস্তা ভেসে যায় নোংরা জলে। দিনের পর দিন সে জল দাঁড়িয়ে থাকে। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘ন্যূনতম প্রাথমিক পরিষেবাগুলিই এখনও অপূর্ণ। এই পুরসভার কাছে আধুনিক পরিষেবা চেয়ে লাভ কি?’’ তাঁর দাবি নতুন পুরবোর্ড ক্ষমতায় এসে সাফাইকর্মীদের নিয়মিত করুক রাস্তায় মহিলাদের নিরাপত্তা ছাড়াও যানজটও অন্যতম সমস্যা বলে জানালেন গৃহবধূরাই। বাচ্চাদের স্কুলের সময়ে নাস্তানাবুদ হতে হয় তাদের। অভিযোগ রাস্তার উপরই বসে দোকানপাট।

এ ছাড়া গৃহিণী হিসেবে পুর-এলাকায় রান্নার গ্যাসের সমস্যাটি নিয়েও বেশ নাজেহাল দশা বলে জানালেন গৃহিণীরা।

এগরা পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা গৃহবধূ বিথিকা জানার দাবি রাস্তাঘাট মেরামতের অভাবে চলাফেরা করাই দায়। তাঁর কথায়, ‘‘এগরা পুরসভায় আমরা মহিলা ভোটার হয়ে কখনো মহিলাদের সম্পর্কে কোন উদ্যোগ দেখিনি।’’ নিরাপত্তার অভাব তো রয়েছেই। তা ছাড়া শব্দদূষণও একটি মারাত্মক সমস্যা। তিনি আরও জানান এই এলাকায় শিশু বা মহিলাদের বিনোদনের কোনও ব্যবস্থাই নেই। কোনও পার্ক নেই, নেই কোনও সিনেমা হল বা সাংস্কৃতিক মঞ্চ।

১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা চন্দা বিবি জানান পানীয় জল থেকে বিদ্যুৎ সব কিছুই অভাব। কিন্তু সবচেয়ে সমস্যা চিকিৎসার। তিনি বলেন, ‘‘রাতে বাড়িতে কেউ অসুস্থ হলে নিয়ে যেতে হবে সেই বাজারের অন্য প্রান্তে নার্সিংহোমে। এর থেকে বড় সমস্যা আর কিছু হয় না।

সুতপা গিরি মণ্ডল ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এ বার ভোটার তালিকায় তাঁর নাম উঠেছে। কিন্তু তিন বছরের বেশি সময় এখানে রয়েছে বধূ হিসাবে। তিনি জানান ‘‘ভোটে প্রচারের বহর বেশি। চারিদিক রাজনৈতিক পতাকা ও ফেস্টুনে ছেয়ে গিয়েছে। কিন্তু পিছিয়ে পড়া এলাকার জন্য কিছু করার লোক কোথায়?’’ তাঁর অভিজ্ঞতায় গত তিন বছরে তিনি বিদ্যুৎ পাননি, এখনও মাটির রাস্তা, নেই পানীয় জলের সুষ্ঠু পরিষেবাও।

তাঁর সঙ্গে কথা বলতে গিয়েই উঠে এল একটা অন্য সত্য। বললেন বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, অথচ দিব্যি তো ঘুরছে পাখা। প্রশ্নের উত্তরে তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি, ‘‘এলাকার বাসিন্দারা বিপজ্জনকভাবে বেআইনি বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন। এছাড়া উপায় যে নেই।’’

koushik mishra Municipal election Trinamool Tmc Congress Cpm Bjp Egra Drainage system
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy