২১ জুলাইয়ের কলকাতায় সমাবেশের আগের দিনও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল পূর্ব মেদিনীপুরে। তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কাঁকটিয়া বাজারে শনিবার রাতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মিলিয়ে মোট ৫ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের প্রথমে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁদের তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনার জেরে রবিবার রাত থেকেই কাঁকটিয়া বাজার এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। সোমবার সকালে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর সমর্থকরা কাঁকটিয়া বাজারে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন। বিকেলে অপর গোষ্ঠীর লোকজন মিছিল করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁকটিয়া বাজারে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আজ কলকাতায় ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের আগে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদ প্রকাশ্যে এসেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় কাঁকটিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা দুই তৃণমূল সমর্থক মোটরসাইকেলে করে তমলুকের রাধামনি বাজার থেকে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে মেচেদার দিকে আসছিল। সেই সময় অন্য গোষ্ঠীর কয়েকজন তৃণমূল কর্মী তাঁদের আটকে করে বলে অভিযোগ । এসময় তাঁদের মধ্যে একদফা মারপিট হয়। পুলিশ রাতেই শেখ নাসির নামে এক তৃণমূল সমর্থককে গ্রেফতার করেছে। সোমবার ধৃতকে তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
আবার তৃণমূলের ওই গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই পঞ্চায়েত প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেওযার অভিযোগ উঠেছে কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের সরদা গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান সইফুন নাহার বেগমের বিরুদ্ধে। সোমবার দেশপ্রাণ ব্লক অফিসে গিয়ে বিডিও সত্যজিৎ মুখোপাধ্যায়ের হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন সইফুন নাহার। পদত্যাগপত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করে সত্যজিৎবাবু বলেন, “সইফুন নাহার বেগম তার পদত্যাগ পত্রে পারিপার্শ্বিক কারণের জন্যই প্রধানের পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।’’ তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই পঞ্চায়েত প্রধান। সইফুন নাহার ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নিবার্চনে সরদা গ্রামপঞ্চায়েতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
কিন্তু এত সমস্যা ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হবে না? সৌমেনবাবুর দাবি, ‘‘২১ জুলাইয়ের সমাবেশে ব্লক থেকে প্রচুর মানুষ কলকাতায় যাবেন । কিন্তু কিছু মানুষ পরিকল্পিতভাবে তাতে বাধা দেওয়া চেষ্টার করছে। আমি এ বিষয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’’ এদিকে দলের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আবহে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে কলকাতায় যাওয়ার জন্য পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে দলীয় সমর্থকদের নিয়ে যাওয়ার জন্য জেলার বিভিন্ন রুটে চলা ৬০০ টির বেশী বেসরকারি বাস তুলে নেওয়া হচ্ছে জানা গিয়েছে। ফলে আজ জেলা জুড়েই সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সমস্যা হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর ডিসট্রিক্ট বাস অনার্স এসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক সুকুমার বেরা জানান, ‘’ কলকাতার সমাবেশে লোকজন নিয়ে যাওয়ার জন্য জেলার বিভিন্ন রুট থেকে স্থানীয়ভাবে বাস বুকিং করা হয়েছে। ফলে এদিন যাতায়াতের ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা
হতে পারে।’’