Advertisement
E-Paper

দখলদার উচ্ছেদ শুরু তমলুকে

উচ্ছেদ অভিযান শুরু হওয়ার আগেই অবশ্য বৃহস্পতিবার রাত থেকে সড়কের পাশে থাকা ঝুপড়ি, দোকান সরিয়ে নিতে থাকে দখলদাররা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৭ ০৯:২০
ধুলিসাৎ: ভেঙে ফেলা হচ্ছে বেআইনি নির্মাণ। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

ধুলিসাৎ: ভেঙে ফেলা হচ্ছে বেআইনি নির্মাণ। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

দখলদার উচ্ছেদ করা হবে বলে আগেই জানিয়েছিল প্রশাসন। শুক্রবার সকাল থেকে হলদিয়া-মেচেদা সড়কে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হতেই শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের অফিস থেকে সরকারি চিকিৎসকের নির্মাণ বাদ গেল না কিছুই।

তমলুক মহকুমা প্রশাসনের কর্তাদের উপস্থিতিতে এ দিন উচ্ছেদ অভিযান চলে। ভেঙে দেওয়া হয় হলদিয়া-মেচেদা সড়কের একাংশ দখল করে থাকা তমলুক জেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বাড়ির পাঁচিল। যদিও ওই চিকিৎসকের বাড়ির একটি অংশও সরকারি জায়গায় রয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। তমলুকের মহকুমাশাসক শুভ্রজ্যোতি ঘোষ বলেন, ‘‘নিয়মমতো ওই চিকিৎসককে সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করতে নোটিস দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দখলমুক্ত না করলে প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা হবে।’’

উচ্ছেদ অভিযান শুরু হওয়ার আগেই অবশ্য বৃহস্পতিবার রাত থেকে সড়কের পাশে থাকা ঝুপড়ি, দোকান সরিয়ে নিতে থাকে দখলদাররা। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণ করে চার লেনের পাশাপাশি সৌন্দর্যায়নে উদ্যোগী হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। সড়কের দু’ধারে সরকারি জায়গায় গড়ে ওঠা দোকান-সহ বেআইনি নির্মাণ সরাতে প্রশাসনিক পদক্ষেপ শুরু হয়েছিল মাস চারেক আগেই। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়ায় নির্মাণ সরিয়ে নেওয়ার সম্মতি মিলেছিল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। এরই মাঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগে দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকে জানিয়ে দেন সরকারি জায়গা দখল করে যত্রতত্র দোকান বসানো চলবে না। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন-পুলিশ পদক্ষেপ করবে। এর পরে তমলুকে দখলদার উচ্ছেদের দাবি আরও জোরালো হয়।

এদিন প্রথম পর্যায়ে তমলুক শহরের নিমতলা থেকে জেলাশাসকের অফিস পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার অংশে সড়কের দুধারে সরকারি জায়গায় থাকা ৬৫টি দোকানঘর, তিনটি ক্লাবঘর সহ তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের দুটি অফিস এমনকি জেলাশাসকের অফিসের কাছে নির্মীয়মাণ তৃণমূলের একটি অফিসও ভেঙে দেওয়া হয়। ভেঙে দেওয়া হয় জেলাশাসকের বাংলোর সামনে সড়কে লোহার তারের বেড়া। সকাল ৯ টা নাগাদ উচ্ছেদ অভিযান শুরুর আগে নিমতলা মোড়ে হাজির হন তমলুকের মহকুমা শাসক শুভ্রজ্যোতি ঘোষ, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক তন্ময় সরকার, সি আই বিশ্বজিৎ হালদার, তমলুকের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন-সহ জেলা পূর্ত দফতর ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকরা। গোলমালের আশঙ্কায় হাজির ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী।

উচ্ছেদ অভিযান চলার সময়েই স্থানীয় লোকজন সরকারি জায়গা দখল করে থাকা ওই চিকিৎসকের বাড়ি ভাঙার দাবি তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, ওই চিকিৎসকও সরকারি জায়গা দখল করে নির্মাণ করেছেন। এ নিয়ে বিক্ষোভও শুরু করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত দখল উচ্ছেদে কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না বলে প্রশাসনের আশ্বাস পাওয়ায় বিক্ষোভ থামে। যাঁর বাড়ি নিয়ে বিতর্ক, অলক শী নামে সেই চিকিৎসক বলেন, ‘‘আমার বাড়ির সামনে সরকারি জায়গায় প্রাচীরের অংশ প্রশাসন সরিয়ে দিয়েছে। তবে বাড়ির মূল অংশ সরকারি জায়গায় নেই।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, তমলুক শহরের নিমতলা থেকে মানিকতলা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের দু’ধারে ৭০০ দোকান সরানো হবে। জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগে স্বাভাবিক ভাবে‌ই খুশি স্থানীয় মানুষ। কৌশিক ধাড়া, প্রহ্লাদ ভট্টাচার্য প্রমুখ বাসিন্দার কতায়, ‘‘সড়ক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২০০২ সালেও দখলদার উচ্ছেদ হয়েছিল। কিন্তু সেবার জেলা প্রশাসন সড়ক সম্প্রসারণ করেনি। এ বার যেন তার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়। আমরা চাই উচ্ছদের পরেই দ্রুত সড়ক সম্প্রসারণ ও শহরের সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হোক।’’

occupant Tamluk Eviction
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy