তখনও নেভেনি আগুন। নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা দমকল কর্মীদের। —নিজস্ব চিত্র।
ফের হাসপাতালে আগুন। এ বার এগরার নতুন সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। হতাহতের ঘটনা না-ঘটলেও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসা রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। হাসপাতালের সম্পত্তিরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে তার পরিমাণ কত, জানাতে পারেননি কর্তৃপক্ষ।
সোমবার সকাল সাড়ে ১১ টা নাগাদ এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের নির্মীয়মাণ ভবনের ছ’তলার একটি ঘরে আগুন লাগে। সে সময় তিন তলায় চক্ষু বিভাগের বহির্বিভাগের একশোর বেশি রোগী ছিলেন। ছ’তলায় আগুন ছড়িয়ে পড়ায় রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আট তলায় কর্মরত নির্মাণ শ্রমিকেরাও নিরাপদে নীচে নেমে আসতে সক্ষম হন বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
প্রথমে এগরা ও পরে কাঁথি দমকল কেন্দ্র থেকে মোট চারটি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। প্রায় দু’ঘণ্টা পর আগুন আয়ত্তে আসে। ততক্ষণে ছ’তলার একাধিক ঘরের আসবাব ভস্মীভূত হয়েছে বলে অভিযোগ। দমকলের প্রাথমিক অনুমান শট সার্কিট থেকেই এই বিপত্তি। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘আগুন লাগার কারণ জানতে দমকল দফতরকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছি। ওই ভবনের দু’টি তলায় বহির্বিভাগ চলে। তবে হাসপাতালের যে অংশে আগুন লেগেছিল সেটি এখনও স্বাস্থ্য দফতরের হাতে আসেনি।’’ তাঁর দাবি, আগুন লাগার ফলে যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নির্মাণকারীর সংস্থার উপর বর্তাবে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পগুলির মধ্যে থাকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা সম্পর্কে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কি?
স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমা শহর এগরায় মহকুমা হাসপাতালের পাশেই আটতলা ভবন বিশিষ্ট ৩০০ শয্যার নতুন সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল গড়ার কাজ চলছে। সে কাজ শেষ না-হতেই চলতি বছর বিধানসভা ভোটের আগে তড়িঘড়ি করে প্রথম তিনটি তলায় চালু করে দেওয়া হয় সুপার স্পেশ্যালিটির বহির্বিভাগ। সেখানে এখন মেডিসিন, চক্ষু, দন্ত ও আয়ুর্বেদিক বিভাগের চিকিৎসা চলে।
প্রস্তাবিত আট তলা হাসপাতালের বাকি অংশে নির্মাণ কাজ চলছে। হাসপাতালের বিভিন্ন ঘরে শয্যা-সহ অন্যান্য আসবাবপত্র সাজানোর কাজ চলছে। এ দিন সকালে যে ঘরে আগুন লাগে সেখানেও রাখা ছিল গদি-তোষক। ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে কালো ধোঁয়া। হাসপাতালের চত্বরে থাকা খাবার দোকানের বিক্রেতারা বিষয়টি নজর করেন। তাঁরাই খবর দেন কর্তৃপক্ষকে। ছিন্ন করে দেওয়া হয় বিদ্যুত সংযোগ। অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় আতঙ্ক ছড়ায় তিন তলায় চলা চক্ষু বিভাগের রোগীদের মধ্যে। চক্ষু বিভাগের চিকিৎসক স্বপন মণ্ডল মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রায় একশো রোগী ছিলেন। আচমকা বিদ্যুৎ চলে গেলে তাঁরা আতঙ্কে চিৎকার শুরু করেন। পরে নিরাপদে বেরিয়ে এসেছি।’’ ভারপ্রাপ্ত সুপার হিমাংশু মাইতি বলেন, ‘‘তখন মহকুমা হাসপাতালের পুরোন ভবনে ছিলাম। আগুন নজরে আসতেই এগরা দমকল কেন্দ্রে খবর দেওয়া হয়। বহির্বিভাগের রোগীদেরও নিরাপদে বের করে আনার ব্যবস্থা করা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy