Advertisement
০৩ মে ২০২৪
বাসি মাংস ধরলেন ক্রেতারা

প্রশ্ন উঠল প্রশাসনের ভূমিকায়

খাবারের দোকান এবং রেস্তোরাঁগুলিতে নজরদারি চালানোর জন্য ফুড সেফটি অফিসার থাকার কথা। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এই সংক্রান্ত কোনও অফিসার নেই। এমনকী পুরসভাগুলিতে নেই কোনও খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক।

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৭ ০০:১৭
Share: Save:

কোনও আড়াল-আবডালে নয়। প্রকাশ্যেই দিনের পর দিন বিক্রি হচ্ছিল বাসি মাংস। এলাকার মানুষের সন্দেহ হলেও তাঁরা ধরতে পারছিলেন না। সোমবার বিষয়টি ক্রেতারা হাতেনাতে ধরার পর দোকান ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করে জনতা। খবর পেয়ে পুলিশ এলেও তার আগেই মাংস বিক্রেতা গণেশ আহির পালিয়ে যান। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোন রোডে ওই ঘটনায় কয়েকটি ছাগল-সহ কাটা মাংস বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।

আর এই ঘটনাতেই জেলায় দোকানে বিক্রি হওয়া খাবারের মান ও বাজারে বিক্রি হওয়ায় খাদ্য সামগ্রীর মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ায় মরা মুরগির মাংসে ফর্মালিন ব্যবহার করে তা বিভিন্ন দোকানে, বাজারকে সরবরাহ করার বিষয়টি সামনে আসার পর নড়ে চড়ে বসে প্রশাসন। কিন্তু তাতে নজরদারি ফাঁক থেকে গিয়েছে তা এই ঘটনাতেই প্রমাণ। তবে খাদ্য ভেজাল বা তার গুণগত মান নিয়ে নানা কারচুপি ধরা পড়ায় মানুষ যে আগের চেয়ে সচেতন এ দিনের ঘটনায় তা দেখা গেলেও এ বিষয়ে প্রশাসনিক নজদারিতে পরিকাঠামো নিয়ে সরব ঘাটাল শহরবাসী।

খাবারের দোকান এবং রেস্তোরাঁগুলিতে নজরদারি চালানোর জন্য ফুড সেফটি অফিসার থাকার কথা। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এই সংক্রান্ত কোনও অফিসার নেই। এমনকী পুরসভাগুলিতে নেই কোনও খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক। ফলে নোংরা-অপরিচ্ছন্ন পরিবেশেই বিক্রি হচ্ছে নানা খাবার। খাবার তৈরিও হচ্ছে নোংরা পরিবেশে। শুধু খাবারই নয়, ঘাটাল শহর সহ জেলার সিংহভাগ খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁয় বাসনপত্র ধোয়ার ক্ষেত্রেও অপরিছন্নতার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অথচ ওই ভাবেই চলছে ব্যবসা। পাশপাশি খোলা জায়গায় ছাগল-মুরগি কাটা ও মাংস বিক্রি নিয়ে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা যথাযথ মানা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। পুরসভা থেকে স্বাস্থ্য দফতর হোটেল-সহ সংশ্লিষ্ট সমস্ত দোকানগুলিতে অভিযান চালানো দূরঅস্ত, ফি বছরই দোকান বা হোটেল –রেস্তোঁরাগুলির লাইসেন্স নবীকরণ হয়ে চলেছে যথারীতি।

মঙ্গলবার বাসি মাংস বিক্রির বিষয়টি এলাকার মানুষ হাতেনাতে ধরার পরই টনক নড়ে ব্লক প্রশাসনের। গড়বেতা-৩ এর বিডিও শুভঙ্কর বিশ্বাস বলেন, “এবার থেকে স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আমরা খাবারের দোকানগুলিতে অভিযান চালাব। সরকারি নিয়ম মেনে মাংস বিক্রির জন্য ব্লকের সমস্ত মাংস দোকান মালিকদের সতর্ক করা হয়েছে। অভিযাগ এলেই দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে।’’

খাবারের মান-সহ ঠিকঠাক ভাবে খাদ্য সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে কি না তা নিয়ে নজরদারি কেন নেই সেই প্রশ্নে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘জেলায় এই পদটি শূন্য। দ্রুত ফুড সেফটি অফিসার নিয়োগের জন্য আর্জি জানিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE