Advertisement
E-Paper

খেতে জল, ধান পচে ক্ষতির শঙ্কা

প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, গত দু’দিনে মেদিনীপুরে ও তার আশেপাশের এলাকায় প্রায় ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সপ্তাহ কয়েক আগেও নিম্নচাপের বৃষ্টিতে চাষের ক্ষতি হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:০৯
তছনছ: ক্ষতিগ্রস্ত ধানখেত। সদর ব্লকের কনকাবতীতে। নিজস্ব চিত্র

তছনছ: ক্ষতিগ্রস্ত ধানখেত। সদর ব্লকের কনকাবতীতে। নিজস্ব চিত্র

নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি চলতে থাকায় মাথায় হাত পশ্চিম মেদিনীপুরের চাষিদের।

রবিবারও জেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে। এটা ধান কাটার মরসুম। মাঝেমধ্যে বৃষ্টি চলতে থাকায় বহু জমিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। অনেক এলাকায় বৃষ্টির দাপটে জমির ধান নুইয়ে পড়েছে। আবার কেটে রাখা ধানেও পচন ধরতে শুরু করেছে। নিম্নচাপের জেরে চাষে সমস্যার কথা মানছে জেলা কৃষি দফতরও। জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, “কিছু সমস্যা হচ্ছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে।” কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে? জেলার কৃষি আধিকারিক প্রভাত বসু বলেন, “কিছু ক্ষয়ক্ষতি হবেই। ব্লক থেকে ক্ষতক্ষতির রিপোর্ট আসছে। এখনও চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি হয়নি।”

প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, গত দু’দিনে মেদিনীপুরে ও তার আশেপাশের এলাকায় প্রায় ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সপ্তাহ কয়েক আগেও নিম্নচাপের বৃষ্টিতে চাষের ক্ষতি হয়েছিল। সে বার তিনদিনে প্রায় ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। জেলার এক কৃষিকর্তা মানছেন, “এ বার সত্যিই চাষিদের অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।”

এ বার বৃষ্টি যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। সেই পুজোর আগে থেকে বৃষ্টি চলছে। এর আগে বন্যার সময়ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় বহু বীজতলা নষ্ট হয়েছিল। যে সময় বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন চাষিরা সেই সময় জমিতে বন্যার জল জমে যায়। জমিতে বেশি দিন জল থাকার ফলে সমস্যা হয়। জল নেমে যাওয়ার পরে নতুন করে বীজতলা তৈরি করে চাষ শুরু করা সহজ ছিল না। তাও অনেকে নতুন করে বীজতলা তৈরি করেই চাষ শুরু করেন। ক্ষতির আশঙ্কা বেশি তাঁদেরই। কারণ, তাঁরা দেরিতে চাষ শুরু করেছিলেন। বৃষ্টি না কমলে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসা সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছে কৃষি দফতর। জেলার এক কৃষিকর্তা বলেন, “ব্লক থেকে ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক রিপোর্ট আসা শুরু হয়েছে। এখনও পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসেনি। জল একেবারে না নামলে পূর্ণাঙ্গ হিসেব আসা অসম্ভব।”

মাস খানেক ধরে ধান কাটা চলছে। এখনও সব জমির ধান কাটা হয়নি। এটা ধান কাটারই মরসুম। বর্ষার সময় যে ধানের রোপণ করা হয়েছিল, কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সেই ধান কেটে বাড়ি তোলেন চাষিরা। আচমকা নিম্নচাপের হানায় চাষিদের কপালে ভাঁজ। মেদিনীপুর সদর, শালবনি, কেশপুর, গড়বেতা-সহ বিভিন্ন এলাকার বহু জমিতে জল জমে গিয়েছে। বৃষ্টির ফলে জমিতে পড়ে থাকা ধান কালো রঙের হতে শুরু করেছে। ধানের সঙ্গে খড় বিক্রি করেও কিছু লাভ করেন চাষিরা। এই অবস্থায় খড়ও মিলবে না বলে আশঙ্কা। কিছু এলাকায় ধান কাটার কাজও বন্ধ রয়েছে। জেলার এক কৃষিকর্তা মানছেন, “বেশ কিছু এলাকা থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর এসেছে। কিছু ধান জমিতে জল দাঁড়িয়েছে। কিছু জমির ধান নুইয়ে পড়েছে। কেটে রাখা ধানেও পচতে শুরু করেছে।”

এই অবস্থায় বৃষ্টির পরে কতটা ধান ঘরে তোলা যায় তা নিয়ে সন্দীহান বিভিন্ন এলাকার চাষিরা। জেলার ওই কৃষিকর্তার কথায়, “অনেকেই ধান কেটেছেন। তবে সব ধানই যে কাটা হয়ে গিয়েছে তা নয়। আশঙ্কা সেখানেই। এই বৃষ্টিতে জমির কিছু ধান নষ্ট হবেই।”

premature rain farmers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy