Advertisement
২৫ মার্চ ২০২৩
Gas leak

মাটি থেকে বেরিয়ে আসছে গ্যাস, কমিউনিটি রান্না গ্রামে

লকূপের কাজ শেষ হলে দেখা যায়, ওই জায়গায় জলের মধ্য থেকে বুদ বুদ আকারে গ্যাস বেরচ্ছো। গ্রামবাসী কৌতুহলবশত তাতে দেশলাই ধরতেই তা জ্বলে ওঠে বলে দাবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২০ ০৬:১৯
Share: Save:

নলকূপের পাশে মাটিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে মোটা পাইপ। তা দিয়ে বেরোচ্ছে গ্যাস। আর ওই গ্যাসে ওভেন জ্বালিয়ে দিব্যি হচ্ছে রান্নাবান্না।

Advertisement

সুতাহাটার গুয়াবেড়িয়া অঞ্চলের খড়িবেড়িয়া গ্রামে মাটির নীচ থেকে এ ভাবে গ্যাস বার হওয়ায় অবাক স্থানীয়দের অনেকেই। গ্যাসের উৎস কী, তা তাঁরা জানেন না। তবে ওই গ্যাসে ‘কমিউনিটি রান্নাঘর’ তৈরি হয়েছে খড়িবেড়িয়া গ্রামে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, গত ১২ অগস্ট খড়িবেড়িয়ায় একটি গভীর নলকূপ খনন করে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ। নলকূপের কাজ শেষ হলে দেখা যায়, ওই জায়গায় জলের মধ্য থেকে বুদ বুদ আকারে গ্যাস বেরচ্ছো। গ্রামবাসী কৌতুহলবশত তাতে দেশলাই ধরতেই তা জ্বলে ওঠে বলে দাবি। এর পরে স্থানীয় এক নলকূপ মিস্ত্রি ওই যায়গায় একটি পাইপ ঢুকিয়ে দেন। পাইপের সঙ্গে গ্যাস জুড়ে রান্না শুরু করেন। গত দিন পনেরো ধরে এলাকার আরও উৎসাহীরা ওই গ্যাসে রান্নার কাজ সেরে নিচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ হাবিবুল বলেন, ‘‘গত ১৫ দিন ধরেই আশেপাশের মানুষ এসে এখানে রান্না করছেন। আগুনের তেজ কমেনি।’’

কিন্তু এই গ্যাস আসছে কোথা? এটা কি প্রাকৃতিক গ্যাস? বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এ দিন গ্রামে যান সুতাহাটার বিজ্ঞান সংগঠনের একটি দল। দলের সদস্য নকুল ঘাঁটির দাবি, ‘‘সম্ভবত জৈব গ্যাস বেরিয়ে আসছে। গ্যাসে রান্না করা হাঁড়ির নীচের অংশ কালি হয়ে যাচ্ছে। তা দেখে আমাদের অনুমান এটা মিথেন। যদি তাই হয়, তবে ওই গ্যাস থেকে খুব বেশি সময় রান্না করা যাবে না।’’

Advertisement

মহিষাদল রাজ কলেজের জীববিদ্যার বিভাগীয় প্রধান শুভময় দাস বলেন, ‘‘মাটির নীচে বিভিন্ন জায়গায় প্রাকৃতিক ভাবে মিথেন গ্যাস তৈরি হয়। ওই মিথেন গ্যাস থেকে ভাল জ্বালানী পাওয়া যায়। গোবর গ্যাসও এক ধরনের মিথেন গ্যাস। এক ধরনের মিথেনো জেনাস ব্যাকটেরিয়া এই গ্যাস তৈরি করে। সুতাহাটার গ্রামে কী ধরনের মিথেন গ্যাস তৈরি হচ্ছে, তা গবেষকদের দেখা দরকার। তবে এই গ্যাস থেকে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।’’

খড়িবেড়িয়া গ্রামের যে এলাকায় ওই রান্নার কাজ হচ্ছে তাঁর পাশেই কাশীপুর। কাশীপুরের পঞ্চায়েত সদস্য শেখ শাহনওয়াজ বলেন, ‘‘অনেকেই বিপদের আশঙ্কা করছেন। পুলিশ ও প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখে বলার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। এ দিন ঘটনাস্থলে যান খড়িবেড়িয়ার পঞ্চায়েত সদস্য সমরেশ মণ্ডলও। তিনি বলেন, ‘‘বিডিওকে জানাব।’’

পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘সুতাহাটার একটি গ্রাম থেকে গ্যাস বেরোনোর খবর পেয়েছি। অবিলম্বে এনভারমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারকে বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছি। গ্যাসের প্রকৃতি কী, উৎসই কী— তা জানতে এলাকায় বিশেষজ্ঞ পাঠানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.