উদ্ধারের পরে। নয়াগ্রামে। নিজস্ব চিত্র
দলমার পালের একটি স্ত্রী হাতির মৃত্যু হল ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রামে। শনিবার সকালে নয়াগ্রাম ব্লকের বড়খাঁকড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁথি গ্রামের ধান খেতের ধারে মৃত হাতিটিকে পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী।
হাতিটির মুখের কাছে ছিল জমাট রক্ত। শুঁড়ের কয়েক জায়গায় আঘাতের দাগ ছিল। ফলে, জল্পনা শুরু হয়েছে। চাষের মরসুমে বার বার হাতির হামলার চাষিরা দিশাহারা। তাই হাতিটির মৃত্যুর কারণ নিয়ে নানা ধরনের সম্ভাবনার কথা উঠে আসছে স্থানীয়মহলে। যদিও বন দফতরের দাবি, দলমার পালের বছর পঁচিশের স্ত্রী হাতিটি অসুস্থ ছিল। শরীরিক কোনও সমস্যার জন্য হাতিটি রক্তবমি করেছে। শারীরিক যন্ত্রণার জন্য সম্ভবত হাতিটি আশেপাশের গাছে শুঁড় দিয়ে আঘাত করার কারণে শুঁড়ের কয়েক জায়গা কটে-ছড়ে গিয়েছে।
খড়্গপুরের এডিএফও (সহকারি বনাধিকারিক) অভিজিৎ কর বলেন, “প্রাণী চিকিত্সকদের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের রিপোর্ট অনুযায়ী হাতিটি অসুস্থ ছিল। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব।”
এ দিন হাতির দেহটি পে লোডার দিয়ে ট্র্যাক্টরে তুলে পাঁচকাহানিয়া বিট অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ময়না তদন্তের পরে দেহটি দাহ করার কাজ শুরু হয়। হাতিটির ভিসেরা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। বন দফতর জানিয়েছে, হাতির দেহটি ভস্মীভূত হতে ২৪ থেকে ৩০ ঘণ্টা সময় লাগবে।
ঝাড়গ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের সহ-অধিকর্তা চঞ্চল দত্ত বলেন, “ময়নাতদন্তের পরে প্রাথমিক অনুমান, অত্যধিক দানা জাতীয় খাবার (কাঁচা ধান ও তৈলবীজ) খেয়ে হাতিটির পেট ফাঁপা ও পেটের তীব্র যন্ত্রণার উপসর্গ হয়েছিল। ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়ার পরে চূড়ান্ত কারণ বলা যাবে।”
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দলমার পালের প্রায় ৪০টি হাতি নয়াগ্রাম ও চাঁদাবিলা রেঞ্জের জঙ্গলে রয়েছে। মৃত হাতিটি দলমার দলের বলে জানিয়েছে বন দফতর। সন্ধে হলেই হাতিরা ছোট দলে ভাগ হয়ে লোকালয়ে ঢুকে উপদ্রব চালাচ্ছে। ধান ও আখ চাষের মরসুমে হাতিদের ক্রমাগত হানায় অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। নয়াগ্রামে সুবর্ণরেখা নদী লাগোয়া জনপদে ধান, আখ ও নানা ধরনের আনাজ চাষ হয়। এলাকার সবচেয়ে অর্থকরী ফসল হল আখ। কিন্তু বছরে একাধিক বার হাতির পাল নয়াগ্রাম ব্লক এলাকায় যাতায়াত করার ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy