E-Paper

ডুবেছে বিঘার পর বিঘা আনাজ, দাম চড়ার আশঙ্কা

জলাধারগুলি থেকে ক্রমাগত জল ছাড়ার ফলে প্লাবিত হয়েছে কংসাবতী নদী সংলগ্ন দুই তীরবর্তী জমিগুলি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫ ০৮:৩০
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বীজতলা নষ্ট হয়ে এমনিতেই পিছিয়ে গিয়েছে আমন ধান চাষ। এখন ধাক্কা লাগার আশঙ্কা আনাজেও।

পড়শি জেলার ঘাটাল, দাসপুর চন্দ্রকোনা এলাকাগুলি আনাজ চাষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বার প্লাবনের ফলে ওই এলাকার আনাজ চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়ে সেখানে ব্যাপক হারে দাম বেড়েছিল আনাজর। পূর্ব মেদিনীপুরের কংসাবতী নদীর জলস্তর বৃদ্ধি হওয়ায় পাঁশকুড়া ব্লকের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের আনাজ চাষের জমিও সদ্য গিয়েছে জলের তলায়। ফলে কৃষকরা ক্ষতির যেমন সম্মুখীন হয়েছেন, ঠিক তেমনই উৎপাদন নষ্ট হওয়ায় ঘাটাল, দাসপুরের মতো এখানেও আনাজর দাম বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনিতেই এ বার বর্ষায় আনাজের দাম চড়া। পাঁশকুড়ায় মঙ্গলবারও লঙ্কা ২০০ টাকা কিলোগ্রাম, বেগুন ৯০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পটল ও শশার দর ৬০ টাকা কিলো।

এদিকে, জলাধারগুলি থেকে ক্রমাগত জল ছাড়ার ফলে প্লাবিত হয়েছে কংসাবতী নদী সংলগ্ন দুই তীরবর্তী জমিগুলি। মূলত নদী সংলগ্ন মাটি উর্বর হওয়ায় প্রতি বছরই ওই সমস্ত জমিতে আনাজ চাষ করেন পাঁশকুড়া ব্লকের কৃষকেরা। এ বারেও বর্ষার আগেই আনাজ লাগিয়েছিলেন মাইশোরা,গোবিন্দনগর, জঁদড়া, পশ্চিম কোল্লা, ভবানীপুর ও তিলন্দপুর-সহ একাধিক এলাকার কৃষকেরা। কিন্তু ওই সমস্ত এলাকার কৃষি জমিগুলি ইতিমধ্যেই জলের তলায় চলে গিয়েছে। ফলন্ত গাছের গোড়ায় টানা কয়েকদিন জল জমে থাকার কারণে ইতিমধ্যেই অধিকাংশ গাছের গোড়া পচে মরে গিয়েছে। অল্প দিনেই কৃষকদের নষ্ট হয়েছে ঝিঙে, চিচিঙ্গা, উচ্ছে, পটল-সহ একাধিক আনাজর গাছ। তবে জল সহ্যকারী ঢেঁড়স বেশ কিছু জমিতে এখনও পর্যন্ত বেঁচে রয়েছে। আর সেই সকল গাছগুলিকেই কৃষকরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। লাগাতার ওষুধ প্রয়োগ করা করা হচ্ছে।

এত কিছুর পরেও ফলন কমছে। জঁদড়া এলাকার কৃষক লক্ষীকান্ত সাঁতরা বলেন, ‘‘পশ্চিম মেদিনীপুরে বন্যা হওয়ার কারণে ইতিমধ্যেই আনাজর দাম বেড়েছে। পাঁশকুড়ার আনাজ চাষের জমিগুলি জেগে থাকার কারণে এতদিন তা-ও ফসলের দাম নিয়ন্ত্রণে ছিল। এ বার এই জমিও জলের তলায় চলে যাওয়ার কারণে আনাজর আকাল দেখা দিতে পারে। বাড়তে পারে ব্যাপক হারে দাম।’’ ভবানীপুর এলাকার কৃষক চণ্ডী প্রধান বলেন, ‘‘গাছকে সুস্থ রাখার জন্য প্রচুর পরিমাণের ঔষধ ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হচ্ছে। ফলে কৃষকের খরচ বেড়েছে আগের তুলনায় অনেকটাই। ফলন কিন্তু কমে গিয়েছে।’’

বর্তমানের দামের তুলনায় যদি আনাজর দাম ফের বাড়ে তাহলে আতান্তরে পড়বেন মধ্যবিত্ত ক্রেতারাও। তা আশঙ্কা করেই বিশ্বজিৎ মাইতি নামের এক ক্রেতা বলছেন, ‘‘এমনিতেই আনাজর দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমাদের অবস্থা নাজেহাল। নতুন করে আনাজর দাম বৃদ্ধি হলে কী করে সংসার চালানো যাবে, জানি না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Panskura

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy