Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভোট ময়দানে যুযুধান প্রাক্তন সতীর্থ

দু’জনেই বিদায়ী কাউন্সিলর। গত বছরের পুরসভা নির্বাচনে তাঁরা দু’জনেই সিপিএমের প্রতীকেই জয়ী হয়েছিলেন। এ বার সেই বিদায়ী কাউন্সিলর অনিতবরণ মণ্ডল ও ভেঙ্কট রামনা লড়াই করছেন খড়্গপুর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। গত বছরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আসন ছেড়ে অনিতবাবু এ বার ১৩ নম্বরের সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু গত বার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী ভেঙ্কট রামনা এ বার দলবদল করে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন।

প্রচারে ভেঙ্কট রামনা।

প্রচারে ভেঙ্কট রামনা।

দেবমাল্য বাগচি
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৪৩
Share: Save:

দু’জনেই বিদায়ী কাউন্সিলর। গত বছরের পুরসভা নির্বাচনে তাঁরা দু’জনেই সিপিএমের প্রতীকেই জয়ী হয়েছিলেন। এ বার সেই বিদায়ী কাউন্সিলর অনিতবরণ মণ্ডল ও ভেঙ্কট রামনা লড়াই করছেন খড়্গপুর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। গত বছরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আসন ছেড়ে অনিতবাবু এ বার ১৩ নম্বরের সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু গত বার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী ভেঙ্কট রামনা এ বার দলবদল করে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন। তাই পুরভোটের লড়াই ব্যক্তিগত না কি রাজনৈতিক, সেই পরীক্ষাতেই সরগরম রেলের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড। কংগ্রেসের ভেঙ্কট রামনা লড়াই করছেন এলাকায় উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে। আর সিপিএমের অনিতবরণ মণ্ডলের লড়াইয়ে উঠে আসছে দলছুট রামনার মানুষকে বঞ্চনার কথা।

খড়্গপুর পুরসভার এলাকা পুনর্বিন্যাসে ২০১০ সালেই রেলের এলাকা পুরসভার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সেই রেলের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডেই গত পুর-নির্বাচনে প্রথমবার জয়ী হন বাম প্রার্থী ভেঙ্কট রামনা। আর পাশের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে ১৯৮০ সাল থেকে টানা ছ’বার জয়ী হয়ে ৩৫ বছর ক্ষমতা ধরে রেখেছেন সিপিএমের অনিতবরণ মণ্ডল। ২০১০ সালের পুনর্বিন্যাসের আগে ওয়ার্ডটি ২১ নম্বর বলে পরিচিত ছিল। কিন্তু এ বার সংরক্ষণের গেরোয় অনিতবাবু আর ১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে লড়াই করতে পারেননি। তাই বামেরা ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী করেছেন খড়্গপুর শহর জোনাল সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডলকে।

বামদের দখলে থাকা ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে তাই নিজেদের জয়ের ধারা টিঁকিয়ে রাখাই প্রধান চ্যালেঞ্জ সিপিএমের। আর সেই গুরু দায়িত্ব পড়েছে জোনাল সম্পাদকের কাঁধে। অনিতবরণ মণ্ডলের সাফ কথা, “যে কোনও লড়াই-ই কঠিন। তবে মানুষ আমাদের পক্ষে গতবার যেমন ছিলেন তেমন থাকবেন।’’ ভেঙ্কট রামনা প্রসঙ্গে তিনি তিনি বলেন, “এই ওয়ার্ড থেকে আমাদের প্রার্থী জয়ী হলেও তিনি মানুষের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করে সিপিএম ছেড়েছেন। কিন্তু কাউন্সিলর পদ ছাড়েননি। আর এলাকা অনুন্নয়নের পথে গিয়েছে। তাই এ বার উন্নয়নের স্বার্থেই মানুষ আবারও সিপিএমকে জয়ী করবে।”

অনিতবরণ মণ্ডলের প্রচার।

এ দিকে গত বছরের বাম প্রার্থী ভেঙ্কট রামনা কংগ্রেসের হাত ধরে লড়াইয়ে নেমে দাবি করছেন, রেল এলাকা হলেও উন্নয়নের স্বার্থে প্রথম থেকেই লড়াই করেছেন তিনি। কিন্তু ২০১০ সালে তৃণমূলের বোর্ড গঠন করে। আর ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের ভরাডুবিতে পরে নিজেদের গুটিয়ে নেন নেতারা। ফলে পুরসভার তৃণমূলের বিরুদ্ধে দলের নেতাদের পাশে না পেয়ে একার পক্ষে লড়াই কঠিন হয়ে ওঠাতেই তিনি কংগ্রেসের হাত ধরেছেন। কিন্তু কংগ্রেসকে পাশে পেয়ে তিনি এলাকার পার্ক সংস্কার, জলের সমস্যা দূর করার মতো নানা জনমুখী কাজ করতে সক্ষম হয়েছেন বলে প্রচারে জানাচ্ছেন রামনা।

সিপিএমের অভিযোগ প্রসঙ্গে রামনা বলেন, “সিপিএমের নেতারা যদি লড়াইয়ের শক্তি হারিয়ে ফেলে তবে উন্নয়ন হবে কীভাবে। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমি লড়াইয়ের শক্তি না হারিয়ে উন্নয়নের কাজ করে গিয়েছি। এলাকার মানুষ ব্যক্তি রামনাকে দেখে ভোট দিয়েছিলেন। এ বারেও তাই দেবেন। বরং এ বার কংগ্রেসকে দেখেও ভোট দেবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE