বিজেপির বুথ সভাপতির মৃতদেহ উদ্ধারের ছ’দিনের মাথায় খুনের ঘটনার কিনারা করল পুলিশ।
গত ১৫অক্টোবর দাঁতন থানার মহেশপুরে সন্তু জানা (২৬) নামে এক যুবকের বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়। খড়্গপুর-১ ব্লকের সনকোরাপাড়ার বাসিন্দা সন্তু বিজেপির শিরষি বুথের সভাপতি ছিলেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, খুন করা হয়েছিল সন্তুকে। ঘটনায় খড়্গপুর গ্রামীণের রঞ্জন দুয়া, সন্তু ভুঁইয়া ওরফে জগা, পিন্টু করণ ও সমীরণ দে ওরফে চন্দনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রবিবার ও সোমবার দু’দফায় ধৃতদের দাঁতন এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের আগামী ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুলিশ জানিয়েছে, বাজেয়াপ্ত হয়েছে খুনে ব্যবহৃত বন্দুক, ২টি বুলেট ও মৃতদেহ বহন করে আনায় ব্যবহৃত একটি লরি। বাজেয়াপ্ত জিনিসগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “বেআইনি গাঁজার কারবারে যুক্ত ছিল সন্তু ও তাঁর দাদা শম্ভু জানা। সেই কারবারে টাকার বখরা নিয়েই ধৃত চারজন যুবকের সঙ্গে শত্রুতা থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। আমরা তদন্ত করে দ্রুত চারজনকে গ্রেফতার করে খুনের কিনারা করেছি।” এমন ঘটনায় ‘বিড়ম্বনা’য় পড়েছে বিজেপি। তবে বিজেপির খড়্গপুর-১ ব্লকের দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি সৈকত শতপথী বলেন, “সন্তু যখন দলের বুথ সভাপতি হয়েছিল তখন এসব কিছুই জানতাম না। এখন জানতে পারছি, ওর দাদা মূলত এই গাঁজা কারবারে যুক্ত ছিল। সম্প্রতি সন্তু গাঁজা চালানে জড়িয়ে পড়ছিল।’’ তাঁর সাফাই, ‘‘রাতের অন্ধকারে দলের কে কোথায় কী করছে সবটা তো জানা সম্ভব নয়। ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকে এই খুন হয়েছে। এর মধ্যে রাজনীতি নেই।” তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, অভিযুক্তরা পরিকল্পিতভাবে সন্তুকে ১৪ অক্টোবর রাতে মদ খাওয়ার জন্য খড়্গপুর গ্রামীণের পূর্ণাপানি ময়দানে ডেকে পাঠায়। মদ খেয়ে সন্তু বেহুঁশ হয়ে যায়। জগা এরপর সন্তুর মাথার পিছনে গুলি করে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে প্রমাণ লোপাট করতে মৃতদেহ একটি বস্তায় ভরে লরিতে নয়াগ্রামের জঙ্গলকন্যা সেতুতে নিয়ে গিয়ে সুবর্ণরেখা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
পরের দিন দাঁতনের মহেশপুরের কাছে মৎস্যজীবীদের নজরে পড়ে বস্তাবন্দি ওই দেহ। পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়েরা। ময়নাতদন্তে প্রাথমিক রিপোর্ট দেখে গুলি চালনা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায় দাঁতন থানার পুলিশ। প্রথমে শনিবার খড়্গপুর লোকাল থানা এলাকা থেকে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় তাদের কাছ থেকে আরও দু’জনের নাম উঠে আসে। রবিবার তাদেরও গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে ধৃতেরা। তবে ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না, সে বিষয়ে জানতে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy